ডাইনোসরদের রাজা বার্লিনে!
ফিচার ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৪৭
ডাইনোসরদের নিয়ে নানান কল্প-কাহীনি প্রচলিত। কতো ভাবনা! আর এতোশত ভাবনার মাঝেও বিজ্ঞানিরা ডাইনোসরের বেশ কয়েকটি জাতির খোঁজ পেয়েছেন। তাদের একটি টিরানোসরাস রেক্স। এর মাথাটা তার বাকি দেহের তুলনায় এত বেশি ভারী যে, সেটা আলাদা করে একটি ডিসপ্লে কেস-এ দেখাতে হয়! ওদিকে টি-রেক্স-এর দেহটাই হলো লম্বায় ১২ মিটার। দেড় মিটার লম্বা মাথার খুলিটির প্রায় ৯৮ শতাংশ অক্ষত ছিল, কাজেই এটা টি-রেক্স-এর সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ মাথার খুলি বলা চলে। বার্লিনের প্রাকৃতিক বিজ্ঞান সংগ্রহশালার কর্মীরা মাত্র এক মাস সময় পেয়েছিলেন টি-রেক্স-এর কঙ্কালটি জোড়া দেবার জন্য। আদত কঙ্কালটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা রাজ্যে। পরে সেটি বাক্স করে সাগরপাড়ি দিয়ে বার্লিন পাঠানো হয়।
সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে টিরানোসরাস রেক্স বিলুপ্ত হয় – তা সত্ত্বেও সে হাল আমলের পপ সংস্কৃতির এক সেলিব্রিটি! বিশেষ করে ‘জুরাসিক পার্ক’ ফিল্মটির কল্যাণে। তবে গবেষকদের ধারণা যে, টি-রেক্স যত না শিকারি ছিল, তার চেয়ে বেশি পচা মাংসের খোঁজে থাকত।
ডেনমার্কের বাসিন্দা নিলস নিলসেন চিরকালই ডাইনোসরদের ফ্যান। পরে হন লন্ডনের ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার – এবং এতই সফল যে, টি-রেক্স-এর সবচেয়ে ভালোভাবে সংরক্ষিত কঙ্কালটি কিনতেও তাঁর কোনো অসুবিধা হয়নি। নিলসেন কঙ্কালটির নাম রাখেন নিজের ছেলের নামে: ট্রিস্টান।
আরো পড়ুন: আসছে ডানাওয়ালা জাহাজ, বদলে যাবে ইতিহাস!
ব্রাকিওসরাস ব্রাঙ্কাই সবচেয়ে অতিকায় ডাইনোসরদের মধ্যে গণ্য। গণ হিসেবে সরোপড। তারও একটি কঙ্কাল রাখা আছে বার্লিনের ন্যাচারাল হিস্টরি মিউজিয়ামে। এই জীবটিও জুরাসিক আমলের।
যে টিকটিকিকে ধরা যায় না
ডাইসালোটোসরাস মানে হলো ‘যে টিকটিকি-কে ধরা যায় না’। টি-রেক্স-এর মতো অতটা খ্যাত না হলেও, এই পাঁচ মিটার লম্বা জীবটিও ছিল টি-রেক্স-এর মতোই সর্বভূক, বিশেষ করে ছোট থাকাকালীন – অন্তত বিজ্ঞানীরা তাই বলেন।
বার্লিনের ন্যাচারাল হিস্টরি মিউজিয়াম বহুদিন ধরেই ডাইনোসরদের হাড়গোড়ের খোঁজ চালাচ্ছে। বিংশ শতাব্দীর সূচনায় এই মিউজিয়াম থেকে বর্তমান তানজানিয়ার তেঙ্গাদুরু হিল এলাকায় একটি অভিযাত্রী দল পাঠানো হয়, যারা বার্লিনে মোট ২৫০ টন ‘ফসিল’ পাঠায়। সেই সব ফসিলের মধ্যে বেশ কিছু এখনও মিউজিয়ামের সেলারে রয়েছে ও তা নিয়ে গবেষণা চলেছে।
আরো পড়ুন: ডাইনোসরের পালকে ছিল ডানাওয়ালা উকুন!
বার্লিনের প্রাকৃতিক বিজ্ঞান সংগ্রহশালা খোলা হয় ১৮৮৯ সালে। এটি জার্মানির বৃহত্তম ন্যাচারাল হিস্টরি মিউজিয়াম। টি-রেক্স-কে নিয়ে নতুন প্রদর্শনীটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সক্রিয় বিবর্তন’। বিশ্বের বৃহত্তম ডাইনোসর কঙ্কালের পাশাপাশি রাখা হয়েছে ছোট ছোট পোকামাকড় ও মাছ, যার সব কিছুই বিবর্তনের প্রতীক। প্রতিবছর প্রায় পাঁচ লাখ দর্শক আসেন এই মিউজিয়ামে। তবে করোনার কারণে এখন যাত্রীদের আনাগোনা পূর্বের তুলনায় অনেক কম। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে