শপথ নিলেন ১৯ প্রতিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:০৫ আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৭:০৮
শপথ নিলেন একাদশ জাতীয় সংসদের ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী। সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটায় বঙ্গভবনের দরবার হলে এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে তাদেরকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা শপথ নিলেন চতুর্থবারের মতো।
প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যারা শপথ নিলেন-কামাল আহমেদ মজুমদার (শিল্প মন্ত্রণালয়), ইমরান আহমদ (প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়), জাহিদ আহসান রাসেল (যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়), নসরুল হামিদ (বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়), আশরাফ আলী খান খসরু (মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়), বেগম মন্নুজান সুফিয়ান (শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়), খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়), জাকির হোসেন (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়), শাহরিয়ার আলম (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়), জুনায়েদ আহমেদ পলক (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ),ফরহাদ হোসেন (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়), স্বপন ভট্টাচার্য (এলজিআরডি), জাহিদ ফারুক (পানিসম্পদ), মুরাদ হাসান (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়), শরিফ আহমেদ (সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়), কে এম খালিদ (সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়), ডা. এনামুর রহমান (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়), মাহবুব আলী (বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়), শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়)।
সংবিধান অনুযায়ী, নতুন এই মন্ত্রিসভার শপথের মধ্য দিয়ে দেশের নতুন সরকার গঠন হলো। নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়ায় আগের মন্ত্রিসভা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বাতিল হলো।
এর আগে রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের তালিকা প্রকাশ করেন। এই তালিকা অনুযায়ী আজ বিকেলে প্রত্যেক মন্ত্রীর বাড়িতে পরিবহন পুল থেকে গাড়ি যায়। ওই গাড়িতে চড়ে মন্ত্রীরা বঙ্গভবনে যান শপথ নিতে।
নতুন মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী নিজের কাছে রেখেছেন।
এই শপথের মধ্যে দিয়েই টানা তৃতীয়বারের মত রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিল আওয়ামী লীগ। আর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চতুর্থ মেয়াদে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিয়ে গড়লে ইতিহাস। ঐতিহাসিক এ নবযাত্রায় নতুনদের প্রতি আস্থা রাখলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের ৪৭ জনের মন্ত্রিসভায় ২৭ জনই নতুন মুখ।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২৫৬টিতেই জয় পায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মহাজোট পায় ২৮৮টি। যার মধ্যে জাতীয় পার্টি ২২টি, জাসদ তিনটি, ওয়ার্কার্স পার্টি তিনটি, বিকল্পধারা দুটি, তরীকত ফেডারেশন একটি ও বাংলাদেশ জাসদের একটি আসন রয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মাত্র সাতটি আসন পায়। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন তিনটি আসনে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এমপিরা ছাড়া নবনির্বাচিত সব এমপিই শপথ নেন। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের বৈঠকে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা সংসদ নেতা নির্বাচিত হন। পরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে শেখ হাসিনাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান। এই জয়ের ফলে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন শেখ হাসিনা।
এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপি জোটের বর্জনের মধ্যেই দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন হয়। ১২ জানুয়ারি গঠিত হয় নতুন মন্ত্রিসভা। ওই সময় শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করে ৪৮ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। ওই সরকারে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৯ জন মন্ত্রী, ১৭ প্রতিমন্ত্রী এবং দু'জন উপমন্ত্রী ছিলেন। পরে কয়েক দফা মন্ত্রিসভায় রদবদল আনা হলে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়ায় ৫২ সদস্যের। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে টেকনোক্র্যাট তিন মন্ত্রীকে বাদ দেওয়া হয়।
আরএ