ঢাকা, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘মব কালচার ঠেকাতে সরকার ব্যর্থ’

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৩১  
আপডেট :
 ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৪

‘মব কালচার ঠেকাতে সরকার ব্যর্থ’
ছবি: সংগৃহীত

দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যে ‘মব কালচার’ দেখা যাচ্ছে তা মোকাবেলায় অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ৬ মাসেও পলাতক স্বৈরাচার এবং তাদের দোসরদেরকে আইনের আওতায় আনতে যথেষ্ট কার্যকর পদক্ষেপ জনসম্মুখে দৃশ্যমান করতে সফল হয়নি বলে জনমনে প্রতিভাত হয়েছে, ফলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার মতো বেআইনি কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত হচ্ছে। একটি সরকার বহাল থাকা অবস্থায় জনগণ এভাবে নিজের হাতে আইন তুলে নিলে দেশে বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে।

রিজভী বলেন, অথচ জুলাই ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী জনগণের প্রত্যাশা ছিল, দেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে, যা বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল। বর্তমানে দেশে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ নানান ধরনের দাবি-দাওয়া নিয়ে যখন তখন সড়কে ‘মব কালচারের’ মাধ্যমে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করছে, যা সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে মুন্সিয়ানা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে।

ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির ছয় মাস পূর্তির দিন বুধবার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ‘বুলডোজার মিছিল’ কর্মসূচি থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুর শুরু হয়। ভাঙচুর করা হয় ঢাকার বাইরে শেখ হাসিনার আত্মীয় এবং আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি, কার্যালয়সহ বিভিন্ন ভাস্কর্য। অন্তত ৩০ জেলায় ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে।

বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বিতাড়িত পতিত পরাজিত পলাতক স্বৈরাচার এবং তার দোসরদের উস্কানিমূলক আচরণ, জুলাই অগাস্টের রক্তক্ষয়ী ছাত্র গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে অশালীন এবং আপত্তিকর বক্তব্য-মন্তব্য দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং ক্রোধের জন্ম দিয়েছে। এরই ফলশ্রুতিতে গতকাল বুধবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পতিত স্বৈরাচারের স্মৃতি, মূর্তি, স্থাপনা ও নামফলকসমূহ ভেঙ্গে ফেলার মতো জনস্পৃহা দৃশ্যমান হয়েছে।

বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে জনগণের নিত্যদিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করা জরুরি মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়, দীর্ঘ ষোল বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা গায়েবি মামলার কোন সুরাহা এখনও হয়নি। গণতন্ত্রকামী জনগণ ফ্যাসিবাদী আমলের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় এখনও হয়রানির শিকার হচ্ছে, অথচ এ বিষয়ে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখেনি।

দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের দাবি পুনরুল্লেখ করে বিএনপি বলছে, জুলাই ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে মানুষের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকারসহ ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাশীঘ্র সম্ভব একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। নির্বাচনমুখী জরুরি সংস্কার সাধন করে দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করাই বর্তমান সরকারের প্রধানতম ম্যান্ডেট। অথচ জনআকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিজেরাই এই অগ্রাধিকারকে প্রাধান্য না দিয়ে অন্যান্য বিষয়ে অধিক মনোযোগী বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, পতিত ফ্যাসিস্ট এবং স্বৈরাচারের স্মৃতিচিহ্ন নিশ্চিহ্ন কিংবা নির্মূলের মধ্যেই ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন নিহিত নয়; বরং ফ্যাসিবাদবিরোধী আদর্শিক চিন্তা, শক্তি ও প্রভাবের আদর্শিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঐক্যকে দৃঢ় ভিত্তি দেয়া এবং জাতীয় ঐক্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতির চর্চাই উত্তম পন্থা। জনগণের মধ্যে এই ধরনের বার্তা ছড়িয়ে দিতে আমাদের সকলেরই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত