জুলাইয়ের মধ্যেই নির্বাচন চায় বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:০৯ আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:১০
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন যত বিলম্ব হবে, দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে ততো বেশি সংকট তৈরি হবে। নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট জমা দেয়ার পর চলতি বছরের জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সমসাময়িক ইস্যুতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিলম্বিত করার কারণ নেই। এ বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন দেয়ার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। যেহেতু নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন হয়েছে এবং স্টেবেলিটি এসেছে। কমিশনের রিপোর্ট জমা দেয়ার পর এ বছরের জুলাইয়ে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তাই নির্বাচন যত বিলম্ব হবে, ততোই রাজনীতি ও অর্থনীতিতে সংকট তৈরি হবে। এ কারণে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন করা যেতে পারে।
মির্জা ফখরুল বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন প্রশ্নই উঠে না। কেননা জনগণের ফোকাস এখন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে। জনগণ ভোট দিতে পারেনি। তাই জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন নয়। কেননা স্থানীয় সরকার দেশ পরিচালনা করে না, করে সংসদ। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যমতে আসার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি ও জামায়াত সবচেয়ে বেশি ফ্যাসিবাদের নির্যাতনের শিকার হয়েছে জানিয়ে ফখরুল বলেন, ফ্যাসিবাদের বিচার হবে। কিন্তু তড়িঘড়ি করা যাবে না। প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেতে হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। বিএনপি ও জামায়াতের দূরত্ব হতেই পারে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের একটি স্বকীয়তা আছে। এর জন্য নির্বাচন প্রয়োজন।
ফখরুল আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পেয়েছি, সেটা তারা দেখতে বলেছেন। তবে সেটা একদিনের মধ্যে দেখে বলা সম্ভব নয়। যুগপৎ আন্দোলনের যতগুলো দল আছে সবার সঙ্গে কথা বলেছি, আরও বলব।
সীমান্ত ইস্যুতে শক্ত অবস্থান নেয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে ভারতের সঙ্গে করা সব চুক্তি জনসম্মুখে প্রকাশ করা উচিত।
লন্ডনে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া মানসিক ও শারীরিক দিক দিয়ে আগের থেকে বেটার আছেন।
এর আগে গতকাল সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয় উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, সভায় সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এই আইন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত একটি সংবাদ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ বিষয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিতে আরও রয়েছেন, প্রফেসর এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান ও ব্যরিষ্টার কায়সার কামাল। অবিলম্বে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে কমিটি।
এছাড়াও দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্দ্ধগতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, একদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি অন্যদিকে ভ্যাট ও অন্যান্য করের হার বৃদ্ধি অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও মাননীয় চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি অবিলম্বে উপরোক্ত বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রস্তুত করবেন।
স্থায়ী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যরিষ্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বীর বিক্রম, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এএইচ/এফএম