সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের আলোচনায় ‘না’ বললেন আবু হেনা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:০৩
সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হেনা বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব অর্থাৎ সংসদ নির্বাচনে দলের ভোটের অনুপাতে সংসদে আসন বণ্টনের যে আলোচনা উঠেছে তা অপ্রয়োজনীয়। ভোটের পদ্ধতি না পাল্টে বিদ্যমান ব্যবস্থাকে কার্যকর করার সুপারিশ করেন তিনি। তিনি বলেন, সংস্কারের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আইনের প্রয়োগ। যোগ্য নির্বাচন কমিশন থাকলে রাজনৈতিক সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব বলেও মত দিয়েছেন তিনি।
সাবেক সিইসি সোমবার দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের বিতর্কমুক্ত নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন মোহাম্মদ আবু হেনা।
জামায়াতসহ কয়েকটি দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার দাবি করছে। গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে দুই ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। একটি হচ্ছে, নির্বাচনি এলাকায় প্রার্থীদের মধ্যে যিনি সর্বোচ্চ ভোট পাবেন, তিনি নির্বাচিত হবেন। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’। বাংলাদেশসহ বেশিরভাগ দেশেই এর চর্চা আছে। অন্য পদ্ধতি হল সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা বা ‘প্রপোরশনাল রিপ্রেজেনটেশন’ পদ্ধতি। সেখানে আসনভিত্তিক কোনো প্রার্থী থাকে না। ভোটাররা ভোট দেবেন দলীয় প্রতীকে। একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে সংসদে তাদের আসন সংখ্যা নির্ধারণ হবে।
নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার করে এমন পদ্ধতিতে যাওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা, এ প্রশ্নে আবু হেনা বলেন, ‘না, আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন নেই। এখানে আমাদের ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’ সিস্টেম রয়েছে। এ সিস্টেমই কার্যকর হতে পারে, মানুষের এ সিস্টেমের সাথে পরিচয় রয়েছে। আমরা মনে করি না, নতুন কোনো সিস্টেমের (প্রয়োজন রয়েছে)।’
নেপাল ও ইসরাইলের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, যেসব দেশে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা আছে, সেসব দেশে তা ভালো কাজ করছে না। আমাদের যে সিস্টেম রয়েছে, যেটার সঙ্গে মানুষ পরিচিত সে পদ্ধতিই কার্যকর করে গড়ে তোলা দরকার। সেটাই সবচেয়ে বড় কথা।
পরে এ বিষয়ে এক প্রশ্নে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার সাংবাদিকদেরকে বলেন, এটা (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) যদি সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে তো সংবিধান সংশোধন করতে হবে। আরও অনেক বিষয় রয়েছে, যেখানে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে নানা প্রস্তাব পাওয়া যাচ্ছে। বেশ কিছু দল ভোটের পদ্ধতি পাল্টানের কথা বলেছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি