ঢাকা, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বিএনপি

  আকরাম হোসেন

প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২১:৩০

শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বিএনপি
ফাইল ছবি

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনার। পালিয়ে আশ্রয় নেন ভারতে। বর্তমানে শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে নানা গুঞ্জন ওঠে। এর মধ্যে শেখ হাসিনা ভারতেই আছেন বলে জানিয়েছে দেশটি। আগামীতেও ভারতে থাকবেন বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল। ভারতের এ সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেয়নি বিএনপি। অনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া না জানালেও দলটির নেতারা মনে করছে ভারতে বসে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাবে শেখ হাসিনা। দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলবে। পাশাপাশি একজন গণহত্যাকারী ও স্বৈরাচার শাসককে আশ্রয় দিলে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে নতুন মোড় নিতে পারে। আগামীতে বাংলাদেশ ও এদেশের জনগণের সাথে ভারতের সম্পর্ক কী হবে তার সিদ্ধান্ত ভারতকে নিতে হবে।

বিএনপি'র আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, যে ব্যক্তি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে, এতগুলো মানুষকে হত্যা করেছে, এত দুর্নীতি করেছে তাকে কোন প্রটোকলে রাখবে সেটা ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গত ১৭ বছরে ভরতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক, ভবিষ্যতে কী সম্পর্ক হবে, ভারতের ফরেন পলিসি কী হবে, বাংলাদেশের সঙ্গে তারা কী ধরনের সম্পর্ক চায় তা ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আইনসম্মতভাবে শেখ হাসিনাকে রাখতে চাইলে তার বৈধ কগজপত্র থাকতে হয়। জানি সেসব কাগজপত্র নেই। শেখ হাসিনাকে ভারতে রাখা একটা স্বৈরতন্ত্র পদক্ষেপ বলে আমরা মনে করি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে অপরাধ ও খুনিদের মদদ দিচ্ছে। যিনি শিশুদের রক্ত পান করতে পারেন, তার চেয়ে বড় সন্ত্রাসী আর কে হতে পারে? তাকে আশ্রয় দেয়া মানে অপরাধ, অন্যায়কে সমর্থন করা এবং খুনিদের প্রশ্রয় দেয়া। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যর্পণ চুক্তি হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, যেহেতু আদালত থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, সেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে পারে।

তিনি বলেন, তার প্রত্যর্পণের জন্য কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এ ধরনের সমস্যার সমাধান হতে পারে। তা-না হলে বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীরা ভারতসহ অন্যান্য দেশে আশ্রয় নেয়ার সুযোগ পাবে।

'শেখ হাসিনা ভারতেই থাকবে' ভারতের এ বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি জানান, ভারতের বক্তব্যের বিষয়ে এখনো দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত হলে দলের মুখপাত্র আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে।

শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে ভারতের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আপনারা কী করেন, কী করতে চান, কী করবেন- তা আমাদের দেখার এখনই মোক্ষম সময়। শেখ হাসিনাকে আবারও বাংলাদেশে পুশ করে দিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে যদি ক্ষমতায় আনতে চান তাহলে বুঝবো আপনারা বাংলাদেশকে আপনাদের অঙ্গরাজ্য বানাতে চান।

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া পৃথক অভিযোগে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক মন্ত্রী-ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, দীপু মনি, আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধেও একই আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী তারিখ ১৮ নভেম্বর ধার্য করে এই সময়ে আসামিদের আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন আদালত।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএইচ/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত