ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

‘জিয়ার নদী-খাল খনন প্রকল্প অব্যাহত থাকলে বন্যার তীব্রতা কম হত’

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১:০৯  
আপডেট :
 ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১:১২

‘জিয়ার নদী-খাল খনন প্রকল্প অব্যাহত থাকলে বন্যার তীব্রতা কম হত’
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল লতিফ জনি বক্তব্য রাখছেন। ছবি: প্রতিবেদক

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের যুগান্তকারী পদক্ষেপ খাল খনন প্রকল্প ও নদী খনন প্রকল্প অব্যাহত থাকলে আজ বাংলাদেশের নদীগুলো সচল থাকতো। তাহলে প্রতিবছর বন্যার তীব্রতা থেকে এ দেশের মানুষ রক্ষা পেতো। আবারো জিয়ার খাল খনন প্রকল্প ও নদী খনন প্রকল্প চালু করার দাবি জানিয়েছেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি। একইসাথে গত ৫০ বছর পূর্বের জাতীয় ভূমি-নকশা অনুসারে বাংলাদেশের প্রতিটি নদ-নদী খাল পুনরুদ্ধার ও নদীর সীমানা নির্ধারণ করার দাবি জানান তিনি।

বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ দাবি জানান।

সম্প্রতি দেশের পূর্বাঞ্চলে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি ফেনী জেলার একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে এবারের বন্যা নিজ চোখে দেখেছি- বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থার কারণে লাখ লাখ মানুষ নিশ্চিত মৃত্যু থেকে রক্ষা পেয়েছে। ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরবাসী- বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর এমন কর্মকাণ্ডকে কখনো ভুলতে পারবে না। বিশেষ করে ফেনীর ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও ফুলগাজীর মানুষ আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। সেই এই আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধার ও সাহায্য করার জন্য দেশের প্রতিটি জেলা থেকে অসংখ্য সামাজিক সংগঠন এবং কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ছাত্ররা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিকদল তাদের সাধ্যানুযায়ী ত্রাণ নিয়ে বন্যাদুর্গত মানুষের সীমাহীন কষ্টের পাশে থেকেছেন। তাদেরকেও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আবদুল লতিফ জনি বলেন, ফেনী নদীর মোহনায় মুহুরী প্রকল্প এবং ছোট ফেনী নদীর মোহনায় মুছাপুর ব্যারেজ প্রকল্প চালু করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এই প্রকল্পগুলো সমুদ্রের নোনা পানির জোয়ারের সময় ফসলের যাতে ক্ষতি না হয় এবং শুকনো মওসুমে মিঠা পানি জমিয়ে রেখে ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। যার ফলে ফেনী, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের অনেক অঞ্চলে ধান ও অন্যান্য ফসল উৎপাদনে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধিত হয় এবং ধান উৎপাদনে এই অঞ্চল স্বনির্ভর হওয়ার সফলতা লাভ করে। জোয়ারের সময় নোনা পানির তীব্র আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ায় মানুষ ফসল উৎপাদনে সফলতার গৌরব অর্জন করে।

তিনি বলেন, পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে বাঁধের উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও মুহুরী প্রজেক্টে মাত্র ৪টি গেট খোলা হয়। পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশেষ অনুরোধ ও প্রচেষ্টায় সবগুলো গেট খুলে দেয়া হয়। এখানে আরো একটি বিষয় উল্লেখ করতে হয় যে, মুহুরী প্রজেক্টের নিম্নাঞ্চল এবং সমুদ্রের মোহনায় চট্টগ্রাম জেলার মিরেরসরাই থানার সমুদ্রাঞ্চলে বিগত সরকারের আমলে বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চল তৈরি করতে গিয়ে নদীর মোহনাকে বালু ভরাট করে সংকুচিত করে ফেলা হয়। এতে পানির স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই ইকোনোমিক জোন প্রতিষ্ঠার পূর্বে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রকৃতির উপর কী প্রভাব পড়বে এ ব্যাপারে কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র নেয়া হয়েছে কি-না, তা জাতির সামনে এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। মুছাপুর ব্যারেজ প্রকল্পের গেটগুলো বন্ধ থাকার কারণে বাঁধের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে বাঁধটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস কাছে আবেদন জানিয়ে জনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রাস্তা-ঘাট মেরামত ও মানুষের বাড়িঘর পুর্নবাসনের পাশাপাশি মুহুরী ও মুছাপুর প্রকল্পের গেটগুলো কেন সময়মতো খোলা হয়নি তার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএইচ/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত