এক দফা কর্মসূচি ঘোষণার সমাবেশে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি
আকরাম হোসেন
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৩, ১৯:১৯ আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৩, ২১:৪১
ঢাকায় বুধবার সমাবেশ করবে বিএনপি। ওই সমাবেশ থেকে সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বহালের এক দফার কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি। জানা গেছে সরকারের পদত্যাগে সিরিজ কর্মসূচিও দেয়া হবে। বিএনপির পাশাপাশি সমমনা দলগুলোও ভিন্ন ভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে একই কর্মসূচি ঘোষণা দেবে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে নিএনপির কার্যালয়ের সামনের সড়কে এদিন বেলা ২টায় এ সমাবেশ হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশের জন্য সোমবার মৌখিক অনুমিতও পেয়েছেন তারা। নিজেদের শক্তি জানান দিতে সমাবেশকে কেন্দ্র করে চলছে জোরালো প্রস্তুতি। করতে চায় ব্যাপক শোডাউন। এদিন সর্ববৃহৎ সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বিগত জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা বিভাগের অধীন প্রতিটি সংসদীয় আসনে ধানের শীষের প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া প্রথম দুজন প্রার্থীকে নিয়ে বৈঠক করেছে বিএনপি। সংশ্লিষ্ট নেতাদের ঢাকার সমাবেশে সর্বোচ্চ লোকসমাগমের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
রোববার সিলেটে তারুণ্যের সমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন আগে থেকেই সেখানে অবস্থান করছিলেন তরুণ নেতৃবৃন্দ। শনিবার জরুরিভিত্তিতে তাদের ঢাকায় ডেকে আনা হয়। আগামীকালের সমাবেশ সফল করতে দেয়া হয় নানা নির্দেশনা। এছাড়া গত রোববার যৌথসভা করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। সেখানেও মহানগরের প্রতিটি থানা কমিটিকে সমাবেশে সর্বোচ্চ উপস্থিতি ঘটানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
যৌথ সভায় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমন বলেন, ১২ জুলাইয়ের সমাবেশে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে আপনাদের আসতে হবে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকতে হবে।
দলীয় নেতাকর্মীর পাশাপাশি সমাবেশে জনসম্পৃক্ততা চায় দলটি। এ লক্ষ্যে রাজধানীতে গত এক দশক পর মাইকিং করা হচ্ছে। মাইকিংয়ের মধ্য দিয়ে ঢাকাবাসীকে বুধবারের সমাবেশে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আগামীকাল নয়াপল্টনে পার্টি অফিসের সামনের সমাবেশটি হবে মহাসমাবেশ। ঢাকা ও ঢাকার আশাপাশ থেকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আসবেন। সমাবেশ শেষ করে তারা ফিরবেন। বিএনপি শান্তিপ্রিয় দল। জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে সরকারকে বার্তা দিতে চায় যে আপনাদের যাওয়ার সময় হয়েছে। এবার যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের বড় শহরগুলোতে যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল তারুণ্যের সমাবেশ করেছে। এসব সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার ঘটছে। আগামীকালের সমাবেশে তারুণ্যের জনস্রোত থাকবে।
আন্তর্জাতিক মহলেরও দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে বিএনপি। দলটির সমাবেশ এমন এক সময় দেয়া হয়েছে যখন ঢাকায় অবস্থান করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অনুসন্ধানী দল। বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ ও নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে গত ৮ জুলাই ঢাকায় আসেন তারা। প্রতিনিধি দলটি আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা থাকবে। জানা গেছে, ইইউ প্রতিনিধিদলের এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার পরিবর্তনে চলমান আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ের কর্মসূচি বুধবার ঘোষণা করা হবে। যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সব দল যার যার অবস্থান থেকে এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা দেবে। ওই দিন আন্দোলনের নতুন মাত্রার কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হবে।
অন্যান্য দল যেসব জায়গা থেকে কর্মসূচি ঘোষণা দেবে
গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেসক্লাব কনফারেন্স হল থেকে বেলা ৪ টায়, ১২ দলীয় জোট ডিআরইউ মিলনায়তন থেকে বিকেল ৩টায়, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট বিজয়নগর পানিরট্যাংক সংলগ্ন আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে থেকে বিকাল ৩ টায়, এলডিপি দলীয় অফিস (এফডিসি সংলগ্ন) থেকে বিকাল ৩ টায়, গণফোরাম মতিঝিল গণফোরাম অফিসের সামনে থেকে বিকাল ৩টায়, গণঅধিকার পরিষদ (নুর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিকাল ৩টায়, গণঅধিকার পরিষদ (রেজা) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিকেল ৩টায়, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে বিকেল ৩টায়, বাংলাদেশ লেবার পার্টি নয়াপল্টনের মসজিদ গলি থেকে বিখেল ৩টায়, সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বিকেল ৩টায়, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বিকেল ৩টায় অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেবে।
আরো পড়ুন: আওয়ামী লীগ বরাবরই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না: ফখরুলবাংলাদেশ জার্নাল/এএইচ/আরকে