এবার এস আলম পরিবারের ৫ হাজার কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:৫১
![এবার এস আলম পরিবারের ৫ হাজার কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ](/assets/news_photos/2025/02/12/image-284304-1739368502bdjournal.jpg)
এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৪২টি কোম্পানির ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুদকের আবেদনে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন বলে কমিশনের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস ও অন্যান্য দেশে ১ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে তারা।
এসময় এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪ টি শেয়ারের মালিকানার তথ্য পাওয়ার কথাও বলেছে তদন্ত সংস্থাটি।
দুদকের ভাষ্য, এস আলম ও সহযোগীরা তাদের হাতে থাকা বিভিন্ন কোম্পানির ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪ টি শেয়ার হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন, যার মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি ৬৭ লাখ ৯৬ হাজার ২৬০ টাকা। এসব অর্থ স্থানান্তর হলে অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় মামলা রুজু, আদালতে চার্জশিট দাখিল, বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় থেকে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করাসহ সকল উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। সেজন্য এসব সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি আলোচিত ব্যবসায়ী মো. সাইফুল আলম (এস আলম) ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেয় আদালত।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন অনিয়ম সামনে আসে।
চট্টগ্রামভিত্তিক এ গ্রুপের চেয়ারম্যান এস আলমের বিরুদ্ধে ব্যাংক খাতে অনিয়ম, টাকা পাচার, আয়কর ফাঁকির অভিযোগ তদন্ত শুরু করে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। দুদকও ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে।
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় এস আলমের বিরুদ্ধে জোরজবরদস্তি করে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার অভিযোগ বহু পুরনো। পরে তিনি ও তার ব্যবসায়ী গোষ্ঠী শরীয়াহভিত্তিক আরও কয়েকটি ব্যাংকের পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ নেন। এসব ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থ নামে ও নাম সর্বস্ব কোম্পানি খুলে অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
এরইমধ্যে এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। তাদের বিও অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ করে শেয়ার লেনদেনও স্থগিত করা হয়েছে।
গত বছরের ২৯ অগাস্ট এস আলমসহ ৭ আলোচিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মালিকানা হস্তান্তর স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে যৌথমূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরকে চিঠি দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একদিন বাদে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট জানায়, এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং তাদের ছেলে আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের তথ্য পেয়েছে তারা।
বাংলাদেশ জার্নাল/আরএইচ