‘ভোরের কাগজ’ বন্ধের ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৪৮ আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:১৪
নব্বই দশকের শুরুর দিকের বাংলা দৈনিক সংবাদপত্র ভোরের কাগজ বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আজ সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ের প্রধান ফটকে এ সংক্রান্ত নোটিশ টানিয়ে দেয়া হয়েছে।
ভোরের কাগজের নির্বাহী সম্পাদকের সই করা এ নোটিশে বলা হয়েছে, ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন যা ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখ থেকে কার্যকর হবে।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা জানিয়েছেন, পত্রিকা বন্ধের কথা তারা সোমবার সকালেই জানতে পেরেছেন।
ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওসার হোসেন বলেন, আমরা রিপোর্টাররা অন্যান্য দিনের মতো যার যার অ্যাসাইন্টমেন্টে ছিলাম। সকালে অফিস থেকে জানানো হয়েছে, আমাদের বের করে দিয়ে নোটিশ দিয়েছে।
খোন্দকার কাওসার হোসেনের ধারণা, পুরানো কর্মীদের ছাঁটাই করে মালিকপক্ষ নিজেদের মতো করে নিয়োগ দিতেই এ ধরনের নোটিশ দিয়েছে। তিনি জানান, ছাঁটাইয়ে আপত্তি নেই তবে এর জন্য ৮ম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী কর্মীদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
খোন্দকার কাওসার হোসেন বলেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ১৬ সেপ্টেম্বর আমাদের সম্পাদক শ্যামল দত্ত গ্রেপ্তার হন। এ পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানে যে অচলাবস্থা তৈরি হয় তা দূর করতে মালিক সাবের হোসেন চৌধুরী একটি টিমকে ডাকেন এবং পত্রিকার অবস্থান জানাতে চান। সে সময় তাকে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক দুরাবস্থার কথা জানানো হয় এবং এর থেকে উত্তরণে সহযোগিতা চাওয়া হয়। এ সময় তিনি ফিন্যান্স বিভাগের কাছে জানতে চান, গত ১৫ বছর প্রতিষ্ঠান যে আয় করেছে সে টাকা কোথায়? তারা এর কোনো এটার জবাব দিতে পারে নি। পরে আমরা চলে আসি।
কাওসার হোসেন আরও বলেন, পরে অফিসে একটি মিটিংয়ে একটি রেজ্যুলেশন তৈরি করা হয়, এতে ৩৫–৪০ জনকে রেখে বাকিদের ছাঁটাই করার কথা জানানো হয়। পরে আমাদের আপত্তির মুখে এটা বাদ দেওয়া হয়। যদিও তারা পরে ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। আমরা বিষয়টি মালিককে জানিয়েছি। আমরা বলেছি, যদি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয় এতে আপত্তি নেই কিন্তু ভোরের কাগজ ৮ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করেছে, সে অনুযায়ী সরকারের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নিয়েছে, কিন্তু আমাদের লামছাম বেতন দেওয়া হয়েছে। যাদের ছাঁটাই করা হবে তাদের ৮ম ওয়েজবোর্ডে সুবিধা দেয়া হোক। আর যদি রাখা হলে তাহলে ৮ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করতে হবে।
কাওসার হোসেনের দাবি পরপর ৩ দিন নোটিশ দিয়েও মালিকপক্ষের সারা পাননি তারা। পত্রিকা খোলার দাবিতে সোমবার প্রতিষ্ঠানটির সামনেই কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন কর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত এক সাংবাদিক বলেন, আমাদের জানানো হয়েছে পত্রিকা ছাপানো আপাতত বন্ধ থাকবে। তবে অনলাইনে সব কার্যক্রম চলবে।
১৯৯২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে ভোরের কাগজ। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর পত্রিকাটির সম্পাদক শ্যামল দত্ত ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত থেকে আটক হন। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন। শ্যামল দত্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি