ঢাকা, রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, অন্তর্বর্তী আমলে যেমন: ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:৫৩

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, অন্তর্বর্তী আমলে যেমন: ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন
মতপ্রকাশ এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে এসেছে। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাসে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা ও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় সাংবাদিকদের গ্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটেছে৷

এ পর্যন্ত দুই দফায় মোট ৪৯ জন সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। কার্ড বাতিল হওয়ার আশঙ্কায় আছেন আরও অনেক সাংবাদিক।

তবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী মনে করেন, “বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম স্মরণকালের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে।” বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ মনে করেন সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার ও তাদের অ্যাক্রেডিটেশন বাতিল করে স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

" সাংবাদিক নামের যারা প্রকাশ্যে গণহত্যায় ইন্ধন দিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। ফ্যাসিবাদের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নে যাদের সচিবালয়ের প্রেসকার্ড দেয়া হয়েছে, তাদের কার্ড বাতিল করে স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা হবে।”

‘স্বার্থের বাইরে গেলেই গণমাধ্যমকে আক্রমণ ও সাংবাদিক হেনন্তা'

এদিকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক বিবৃতিতে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে স্বার্থান্বেষী মহলের হামলা-ঘেরাওয়ের হুমকি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নির্বিচার মামলা ও হেনস্তার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি বলেছে, গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ, হামলা ও হুমকি বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থি। ভিন্নমত ও মুক্ত গণমাধ্যমের ঢালাও নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তাহীনতা মূলত কর্তৃত্ববাদের পুনরাগমনের পথ সৃষ্টি করবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, স্বার্থান্বেষী বিভিন্ন মহল দেশের কোনো কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, হামলা, ঘেরাওয়ের হুমকিসহ নানা আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। দৃশ্যত অতিক্ষমতায়িত কোনো কোনো মহলের স্বার্থের বাইরে গেলেই গণমাধ্যমকে আক্রমণ ও সাংবাদিক হেনন্তা, গণমাধ্যমকে দখল বা খেয়ালখুশিমতো পরিচালনার প্রচেষ্টা চলছে, যা আসলে মুক্ত গণমাধ্যমের সম্ভাবনার জন্য অশনিসংকেত।”

৫ নভেম্বর সম্পাদক পরিষদ এক বিবৃতিতে বলেছে, “বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে আছে।” পরিষদ গণমাধ্যমসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে ‘মব জাস্টিস’ কঠোর হাতে দমন করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে।

সম্পাদক পরিষদ একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা পরিপন্থি কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে।

সম্পাদক পরিষদ বলেছে, গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ও এর মধ্য দিয়ে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিশ্রুতি হলো, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। তারপরও সম্পাদক পরিষদ অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে, এখনো সমাজের কোনো কোনো অংশ থেকে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর স্বাধীনতার ওপর নানাভাবে আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে।

‘অ্যাক্রিডিটেশনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষের উচিত নয়’

আর কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন বাতিল করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে মনে করা আরও ২৯ সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন অন্তর্বর্তী তথ্য মন্ত্রণালয়ের বাতিল করার খবরে সিপিজে উদ্বিগ্ন।

সিপিজে বলেছে, সাংবাদিকদের কাজের জন্য তাদের নিশানা বানাতে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষের উচিত নয়। এর ফলে গণমাধ্যম সেন্সরশিপের ঝুঁকিতে পড়বে।

প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত