ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে ছোট ভাইয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস

  কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:১৯

আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে ছোট ভাইয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস
ছোট ভাইয়ের সঙ্গে আবরার ফাহাদ। ছবি: প্রতিনিধি

২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের শেরে বাংলা হলে আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আজ সোমবার (৭ অক্টোবর) আবরার ফাহাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। ফেসবুকে ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হাতে খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। রোববার (৬ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে আবরারের ছোট ভাই বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ভাইয়া ঢাকাতে যায়। ২৬ই সেপ্টেম্বরে কুষ্টিয়াতে আসার পরেই ইলিশ আর ভারতের সাথে চুক্তি নিয়ে দুটি পোস্ট দিয়েছিলো। সেদিন আম্মু নিজে ভাইয়াকে গাড়িতে তুলে দিয়ে আসছিলো। এরপর মাত্র ১৩-১৪ ঘণ্টার মধ্যে ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়। আর ২০ ঘণ্টা পরই বাসায় আসে মৃত্যুর সংবাদ।

সেদিন সকালে যাওয়ার আগে ৯টার দিকে আম্মু আমাকে ডেকেছিলো। ভাইয়া চলে যাচ্ছে, ওঠ। কিন্তু ভাইয়া বলে, ‘না থাক, অনেক রাতে ঘুমাইছে ঘুমাতে দাও। আমি চলে গেলাম। তুই বেশিদিন থাকিস না তাড়াতাড়ি ঢাকা চলে আসিস। যাওয়ার আগের রাতে আম্মুকে ভাইয়া বলেছিলো, ‘আম্মু অনেক ছারপোকা কামড়ায়। পিঠে একটু হাত বুলিয়ে দেও তো। কোনো দাগ হয়ে গেছে নাকী? আচ্ছা তোমার কাছে কী এমন কোনো ওষুধ আছে যা লাগালে আর কামড়াবে না আমাকে?’

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নৃশংস কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করে সংগঠনটির ক্যাডাররা। পরে রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

দেশব্যাপী আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের পর ফুঁসে ওঠেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। পরে খবরে আসে, সেই ২০১১ নম্বর কক্ষটিকে ‘টর্চার সেল’ হিসেবে ব্যবহার করতো ছাত্রলীগ। সেখানে শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেই রুম থেকে নির্যাতনে ব্যবহৃত লাঠি, স্ট্যাম্প, রড, চাকু ও দড়ি উদ্ধার করেছিল ডিবি পুলিশ।

এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। দায়ের করা হয় হত্যা মামলা। ওই মামলায় সব মিলিয়ে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত