ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

নলেজ

  রাজীব কুমার দাশ

প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৪, ১৬:২১  
আপডেট :
 ২২ জুন ২০২৪, ১৬:৫৮

নলেজ
রাজীব কুমার দাশ। ফাইল ছবি

সফল পুত্র রাফসান খান। তাঁর সফলতার জোয়ারে বাবা খিরমিজ খানের নকিয়া বাটন মোবাইল ফোন বিরতিহীন বেজে চলেছে। চাকরির বাজারে মডার্ন শর্টকাট ডিজিটাল কোচিং প্রক্সি প্রশ্নপত্র টেকনিক মাস্টারমাইণ্ড সফল পুত্রের সফল বাবা খিরমিজ খান। খালাসি পাড়ার চা দোকানি আফসারের দোকানে পা'র উপর পা তুলে মাঝে মাঝে ভয়ঙ্কর বিষধর রেটল সাপের মতো তার সমীপে ঔদ্ধত্যের ঝুমঝুমি বাজান। অসফল বাবাগুলোর কেউ কেউ - বাংলা খান সাহেব সন্তানদের ঈর্ষণীয় সাফল্য সফলতার স্বল্পকালীন ও দীর্ঘকালীন গল্প শোনেন। শোনেন - খান চাচার মাঝারি মেধাবি ধাঁচের সন্তানটি তর তর করে বদ্বীপের আনাচে কানাচে নামে বেনামে সামরিক-বেসামরিক ধূর্ততা চোখে আগ্রাসী সফলতা দুরবীন হাতে বেড়ে ওঠার গল্প। মুখে তার সন্তানই একমাত্র দেশ সেরা। সফল পুত্র বিজ্ঞাপনে বিদ্রুপের পান পরাগ জর্দা রেসিপি ঠোঁটে ঔদ্ধত্যের জ্বলন্ত সিগারেট ধরিয়ে কখনো অসফল পিতা কখনো অসফল সন্তানকে কাছে ডেকে চা দোকানিকে হুকুম করে বলেনঃ

- আফসার

: জ্বী স্যার।

- এদের চা দাও। বেলা টোস্ট বিস্কুট দাও।

: দিচ্ছি স্যার।

- আচ্ছা, জমির মণ্ডল - তোমার পোলাডা দিয়া ত কিচ্ছু হইল না। এক কাম কর - পোলাডারে ইতালি পাঠিয়ে দাও।

: কাঁচুমাচু স্বরে অসফল পিতা মুন্সী জমির উদ্দীন মণ্ডল বলেন -' খান সাহেব। আমিওত জানি। আমার সহজ সরল ঢেবলা পোলাডারে দিয়া কিচ্ছু হইব না। কিন্তু কী করুম? এই পোলাডার চাকরির জন্য কত কত জায়গায় পাইকারি খুচরা মনে ধর্না দিলাম। ইন্টারভিউ কার্ড আসে। পাশ করে। ভাইভা বোর্ডে ঝড়ে যায়। রাজনীতি করি। নেতার সাথে জেল খাটলাম। নেতা এমপি মিনিস্টার হইলো। ছেলেটার জন্য বার বার যাই। নেতা বার বার আশ্বাস দেয় কিন্তু চাকরিটা হইলো কই? অথচ দেখেন -আপনি আপনার বাবা সেই একাত্তর পেরিয়ে দুই হাজার চব্বিশ।

রিক্স ফ্রি জীবনে আপনি এখনো তরতাজা যুবক আছেন। গালে বয়সের ভাঁজ নেই, নেই চোখে মুখে হতাশা। অথচ দেখেনঃ একাত্তরের আগে হতে - 'এখনও আমরা আপনাদের কথামতোন চলি। সংখ্যালঘু মনে- বৌ ঝি ছেলে ব্যবসা বানিজ্য চাকরি নিয়ে সব সময়ই টেনশন করি। বউটা ছেলে বায়েজীদের কিছু একটা হবে হবে ভেবে চিন্তা নিয়ে মরেই গেল।'

বায়েজীদের বাকি খাতার লাইনটা দীর্ঘ।

ও মুদি দোকানি। পুঁজিপাট্টা শেষের দিকে।

মাঝে মাঝে সেই নেতা আবারও এলাকায়

আসেন। নেতার মনে ভয় করলে বায়েজীদের ডাক পড়ে। ডাক পড়ে আজীবন ত্যাগের খাতায় নাম লেখানো রাজপথ কাঁপানো কর্মী জমির উদ্দিন মণ্ডলের। জমির উদ্দিনের চোখে মুখে এখনো সাহস আছে, কিন্তু নিঃস্ব পুষ্টিহীন জীবনে বল শক্তি নাই। দলের দুর্যোগে দলের সিংহভাগ সুবিধাভোগী নেতা-কর্মী যখন পালিয়ে পিকনিক করতে যায়; জমির উদ্দিনের হাতে থাকে -কালো চিমনির নিবু নিবু হারিকেল। নিবু আলোর টর্চ একটি লাঠি। কাজকাম নাই। দলের অফিস পাহারা দেয়। মাঝে মাঝে থানার দারোগা ওসি ডাকে। ধমক দিয়ে বলে,অমুক তমুক নেতা কই? দলের দুঃসময়ে ত্যাগী কারোর যখন দেখা মেলেনা,বড় নেতা পাতি নেতার ফোনটাও বন্ধ থাকে; কর্মী জমির মণ্ডল নেতা কর্মীর পাশাপাশি পুলিশেরও সুখে দুখে কাছাকাছি থাকেন। পাইকারি কিংবা খুচরা নেতা কর্মীদের গ্রেপ্তারে সিনিয়র অফিসার যখন ওয়াকিটকিতে কিছু করে দেখাতে বলেন; ডাক পড়ে জমির উদ্দিন মন্ডলের। মস্ত বড় সন্ত্রাসী খাতায় নাম লেখায়ে বার বার জেল খেটেছেন। বাঁচিয়ে দেন পুলিশ ও বড় নেতার মান সন্মান। দু'কুলের ঘুম পাড়িয়ে জমির মন্ডল জেলে নির্ঘুম থেকেছেন। বার বার কোর্ট হাজিরা জামিন নিতে গিয়ে উকিল খরচ, ভালো মন্দ খাবার, বিড়ি খরচে বাবার দিনকার যা ছিলো,সবই সস্তা দরে বিক্রি করেছেন। সন্মান কিংবা পুলিশের রিমান্ড ভয়ে মাস বছর ধরে পালিয়ে যাননি। ক্ষমতার চিত্র- বিচিত্র পট পরিবর্তন, দেশের স্বার্থ দেখভাল পুলিশের ভাষা মুখে - জবাবদিহিতা স্বার্থের প্রয়োজনে জমির উদ্দিন মণ্ডল জেল খেটেছেন বছরের পর বছর। জমিরের ছেলেটা এমপি সিনহার সবুজ কলম পানে তাকিয়েছিল বছরের পর বছর। সেই সবুজ কলমের সুপারিশে তার চেয়েও অযোগ্য বিরোধীপক্ষের নেতা কর্মীদের দিয়ে সাজিয়েছেন প্রশাসনের চাকরির বহর।

এমপির উদ্বাহু হাসির অষ্টপ্রহরে ত্যাগী কর্মী চালচুলোহীন মনোদাস দলদাস জমির উদ্দিনের ছেলেটাকে উদ্যোক্তা হতে হলো।

এমপি সাহেব ধূর্ত সোহাগ মিশ্রিত ধমকের

সুরে বলেন,- ' বায়েজীদ, তুইত নেতার ছেলে নেতাই হবি। সরকারি চাকরি করে চাকর হবি ক্যান?'

তুই কি সরকারি চাকরি করে চাকর হবি? না - বাণিজ্য বসতি লক্ষী মনে বাকি জীবনটা গড়ে নিবি? তোর বাবা একটা বোকাচোদা বে-আক্কেল। অর্ধেক জীবন

তোর চাকরির জন্য আমার কানে কানে ঘ্যানর ঘ্যানর করেছে। বাবার মতোন হলে বাকি জীবনটা না খেয়ে থাকবি। কাছে আয় -মাথাটা পেতে দে। দোয়া করে দিলাম। খাবি দাবি খলখলাবি

সামনে থানা সন্মেলন আছে। তুই - খিরমিজ খান সাহেবের দলের হয়ে কাজ করবি।

বাকী খাওয়া সামাজিক অধিকার মনে বায়েজীদের দোকানের পুঁজি প্রায় শেষ। ধারদেনা পশুপাখি মাছ মুরগি ব্যবসা সামলিয়ে শেষ সম্বল ঘর ভিটে মাটি নীলাম হাঁকাল ব্যাংক।

এ দিকে নারীবাদীদের প্রবল আপত্তির মুখে রত্নগর্ভা মা পুরস্কার -২০২৪ বন্ধ হয়ে গেল। খেতাব মেডেল আগে ভাগেই খিরমিজ খান সাহেবের স্ত্রী পারুল বেগমের নামে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের লিষ্টে ছিলো। আচমকা নারীবাদীদের আপত্তির মুখে মন্ত্রণালয়কে পুরস্কার দেয়া বন্ধ করতে হলো। বাজেট শেষ করতে হবে মনে, -সফল বাবা সন্মানে এই বার প্রথম চালু হলো - ' সফল বাবা পুরস্কার -২০২৪। '

সফল পুত্র ক্যাটাগরি বিচারে খিরমিজ খানই হবেন সফল বাবা। তার বড় ছেলে জজ। এক মেয়ে ইউএনও ছোট ছেলেটাও বিসিএস পুলিশে এসেছে। তাকে আটকায় কে?

হতে পারে - তার ছেলে মেয়েরাও তার

মতো স্বাধীনতা বিরোধী। বেছে বেছে তাঁরা প্রতিদিন হত্যা করেন - স্বাধীনতার

অবশিষ্ট চেতনা নিঃশ্বাস বিশ্বাস। কিন্তু তাতে কী? কার এমন বুকের পাটা দুঃসাহস? সামনে গিয়ে প্রতিবাদ করবেন? করে দেখান তো? সফল বাবা পুরস্কার - ২০২৪ খিরমিজ খান পাচ্ছেন -এমনটাই

চুড়ান্ত।

পুরষ্কার সাফল্যে উদ্বেলিত সর্বসাকুল্যেভরা

-খান খিরমিজের দেহ মন। আজ শুক্রবার।

সরকারি বন্ধ। বিসিএস সন্তানরা সবাই বাড়িতে এসেছেন। মেজবানে একপাতে সবাই খাবেন। এসেছেন, থানা পুলিশ উপজেলা প্রশাসন। এক টেবিলে এমপি সাহেবও খেতে বসেছেন। স্পেশাল আয়োজনে গরুর নলা দেশি মুরগি খাসির কষা ভুনা। এমপি সাহেব টুক টাক সাংকেতিক কথামালা টুংটাং চামচ হাতে খেয়ে চলেছেন।

ওসি ইউএনও সাহেব আগে ভাগে খাবার শেষ করে রুটিন মাফিক সন্মান দিতে দাঁড়িয়ে আছেন। হঠাৎ চিৎকার চেঁচামেচি হট্টগোল। জজ সাহেবের ক্লাসমেট ত্যাগী নেতার ছেলে বেকার বায়েজীদ চেয়ার টেনে পাশে বসেছেন।

সফল পিতা খিরমিজ খান ধমক দিয়ে বলেনঃ এই হাবলা! জানিস ও কে? ও এখন তোর ক্লাসমেট নয়- ' জজ '। জজের মানে বুঝিস!? সে ইচ্ছে করলে তোকে পুলিশ দিয়ে সবার সামনে পেটাতে পারে,ইচ্ছে মতো সবার সামনে গালিগালাজ করতে পারে। তোর হাত দু'টো করজোরে গড়ে দিতে পারে ইচ্ছে ভাস্কর্য। তার ইচ্ছে ছাড়া কোর্টে একটি কথাও কেউ কইবার পারেনা। সে চলে জমিদারের মতন। চাইলে তোদের সবকটিকে ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে দিতে পারবেন। এগুলো বড়দের খাবার,তোর জন্য সেরেলাক মেজবানি টেবিল। খানের সাথে সাথে হো হো করে সবাই হাসেন।

- ওকে দেখ। সে এখন ইউএনও। এইদিকে দেখ - সে পুলিশের এসপি। যাকে তুমি শেখ সাবের ছবি ছেঁড়ার কারণে চড়

মেরেছিলে? হারামজাদা ছ্যাবলা কোথাকার। খান সাহেবের তর্জন গর্জনে কাঁপছে খাবার প্যাণ্ডেল। এমপি সাহেব ভয়ার্ত চাহনীতে এদিক ওদিকে তাকিয়ে দেখেন, - জজ ইউএনও পুলিশ ত্রিমুখী ধমকে

দেহরক্ষী সেবক পুলিশও উনার ধারে কাছে নাই ,শেষমেশ এমপি সাবও খিরমিজ খানের গুণকীর্তন গাইলেন।

খিরমিজ খান সাহেব এমপি'র দিকে তেড়ে এসেছেন। প্রাইভেট পাবলিক অনলবর্ষী নেতা কর্মী নাই। পুলিশগুলো বদ্বীপের বিমূর্ত ভাবনার চিত্রপট হয়ে মমি মনে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছেন। এমপি সাহেবকে 'এইমাত্র সমুদয় টাকা ফেরত নিতে হবে। নচেৎ প্রকাশ্যে পেটাবে ' খিরমিজ খান সময় বেঁধে দিলেন।

ফাঁকা হয়ে গেছে খাবার প্যাণ্ডেল। কোথাও কেউ নেই। ভেসে আসছে কিছু মীরজাফর সময়ের অট্টহাসি। এই অট্টহাসি জাতির পিতা ও শেখ রাসেল দেখেছিল। বুকভরা সাহসে পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিল -তোরা আমার কাছে কী চাস? কেঁদে কেঁদে মৃত্যুর হিমশীতল পরশে ছোট শিশু দুরু দুরু বুকে বলেছিল,' আমি মায়ের কাছে যাব।'

এমপি সাহেবের চোখের সামনে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে যাপিত সময়ের চিত্রকল্প। ভেসে আসছে সন্তান স্বামী হারা ত্যাগী নেতা কর্মীদের কিছু মানব হরিণী কান্না। বদ্বীপের ঘরে ঘরে সপরিবারে হত্যার অনুকল্প স্মৃতি দাসের ভেলা চেপে ভেসে আসছে পিতার না বলা কথা; শিশু রাসেলের অব্যক্ত কস্টের হাকাকার।

এমপি সাহেব কাঁপছে। ভুলগুলো হয়ে গেছে এক একটি প্রকাণ্ড বনস্পতির শাখা প্রশাখা শিকড়। চিৎকার করে বলছে - ' তোমরা কে কোথায়? তোমরা আমার প্রাণের সন্তান ভাই ভাতিজা। বলো -আমার কাছে কী চাও? সবুজ কালির সুপারিশে জজ ইউএনও এসপি বানিয়ে আমি এমন কী অপরাধ করেছি?। '

চতুর খিরমিজ খানের পরিকল্পনা স্বার্থক হতে চলেছে। খিরমিজ খানের সফল পুত্ররা পরম নির্ভরতার চাদরে এমপি সিনহাকে বুকে জড়িয়ে রেখেছেন। পেশাদার ডাকাত যেমন নিজেদের রক্ষাকবচ মনে করে প্রভাবশালী কারোর হয়ে কাজ করেন; গ্রেফতার সময়ে গোপনে পুলিশকে বিভ্রান্ত করে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন; পালিয়ে যাবার পরে পুলিশের ডাকাত ধরতে না পারা ব্যর্থতা নিয়ে তীব্র ভাষায়:

গালমন্দ করেন,সেভাবে খান সাহেবেরও সফল পুত্ররা উপস্হিত পুলিশ এসকর্ট ডেকে বহুমুখী তীব্র কর্কশ তিরস্কৃত মুখে বলেন:

' সরকার আপনাদের বেতন দেয় কেন?। '

সিনহা চাচার এমন বিপদে আপনারা পাশে না থেকে কেন দূরে সরে গেলেন? '

এসকর্ট দলনেতার উত্তর: স্যার। আমরা দেখেছি,খান চাচা মানে আপনার আব্বিজান ও এমপি স্যার দু'জনে সুখে দু:খে পাশে থেকেছেন, উনারা এক ও অভিন্ন।

আমরা প্রথমে মনে করেছি,তাঁরা দুষ্টুমি করে চলেছেন; হবেন হয়তোবা কোনো ওয়েব সিরিজের মনিটাইজেশন রিহার্সেল। পরে এমপি স্যারের কাঁপন দেখে বুঝতে পেরেছি, আপনার আব্বিজান প্রচণ্ড রকমের মাইণ্ড করেছেন।

খান চাচার রাগ এখনও কমেনি। তাঁর মুক্তিযোদ্ধা খেতাবটুকুন চাইই চাই। এমপি সাহেব এতদিন গড়িমসি করেছেন। উপজেলা সন্মেলন কক্ষে বিভিন্ন চেয়ারম্যানের সামনে আইন শৃঙ্খলা মিটিং মুখে এমপি সাহেব উপস্হিত থেকে শোনাবেন স্বয়ং - কীভারে বগলে ঘাড় চেপে ধরে একজন দু'জন নয়, তিনজন খান সেনা মেরেছেন। গুণধর সন্তান পিতা খিরমিজ খান চাচার এ জীবনে এটাই শেষ আবদার।

মানুষ, সুখ শাস্তি আমিত্ব প্রাচুর্য মোহ লোভ প্রতিযোগী মনে হারিয়ে ফেলেন একান্ত নিজস্বী। সবকিছু হারানোর পরে একসময় বোধোদয় ঘটে। তাইত এ বদ্বীপের সফল অসফল ডাকাত মাস্তান খুনি ধর্ষক লুটেরা বাংলা সিনেমার মতো জীবন সিনেমার শেষাংশে ভিলেন মুখে কেঁদে কেঁদে বলতে শোনা যায় - ' যা করেছি ভুল করেছি।'

কিন্তু এ ভুল কাগজে কলমে পর্যন্ত সীমাবদ্ধ, বলা লেখা সার। কেউ সিনেমা দর্শক চোখে মনে রাখেনা। সবকিছু ভুলে গিয়ে ক্ষমা সুন্দর মনে আবার ভিলেন নিয়ে নতুন করে সিনেমা স্ক্রিপ্ট রিহার্সেল সেরে লেগে যান, নতুন হিট ছবি ' খাই খাই ' বিজ্ঞাপনে।

মুক্তিযোদ্ধা এমপি সিনহা সাহেবেরও বোধোদয় ঘটেছে। তবে অনেক পরে। সবকিছু নিয়ে খেলতে নাই। সর্বভূক আগুন বিষাক্ত জাত গোখরো অজগর নিয়ে যেভাবে খেলতে নেই; ঠিক নিজস্বীহারা ভুল মানুষকে বিশ্বাস করতে নেই। এমপি সিনহা সাহেবও বদ্বীপের সংসারে সবকিছু ভুলে হৃদয়ের বিশালতা দেখিয়ে যেভাবে বলেছিল,খিরমিজ খান আমার ভাইয়ের মতো,তার সন্তান আমার সন্তানের মতো। আসলে হৃদয়ের বিশালতা ব্যেপে মতন মতন সংসারে ভালোমতন হয়নি বদ্বীপের কোনোকিছু। সাত পাঁচ না ভেবে,এমপি সিনহা স্যারের উপলব্ধির আঙিনা পেরিয়ে বছর বছর ভুলের শূন্যগুলো হয়ে গেছে এক একটি বিষাক্ত অজগর অ্যানাকোন্ডা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি নিয়ে সংবর্ধিত হতে যাবেন জনাব খিরমিজ খান। দলের সেরা পদ পদবী ওয়াগন তাঁর নামের আগে পরে রেল ইঞ্জিনের মতো করে টেনে নিয়ে যাবেন।

কৌশলী জনাব খান চালু করেছেন মোটা অঙ্ক টাকার নতুন নতুন সাহিত্য পুরস্কার ও নানান উপহার। তাঁর দেখা মতে সেরা লেখকদের বিদেশ ভ্রমন। অনুষ্ঠান শেষে তাপানুকুল সুসজ্জিত রুমে ওয়াইন পানের ফূর্তি আসর তো থাকছেই।

খাই খাই কবি মহল স্তুতি সাহিত্য নিয়ে কবিতা লিখছে। ঔপন্যাসিক স্তুতি কলমে ভেসে উঠেছে নতুন একটি সোনালী চর। সে চরে ভেসে এসেছে নতুন এক অচেনা দরবেশ, নাম রেখেছেন দরবেশ সোনা খান। সে বাবা খান ঈশ্বরের পরম বন্ধু। যে যেভাবে যা চান, বাবা খান সবই করে দিতে পারেন।

কবি কলমে স্তুতি, ঔপন্যাসিক কলমে গীতি, প্রাবন্ধিক কলমে প্রীতি, সাংবাদিক কলমে অমোচনীয় স্মৃতি হয়ে খিরমিজ খান রাতারাতি হয়ে গেলেন সোনা বাবা খান। বিশ্ব সফল বাবা সন্মেলন-২০২৪ চলছে। ক্যাটাগরি বিচারে জমকালো অনুষ্ঠানে সফল বাবা পুরস্কার -২০২৪ হাতে খিরমিজ খান ওরফে সোনা খান, সাংবাদিক সন্মেলনে ব্যতিব্যস্ত। সাংবাদিক কলম এক এক করে জনাব খান মুখে পুত্রদের সফলতার গল্প শোনতে মুখিয়ে আছেন। বাবা খানের রাতে সিঙ্গাপুরে ব্যবসায়িক প্রোগ্রাম। হাতে সময় কম।

বদ্বীপের চিরচেনা খিরমিজ খান ওরফে বাবা খান ওরফে সোনা খানের একটি কমন ডায়ালগ নিয়ে সবাই সমীহ করেন: ' নলেজ ইজ পাওয়ার। '

হল ভরতি দেশ বিদেশের কবি সাহিত্যিক

বুদ্ধিজীবি ও সাংবাদিক। সঞ্চালক হয়ে

আহুত অনাহুত সবার মুখে মুখে কখনো অভিভাবক কখনো মানবতার ফেরিওয়ালা কখনও বিশ্বের সফল একমাত্র পিতা স্তাবক স্তুতি পূর্ণিমা জোয়ারে সোনা খান বাবাকে ভাসিয়ে নিয়ে চলেছেন। সামনে অজানা সাগর মহাসাগর। মুহুর্মুহু হর্ষধ্বণি করতালি নিমগ্ন খিরমিজ খান পরিবারের সফল সন্তান, আত্নীয় স্বজন নিয়ে চির কলঙ্ক বৈতরণী নদী পেরিয়ে সফলতার স্বর্গে পায়ে হেঁটে চলেছেন।

বিবিসি বাংলা প্রভাবশালী সাংবাদিক সোহেলি সানাই মাহাবুবের প্রশ্ন:

- ' আচ্ছা, খান বাবা। আপনার ছোট ছেলের নলেজ নিয়ে কিছু বলেন। '

: সেদিন ছিল পূর্ণিমা তিথি। আপন ছুটিতে ছিলো। লস্কর বাড়ির বড় মেয়ে মুন্নির সাথে তার বিয়ে নিয়ে কথাবার্তা চলছিল। সে বাইরে গেলে আমিও তার পেছন পেছন হেঁটে গেলাম। আমার স্নেহের ছোট সন্তান। বাড়িতে এলে আগলে রাখি। মাশাল্লাহ তার নলেজ ভালোই।

- কী নলেজ ? প্লিজ খুলে বলুন।

: সে পুকুর পাড়ে পেশাব করতে বসেছিল। তার নলেজ পুরোটাই আমি দেখেছি।

[কল্পিত সম্প্রদায়ের মানুষ। লেখার চরিত্রের সাথে কারোর চরিত্রের মিশেল গোস্বাতে লেখক দায়ী নন।]

লেখক: প্রাবন্ধিক ও কবি, পুলিশ পরিদর্শক বাংলাদেশ পুলিশ। মেইল- [email protected]

  • সর্বশেষ
  • পঠিত