দুর্গাপূজা সামনে রেখে জাল টাকার কারবারিরা সক্রিয়
সুশান্ত সাহা
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২০, ২০:১২ আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২০, ০২:৪৭
শারদীয় দুর্গাপূজা সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জাল টাকার কারবারিরা। বাজারে জালনোট ছড়িয়ে হরিলুট করতে সক্রিয় হয়ে উঠছে এ চক্রের সদস্যরা। পূজার মার্কেট এই চক্রের প্রধান টার্গেট। দেশব্যাপী এই চক্রের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে। জালনোট বাজারে ছড়িয়ে দিতে তারা বেছে নিচ্ছে নানা কৌশল।
এদিকে এ চক্রকে ধরতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। এরই মধ্যে সোমবার বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডের একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামসহ সংঘবদ্ধ চক্রের চার সদস্যকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবি গুলশান বিভাগ।
এরা হলো, চক্রের মূলহোতা হুমায়ন কবির খান (৪৫), জামাল (৪২), সুখী আক্তার (৩০) ও তাসলিমা আক্তার (৩০)। এসময় ৪৯ লাখ ৫০ হাজার জাল টাকা জব্দ করা হয়। অভিযানে উদ্ধারকৃত সরঞ্জাম দিয়ে আনুমানিক ৫ কোটি জাল টাকা তৈরি করা সম্ভব বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডের ওই বাড়িতে রুম ভাড়া নিয়ে দুই বছর ধরে তারা এই কাজ করে আসছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তারা গ্রেপ্তার হলেও ২-৪ বছরের মধ্যে ছাড়া পায়। এরপর আবারও একই কাজে জড়িয়ে পড়েন।
গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, মহামারী করোনাভাইরাসের সংকটের মধ্যেও তারা ব্যাপক প্রস্তুতির মাধ্যমে আবারো জাল টাকা তৈরিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই চক্রটি আসন্ন দুর্গাপূজা সামনে রেখে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় জাল টাকা বিস্তারের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিল।
এর আগে ডিবির এই টিম গত ২৪ আগস্ট রাজধানীর পল্টন থানা এলাকা থেকে ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকার জাল নোটসহ ৫ জনকে আটক করে।
ডিবি পুলিশ জানায়, এ চক্রের মেশিন থেকে প্রতিদিন ৫০০ ও এক হাজার টাকার নোট ছাপানো হয়। প্রতিদিন গড়ে পাঁচ লাখ জালনোট তৈরি করতে পারে তারা। প্রতি এক লাখ টাকা বিক্রি হয় ৮-১০ হাজার টাকায়। জালটাকার তৈরির দক্ষ কারিগর হুমায়ুন কবির। একযুগ ধরে হাত পাকিয়ে আজ সে চক্রের হোতা। এই চক্রে স্ত্রী-ভাইসহ সবাইকে এনেছে সে।
২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয়বাবের বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে হুমায়ুন। সর্বোচ্চ ১৮ মাস জেল খেটে আবারও এই অপরাধে জড়িয়ে পড়ে সে। এই হুমায়ুন কবির একাই একশ। সফটওয়ার তৈরি থেকে টাকা ছাপানো সবই তার নখদর্পেণে। তাকে এই কাজে সহায়তা করে দুই নারী সদস্য।
ডিবি আরো জানায়, রাজধানী থেকে শুরু করে সারাদেশে টাকা সরবরাহের জন্য রয়েছে এই চক্রের নিজস্ব সিন্ডিকেট। সেই চক্রের এক সদস্য মুন্সিগঞ্জের জামাল। ঢাকা, সাভার, মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন জেলায় জালটাকা ছড়িয়ে দেয়াই তার কাজ।
ক্রেডিট কার্ড জালিয়াত চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস/আরকে