হাওর-পাহাড়-অরণ্যের মিলনমেলা হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০১৯, ১০:২৮
বাঙালী জাতি ভ্রমণপ্রেমী হলেও কর্মব্যস্ত জীবনে পরিবার পরিজন নিয়ে ভ্রমণ করার খুব একটা সময় হয় না অনেকেরই। তাইতো ছুটি পেলেই পরিবারের সাথে একান্ত সময় কাটাতে অনেকেই বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন। সবাই-ই কাছে-দূরে ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। অনেকেরই প্লান থাকে বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যাওয়া। দেশের ভিতর তো বটেই, দেশের বাইরেও ছুটেন অনেকে।
আবার যারা দেশের বাহিরে যেতে পারেন না বা চান না, তাদের অনেকেই ভাবেন কোথায় বেড়াতে যাওয়া যায়। বাংলাদেশের অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান থাকলেও হবিগঞ্জে রয়েছে প্রকৃতির সাথে হারিয়ে যাওয়ার মতো অনেক স্থান। তাইতো এই ঈদে একবারের জন্য হলেও ঘুরে আসতে পারেন প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্যমন্ডিত হবিগঞ্জ জেলায়। এখানে রয়েছে-
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন রেমা-কালেঙ্গা
সুন্দরবনের পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক বন রেমা-কালেঙ্গা। হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় প্রায় ১৭৯৫ হেক্টর আয়তনের এ বনভূমি বিস্তার লাভ করতে শুরু করে ১৯৪০ সালের দিকে। তবে বনটিকে অভয়ারণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় ১৯৮২ সালে, আর সম্প্রসারণ করা হয় ১৯৯৬ সালে।
কালেঙ্গা, রেমা, ছনবাড়ী আর রশিদপুর চারটি বিটের মধ্যে রেমা, কালেঙ্গা আর ছনবাড়ী এলাকার বিস্তীর্ণ জঙ্গল নিয়ে রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য গঠিত। রয়েছে বেশ কয়েকটি পাহাড়-টিলা। এখানকার পাহাড়গুলোর সর্বোচ্চ উচ্চতা প্রায় ৬৭ মিটার।
বন বিভাগের তথ্যমতে, রেমা-কালেঙ্গায় ৩৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, সাত প্রজাতির উভচর, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ১৬৭ প্রজাতির পাখি রয়েছে। এছাড়া এখানে বিরল অনেক প্রজাতিসহ ৬৩৮ প্রজাতির গাছপালা ও লতাগুল্মও রয়েছে।
অভয়ারণ্যের ভেতরে রয়েছে সু-উচুঁ একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। সেখানে দাঁড়িয়ে দেখা যায় বনের ভেতরের দূর-দূরান্তের মনোরম দৃশ্য। আর টাওয়ারের নিচেই আছে আঁকাবাঁকা একটি লেক।
বাংলাদেশের আদিবাসী সম্প্রদায়ের জীবনধারাও দেখা যেতে পারে এখানে। রেমা-কালেঙ্গা বনের ভেতরেই রয়েছে ত্রিপুরা, সাঁওতাল, তেলুগু ও উড়ংসহ চারটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস। যাদের অতিথিপরায়ন যে কাউকে মুগ্ধ করবে।
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান
চারিদিকে গাঢ় থেকে হালকা জঙ্গল আর পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত করে তুলা এক উদ্যোনের নাম সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় অবস্থিত এ উদ্যানে নানান জাতের পাখি আর বন্যপ্রাণীদের আশ্রয়স্থল।
উদ্যানের ভেতরে এক সময় সাতটি ছড়া বা ঝড়না ছিলো। সেই সাতটি ছড়া থেকে এক সময় নামকরণ হয় সাতছড়ি। এসব পানির ধারার কিছু কিছু এখনও দেখা মেলে সেখানে। প্রায় ২৪৩ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত সাতছড়ি উদ্যান।
২০০৫ সালে নির্দিষ্ট কিছু জায়গা নিয়ে সাতছড়িকে জাতীয় এ উদ্যান ঘোষণা করা হয়। বলতে গেলে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান পাখির রাজ্য। প্রায় ১৯৭ প্রজাতির জীবের বসবাস এই উদ্যানে। এর মধ্যে ১৪৯ প্রজাতিই পাখি, ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৬ প্রজাতির উভচর প্রাণী রয়েছে সেখানে।
বিলুপ্ত প্রায় অনেক প্রাণী ও বিরল প্রজাতীর গাছপালা দেখতে যেতে পারেন এই উদ্যানে। এছাড়াও এখানে রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস। তবে এখানের সু-উচুঁ পাম গাছগুলো সব চেয়ে বেশি নজর কাড়ে পর্যটকদের। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে সম্পূর্ণ জঙ্গলকে দেখতে সেখানে রয়েছে উচুঁ ওয়াচ টাউয়ার। পর্যটকদের জন্য ২০১৫ সালে সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে ট্রি এডভেঞ্চার।
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জলাবন ‘লক্ষীবাউর’
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় লক্ষীবাউর সোয়াম্প ফরেস্ট (জলাবন)। উপজেলার প্রান্ত সীমানায় খড়তি নদীর দক্ষিণে বিশাল হাওরের মধ্যে এর অবস্থান। জলাবনটি এলাকাবাসীর কাছে ‘খড়তির জঙ্গল’ নামেও পরিচিত। তবে এই বনের উৎপত্তি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়নি।
জলাবনের বিচিত্র রূপ বিস্ময়কর। বর্ষাকালে চারদিকে হাওরের পানি আর জঙ্গলের অসংখ্য গাছপালার সবুজ অরণ্য পরিবেশকে নান্দনিক করে তুলেছে। দূর থেকে হাওরে জঙ্গলটিকে দেখলে মনে হয় যেন পানির ওপর ভাসমান একটি জঙ্গল।
হিজল, করচ, বরুণ, কাকুরা, বউল্লা, খাগড়া, চাউল্লা, নলসহ অসংখ্য গাছ ও গুল্মে পরিপূর্ণ এই জলাবন এতদিন অনাবিষ্কৃতই ছিল। এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, সরীসৃপ ও স্তন্যপায়ী জীবজন্তু। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মেছোবাঘ, শিয়াল, গুইসাপ, কেউটে, লাড্ডুকা, দারাইশসহ অনেক বিষধর সাপ।
বর্তমানে বিভিন্ন জাতের বক, পানকৌড়ি ও বালিহাঁস দেখা গেলেও শীতকালে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে নির্জন এই জলাবন। এছাড়া বনটিকে দেশি ও অতিথি পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পাখি শিকার করলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা আদায়সহ শিকারিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দ্য প্যালেস রিসোর্ট
ঈদে যারা বিলাষবহুল সময় কাটাতে চান তাদের জন্য রয়েছে সর্বাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন লাক্সারি রিসোর্ট ‘দ্য প্যালেস’। হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পুটিজুড়ি এলাকায় অবস্থিত দ্য প্যালেস রিসোর্ট। সবুজ টিলার চূড়ায় চূড়ায় গড়ে তোলা এ প্যালেসটি দেখলে মোগল আমলের রাজপ্রাসাদই মনে হবে আপনার কাছে।
এক টিলা থেকে অন্য টিলায় যাতায়াতের জন্য তৈরি করা হয়েছে দুটো ঝুলন্ত সেতু। পাশে রয়েছে থরে থরে ফল আর সবজির বাগান। আর চা বাগানতো আছেই। এ রিসোর্টের ন্যুনতম ভাড়া ১১ হাজার ৫০০ টাকা। আর তিন কক্ষের প্রেসিডেনশিয়াল ভিলার ভাড়া এক দিনে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। অতিথিদের জন্য সকালের নাশতা, দুপুর ও রাতের খাবারে বিশেষ অফার রাখা হয়েছে।
ঈদকে ঘিরে প্যালেস কর্তৃপক্ষ ওয়াটার জোন তৈরি করেছে। লেকে ছাড়া হয়েছে চীন থেকে আনা বেশ কিছু নৌকা। তা ছাড়া ছোট-বড় সবার সময় কাটানোর জন্য রয়েছে নানা রকম গেম। এছাড় এর ভেতরে আছে বিলিয়ার্ড, রিমোট কন্ট্রোল কার রেসিং, ফুটবল, বাস্কেটবল আর টেনিস গ্রাউন্ড। আছে দুটো সিনেপ্লেক্সে থ্রি-ডি সিনেমা দেখার ব্যবস্থা। দোতলায় বার কাম রেস্তোরাঁ। রিসোর্টের ভেতরে চলাচলে আছে গলফ কোর্ট।
কমলা রাণীর ‘সাগরদিঘী’
কথিত রয়েছে, পনের শতকের শেষ ভাগে রাজা কল্যাণ সিংহের পুত্র রাজা পদ্মনাথ বিশ্বের বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচংয়ে জন্মগ্রহণ করেন। রাজা পদ্মনাথ সিংহ বিয়ে করেছিলেন তরফ অঞ্চলের রাজকুমারী কমলাবতীকে। বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই রাণীর রূপে, গুণের প্রশংসায় প্রজারা মুগ্ধ।
রাণীর ঘরে এক ফুটফুটে রাজ কুমারের জন্ম হওয়ার পরেই রাজ্যে পানির অভাব দেখা দেয়। আর ঠিক সেই সময়েই রাজা পদ্মনাথ পরপর তিন দিন স্বপ্নে দেখেন কে যেন রাজাকে বলে দেয় বড় একটি দিঘী খনন করলে রাজ্যের পানির অভাব দূর হয়ে যাবে। তিনি তার স্বপ্নের কথা প্রজাদের সাথে আলোচনা করেন। পরবর্তীতে রাজা স্বপ্নের ব্যাখ্যা মোতাবেক বানিয়াচং এর মধ্যভাগে এক বিশাল দিঘী খননের আদেশ দেন। দিঘী খনন শেষে তাতে পানি উঠছে না। তা দেখে রাজা খুবই দুশ্চিন্তায় পড়েন। তখনই রাজা আবার স্বপ্নে দেখেন কমলাবতী আত্মদান করলেই কেবল দিঘীতে পানি উঠবে। তখন এ স্বপ্নের বিবরণ শুনে কেও তা মেনে নেয়নি।
কিন্তু প্রজাদের সুখের কথা চিন্তা করে রাণী নিজেই সিদ্ধান্ত নেন যে, তিনি দিঘীতে আত্মাহুতি দিবেন। একদিন রাণী সুসজ্জিত হয়ে দিঘীতে নেমে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। রাণী যতো সামনের দিকে যান পানি তত বাড়তে থাকে। এক সময় পানিতে তলিয়ে যান রাণী আর ভেসে ওঠেন না। সেই থেকেই এই দিঘীর নামকরণ করা হয় ‘কমলা রাণীর সাগর দিঘী’।
কমলা রাণীর দিঘীর আয়তন প্রায় ১৩ একর। পল্লী কবি জসিম উদ্দিন বর্তমান সাগর দিঘীর পশ্চিম পাড়ে বসে কমলা রাণীর উপন্যাস রচনা করেছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
৬শ’ বছরের পুড়নো ‘বিথঙ্গল আখড়া’
বিথঙ্গল আখড়ার নাম আসলেই চলে আসে কয়েকশ বছর পূর্বের ইতিহাস। হবিগঞ্জ শহর থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার অতিক্রম করে কালারডুবা খেয়াঘাট। সেখান থেকেই ট্রলার ভাড়া করে প্রায় ১৬ কিলোমিটার কিংবা বানিয়াচং উপজেলা শহর থেকে ১২ কিলোমিটার অতিক্রম করলেই এই বিথঙ্গল আখড়ায় যেতে পারবেন।
৬০০ বা ৪০০ বছর পূর্বে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামী বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের জন্য বিথঙ্গলে এসে এই আখড়া প্রতিষ্ঠা করেন। এতদঞ্চলের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র এ আখড়ার প্রতিষ্ঠাতা শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামী হবিগঞ্জের রিচি পরগনার অধিবাসী ছিলেন।
বাংলা ১০৫৯ সনে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামীর দেহত্যাগ হয়। আখড়ায় শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামীর সমাধিস্থলের উপর একটি সুদৃশ্য মঠ প্রতিষ্ঠিত। মঠের সামনে একটি নাট মন্দির এবং পূর্ব পার্শ্ববর্তী একটি ভান্ডার ঘর এবং দক্ষিণে একটি ভোগ মন্দির রয়েছে। এছাড়া আরো কয়েকটি পুরাতন ইমারত আছে।
আখড়ায় অনেক দর্শনীয় বস্তুর মধ্যে রয়েছে ২৫ মণ ওজনের শ্বেত পাথরের চৌকি, পিতলের সিংহাসন, রথ, রৌপ্য নির্মিত পাখি, মুকুট ইত্যাদি। বিশাল এই আখড়ায় মোট কক্ষ আছে ১২০টির মতো। লোকমুখে জানা যায়, কক্ষগুলোতে ১২০ জন বৈষ্ণব থাকতেন। তবে বর্তমানে বৈষ্ণব বসবাস করছেন মাত্র কয়েকজন।
আখড়াতে দুপুরে ভক্তদেরকে এক প্রকার প্রসাদ দেওয়া হয়। সবজি আর খিচুড়ির মিশ্রণ। এসব খেয়ে ভক্তরা অসাধারণ স্বাদ পান। এখানে পর্যটকরা মূলত আসেন আখড়া দেখার জন্য। সঙ্গে হাওরের প্রাকৃতিক দৃশ্যটাও তাদের দেখা হয়। তাই শতকষ্টেও ইতিহাস সমৃদ্ধ এ আখড়ায় পর্যটকের আগমণ ঘটছে।
মুক্তিযোদ্ধে স্মৃতি বিজরিত ‘তেলিয়াপাড়া স্মৃতিসৌধ’
হবিগঞ্জের মাধবপুর তেলিপাড়া চা বাগানে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধে স্মৃতি বিজরিত ‘তেলিয়াপাড়া স্মৃতিসৌধ’। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলোটিতে দেশকে স্বাধীন করার জন্য ঐতিহাসিক এক শপথ অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকেই সমগ্র রণাঙ্গনকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করেন মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী।
বৈঠক শেষে এমএজি ওসমানী নিজের পিস্তলের ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণের শপথ করেন। বর্তমানে সেখানে রয়েছে একটি স্মৃতিসৌধ। পাশে বাংলো ও অপরূপ একটি লেক। যা দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে। তাই ছেলে-মেয়েদের মুক্তিযুদ্ধে ইতিহাস জানাতে বেছে নিতে পারেন এই স্থানটি।
সবুজ চা বাগানের অপরূপ দৃশ্য
সবুজ কচি পাতার চা বাগান দেখতে কে না ভালোবাসেন। তাইতো বলছি, নয়নাভিরাম সবুজ চা বাগান, আঁকাবাঁকা পাহাড় টিলা দেখতে চলে আসতে পারেন হবিগঞ্জ। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, নবীগঞ্জ ও মাধবপুর উপজেলায় রয়েছে ৫৪টি চা বাগান।
উচুঁ নিচুঁ টিলায় সাড়ি সাড়ি সবুজ চা গাছ যে কোন দর্শনার্থীকে নিয়ে যবে এক অন্য দিগন্তে। পরিবার পরিজন নিয়ে প্রতি বছর হবিগঞ্জের চা বাগানগুলোতে ঈদে দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে বর্তমান সময় চা বাগরের রূপ লাবণ্যের সময়। এ সময়টাতে চা বাগানগুলোতে কচি পাতা আসে। সৌন্ধর্য্য বৃদ্ধি পায় দ্বিগুণ।
মুগ্ধ করবে অপরূপ বর্ষা
কর্ম ব্যস্ত জীবনে গ্রামে খুব একটা যাওয়া হয়নি অনেকেরই। অথচ বর্ষায় হাওরের রূপ দেখতে সকলেই মন চায়। সেই চাহিদা পূরণ করতে আসতে পারেন হবিগঞ্জে। হবিগঞ্জের বিস্তৃর্ণ এলাকায় রয়েছে হাওরে। যেখানে ভ্রমণ করলে আপনে ও আপনার পরিবারের সদস্যদের মন ভরে উঠবে।
হবিগঞ্জে আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, নবীগঞ্জ, লাখাই উপজেলার হাওরগুলো রয়েছে মন মাতানো এক রূপ। সেখানে একই সাথে উপভোগ করা যাবে গ্রামীন জীবনযাত্রা। নৌকাযোগে যে কোন হাওরে ঘুরলে আপনে জেলে-মাঝিদের জীবনপ্রণালী দেখে মুগ্ধ হবেন।
এছাড়া, হাওরের বুকে পানিতে ভেসে থাকা হিজল, করছ, বল্লা, ছালিয়া, নলখাগড়াসহ নানান প্রজাতির বনজ ও জলজ প্রাণি আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
এছাড়াও হবিগঞ্জে যা দেখতে পাবেন
হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ৭শ’ বছরের পুরনো শংকরপাশা উচাইল শাহী মসজিদ। সেখানে রয়েছে মুগল আমলের অনেক স্মৃতি চিহ্ন। মাধবপুর উপজেলার অবস্থিত রাবার বাগান, ফ্রুট ভ্যালী, শাহজী বাজার পাওয়ার প্লান্ট, এশিয়া মহাদেশের সর্ব বৃহত্ত গ্যাস ক্ষেত্রে ‘বিবিয়ানা’। যা হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে অবস্থিত। রয়েছে চুনারুঘাট উপজেলার রাণী গাঁওয়ে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ‘গ্রিনল্যান্ড পার্ক’।
বাংলাদেশ জার্নাল/টিপিবি