ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ আপডেট : ৫ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

বাবরি মসজিদ ভাঙার পর যে কারণে মুসলিম হন বলবীর ও যোগেন্দ্র

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:৪২  
আপডেট :
 ১১ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:৪৫

যে কারণে মুসলিম হন বলবীর ও যোগেন্দ্র

অযোধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি নিয়ে শনিবার রায় দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে, অযোধ্যার বিতর্কিত জমি শর্তসাপেক্ষে দেওয়া হোক হিন্দুদের। মুসলিমদের মসজিদ তৈরির জন্য বিকল্প জমি দেওয়া হোক।

শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছেন,৩-৪ মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে তৈরি করতে হবে ট্রাস্ট। সেই ট্রাস্ট ওই জমিতে মন্দির নির্মাণের জন্য রূপরেখা তৈরি করবে। আর অযোধ্যাতেই মসজিদের জন্য মুসলিম সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ডকে দেওয়া হবে ৫ একর বিকল্প জমি।

ঐতিহাসিক রায় দিতে গিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আরও বলেছিলেন, ৯২ সালে মসজিদ ভাঙা বে–আইনি কাজ ছিল। বাবরি মসজিদ ভাঙা নিয়ে মামলা চলছে লক্ষ্ণৌয়ের সিবিআই আদালতে। সুপ্রিম কোর্টের এ পর্যবেক্ষণ যথেষ্ট তাৎপর্য বলে মনে করা হচ্ছে।

বাবরি মসজিদ নিয়ে রায়ের পর থেকে আলোচনায় বলবীর সিং ও যোগেন্দ্র পাল। কেন তারা বাবরি মসজিদ ভাঙার পর মুসলমান হলেন। বাংলাদেশ জার্নাল এর পাঠকদের জন্য আমাদের এই আয়োজন-

বলবীর সিং ও যোগেন্দ্র পাল বাবরি মসজিদ ভাঙার অগ্রসেনানী ছিলেন। ২৫ বছর আগে তারা দু’জন বাবরি মসজিদের গম্বুজের চুঁড়ায় ওঠে দু’হাতে চালিয়েছেন শাবল। তারা উভয়েই এখন মুসলিম। রেখেছেন দাঁড়ি। বলবীর সিং মুহাম্মদ আমির নাম ধারণ করেছেন বলে জানা যায়।

দীর্ঘ ২৫ বছর আগে বলবীর সিংহ ও তার বন্ধু যোগেন্দ্র পাল সাধারণ পরিবার থেকে শিবসেনার সক্রিয় কর্মী হয়ে বাবরি মসজিদের চূড়ায় ওঠে শাবল দিয়ে মসজিদের গম্ভুজ ভেঙেছিলেন। মসজিদ ভাঙার পর তারা পানিপথে গলে তাদেরকে দেয়া হয় সংবর্ধনা।

বাবরি মসজিদ ভাঙার পর বলবীর সিংহকে তার পিতা দৌলতরাম বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। মসজিদ ভেঙে বাড়ি যাওয়ার পর তার পিতা তাকে বলে, ‘বাবা আমাকে বললেন, হয় তুমি এই বাড়িতে থাকবে, না হলে আমি। তো আমিই বেরিয়ে গেলাম বাড়ি থেকে। আমার স্ত্রীও বেরিয়ে এল না। থেকে গেল বাড়িতেই।’

সে সময় ভবঘুরের মতো জীবন কাটিয়েছে বলবীর। লম্বা দাড়িওয়ালা লোক দেখলেই ভয়ে আঁতকে উঠতো বলবীর। বেশ কিছু দিন পর বাড়ি ফিরে জানতে পারে, বাবা দৌলতরাম মারা গেছে। বাবরি মসজিদ ভাঙার দুঃখেই দৌলতরামের মৃত্যু হয়েছে।

অতঃপর বলবীর পুরনো বন্ধু যোগেন্দ্র পালের খোঁজখবর নিতে গিয়ে আরও মুষড়ে পড়েন। বলবীর জানতে পারে, যোগেন্দ্র মসজিদ ভাঙার প্রায়শ্চিত্ত করতে গিয়ে মুসলিম হয়ে গেছে। যোগেন্দ্র পালের সঙ্গে দেখা হলে সে বলবীরকে বলেছিলেন, বাবরি ভাঙার পর থেকেই তাঁর মাথা বিগড়ে গিয়েছিল। যোগেন্দ্রর মনে হয়েছিল পাপ করেছিলেন বলেই সেটা হয়েছে। প্রায়শ্চিত্ত করতে গিয়ে তাই মুসলিম হয়ে যান যোগেন্দ্র।

যোগেন্দ্র পালের কথা শুনেই বলবীর সিংহ দেরি না করে সোনেপতে গিয়ে মাওলানা কালিম সিদ্দিকির কাছে মুসলিম ধর্মে দীক্ষা নেন। মুহাম্মদ আমির নাম ধারণ করেন। লম্বা দাড়ি রেখে দেন। নিয়মিত ভোরে ফজরের আজান দেন। সব সময় আল্লাহর জিকির-আজকার করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত