ব্রিকসকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:২৪
ব্রিকস অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোকে ফের হুঁশিয়ার করেছন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন ডলারের বিকল্প হিসেবে নতুন মুদ্রা চালু করলে সদস্য দেশগুলোর ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, আমরা এই দেশগুলোর কাছ থেকে এমন একটি প্রতিশ্রুতি চাইব যে তারা ব্রিকস মুদ্রা তৈরি করবে না এবং ডলারের বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো মুদ্রাকে সমর্থন করবে না। অন্যথায় তারা ১০০ শতাংশ শুল্কের সম্মুখীন হবে এবং মার্কিন অর্থনীতিতে বিক্রি করতে তারা ভুলে যাবে।
ট্রাম্প আরও লেখেন, ব্রিকস দেশগুলো যখন ডলার থেকে সরে যেতে চায়, আমরা চুপচাপ বসে থাকতে পারি না। তারা অন্য কোনো দেশের কাছে সাহায্য চাইতে যেতে পারে, কিন্তু ব্রিকস কখনও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারকে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, এই শেষ সময় যে আমরা এই বিষয়টি উপেক্ষা করব। যেকোনো দেশ যদি এমন পদক্ষেপ নেয়, তাদের উচিত আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করা।
গত নভেম্বরও ট্রাম্প এই ধরনের একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন। সেই সময় রাশিয়া বলেছিল যে মার্কিন ডলার ব্যবহার করতে বাধ্য করার যেকোনো প্রচেষ্টা উল্টো ফল দেবে।
ব্রিকস জোট ২০০৬ সালে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত এবং চীন নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০১১ সালে এতে দক্ষিণ আফ্রিকা যোগদান করে। এছাড়া ২০২৪ সালে মিশর, ইরান, আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া এবং ইথিওপিয়া এই জোটে যোগ দিয়েছে।
ব্রিকস জোটের কোনো সাধারণ মুদ্রা নেই। এর মধ্যে জোটটির সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই বাণিজ্যে ডলারের আধিপত্য কমিয়ে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ইউক্রেইনে রাশিয়ার সাঁড়াশি আক্রমণের পর মস্কোর ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞায় এই তৎপরতা আরও জোরদার হয়। তারা এখন পর্যন্ত কোনো কমন মুদ্রা না বেছে নিলেও সদস্যদের মধ্যে নিজ নিজ মুদ্রায় বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এত কিছুর পরও মার্কিন ডলার এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী রিজার্ভ মুদ্রা। বিশ্বজুড়ে এর প্রভাব এখনো প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অনেক অনেক বেশি বলে গত বছর আটলান্টিক কাউন্সিলের জিওইকোনমিক্সের এক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে।
ট্রাম্পের হুমকিই বলছে, তিনি এ আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে চান। এজন্য তিনি যে অস্ত্র হিসেবে শুল্ককেই ব্যবহার করতে চাইছেন, তাও অভাবিত নয়। তবে তার এই অস্ত্র শেষ পর্যন্ত কতটা কাজে দেবে তা নিয়ে অর্থনীতিবিদরা বেশ সন্দিহান। শুল্ক আরোপের ফলে আমেরিকান ভোক্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে যেসব শিল্প আমদানি করা কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল তাদের খরচ বেড়ে যেতে পারে, শঙ্কা তাদের।
গত বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেন বাড়ানো এবং স্থানীয় মুদ্রাকে শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা হয়। সম্মেলনে ‘ব্রিকস ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ইনিশিয়েটিভ’ অনুযায়ী সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ এবং স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেনের সুবিধা নিশ্চিত করা নিয়ে একটি যৌথ ঘোষণা গৃহীত হয়।
বাংলাদেশ জার্নাল/এফএম