বছরের শেষে হতে পারে নির্বাচন
মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ল ৬ মাস
এএফপি
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:২৬
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের চার বছর পূর্তিকে সামনে রেখে মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বেড়েছে।
আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি
মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা শুক্রবার এই উদ্যোগ নিয়েছে। সামরিক জান্তা ও সেনাবাহিনীর প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সামরিক কাউন্সিল সর্বসম্মতিক্রমে মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে।
সামরিক জান্তার তথ্য দপ্তর আরও জানিয়েছে, দেশটির ২০০৮ সালে রচিত সংবিধানের ৪২৫ ধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের সংবিধান মতে, জরুরি অবস্থা চালু থাকাকালীন নির্বাচন আয়োজন করা যায় না।
এর আগে সামরিক জান্তা ২০২৫ সালে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিলেও এই সিদ্ধান্তে সেই উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
মিন অং হ্লাইং কাউন্সিলকে বলেন, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার ও নির্বাচন আয়োজনের আগে 'শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রয়োজন।'
জরুরি অবস্থার মেয়াদ বেড়ে যাওয়ায় বছরের দ্বিতীয়ার্ধের আগে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। তবে প্রস্তুতিপর্ব পেরিয়ে ভোটের দিনটি আসতে বছরের শেষ নাগাদ লেগে যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মত দিয়েছেন।
সামরিক অভ্যুত্থানের চার বছর
২০২০ সালে ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সুচির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে কারচুপির অভিযোগে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী। ওই নির্বাচনে সুচির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছিল।
জান্তার ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে মিয়ানমারের ১০ বছরের 'পরীক্ষামূলক' হিসেবে বিবেচিত গণতন্ত্রের অবসান ঘটে।
ক্ষমতা দখলের পর বেশ কয়েকবার জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে সামরিক বাহিনী।
সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে তীব্র হচ্ছে লড়াই
অপরদিকে, সুচির সমর্থক ও দেশের অন্যান্য ভিন্নমতাবলম্বীরা একজোট হয়ে জান্তার বিরুদ্ধে সামরিক সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আরাকান আর্মি ও পিপলস ডিফেন্স ফোর্সসহ অন্যান্য সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর তুমুল লড়াইয়ের মুখে হিমশিম খাচ্ছে জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সামরিক জান্তা। রাখাইন রাজ্যের দখল এখন কার্যত আরাকান আর্মির হাতে।
দেশের অন্যান্য অংশেও ভূখণ্ডের দখল হারিয়েছে জান্তা। বিদ্রোহ দমন করতে চীনের শরণাপন্ন হয়েও বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি হ্লাইং।
জাতিসংঘের হুশিয়ারি
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের তদন্তকারীরা হুশিয়ার দেন, গত চার বছরে সামরিক জান্তার নেতৃত্বে মিয়ানমারে গুরুতর আকারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। তারা আশঙ্কা করেন, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা না হলে এ ধরনের সহিংসতা আরও বাড়বে।
জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক নিরপেক্ষ তদন্ত দলের প্রধান নিকোলাস কৌমিজিয়ান জানান, 'দায়মুক্তির কারণে মিয়ানমারের অপরাধীরা আরও সহিংসতায় জড়ানোর সাহস পাচ্ছেন।'
তিনি আরও জানান, সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই মানবিক সংকটে আছে মিয়ানমার।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনবি