ক্ষমতায় এসেই নেতানিয়াহুকে আমন্ত্রণ জানালেন ট্রাম্প
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:২৮
ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ট্রাম্প প্রথম বিদেশি রাষ্ট্রনেতা হিসেবে তাকে হোয়াইট হাউস সফরের আমন্ত্রণ জানালেন।
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের অভিযোগে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। পরোয়ানার মধ্যেই তাকে হোয়াইট হাউসে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে ট্রাম্প তার মিত্র দেশ ইসরায়েলের প্রতি বড় ধরনের সমর্থন ও সহানুভূতির কথাই ব্যক্ত করলেন। সম্প্রতি এক চিঠিতে নেতানিয়াহুকে হোয়াইট হাউস সফরের ওই আমন্ত্রণ জানান তিনি।
দ্য হেগে অবস্থিত আইসিসি গত বছরের ২১ নভেম্বর এক সিদ্ধান্তে জানান, ইসরায়েলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা এবং এর জের ধরে গাজায় দেশটির গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরুর ঘটনায় নেতানিয়াহু, গ্যালান্ট (নেতানিয়াহুর সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী) ও হামাসের নেতা মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
তবে মোহাম্মদ দেইফকে গত জুলাইয়ে হত্যা করার দাবি করেছে ইসরায়েল। এ অবস্থায় তিনি আদৌ বেঁচে আছেন কি না, সেটি স্পষ্ট নয়। যা–ই হোক, ওই তিনজন এখন থেকে আন্তর্জাতিকভাবে তালিকাভুক্ত গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি বলে গণ্য হবেন ও তাদের গ্রেপ্তার করতে আইসিসিভুক্ত দেশগুলোর আইনি বাধ্যবাধকতা থাকবে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা আইসিসির এ পদক্ষেপকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।
আইসিসি তার সিদ্ধান্তে জানিয়েছেন, অন্তত ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ২০ মে পর্যন্ত মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন তাঁরা। এ অভিযোগের সঙ্গে গাজার বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে ক্ষুধাকে ব্যবহার করা ও স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট স্থাপনাকে ইচ্ছাকৃতভাবে নিশানা বানানোর বিষয়টিও যুক্ত রয়েছে।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে ছয় সপ্তাহের ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির মধ্যে আইসিসির পরোয়ানাকে পাশ কাটিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু। যুদ্ধবিরতির ফলে গাজায় টানা ১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনের সাময়িক অবসান ঘটেছে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানে গত সোমবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, তিনি চান মিসর গাজার ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিক। অঞ্চলটির বেশির ভাগ মানুষ ইসরায়েলি সামরিক হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন। এর আগেও গাজা খালি করা নিয়ে একই রকমের মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প।
হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় নজিরবিহীন তাণ্ডব শুরু করেছে দেশটি। ইসরায়েলের দাবি, হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। জিম্মি করা হয় ২৫০ জনকে। অন্যদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধে ৪৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে। যদিও ইসরায়েল এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/আরএইচ