ঢাকা, সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

ট্রাম্প ২.০: বিশ্বে এর প্রভাব কেমন হতে পারে

  বিবিসি

প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:৪২

ট্রাম্প ২.০: বিশ্বে এর প্রভাব কেমন হতে পারে
ছবি: বিবিসি

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ আজ। এর মধ্য দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে ফের ‘ট্রাম্প ২.০ যুগের’ সূচনা হচ্ছে। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন করবেন। এদিন নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও শপথ নেবেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ফেরা বৈশ্বিক রাজনীতি ও নীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ অ্যাজেন্ডা আন্তর্জাতিক সম্পর্কে নতুন রূপ দেয়ার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইউক্রেন

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ একদিনেই শেষ করতে পারবেন, তবে তিনি কীভাবে সেটা করবেন, তা বিস্তারিত বলেননি। তিনি ইউক্রেনকে বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দেয়ার সমালোচনা করেছেন। এতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে, তিনি হয়তো ইউক্রেনকে আঞ্চলিক সমঝোতা করতে চাপ দিতে পারেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত বিশেষ দূত, কিথ কেলগ, ১০০ দিনের মধ্যে এ সংকট সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করছেন এবং ইউক্রেনকে শান্তি আলোচনায় অংশ নেয়ার শর্তে সহায়তা দেয়ার কথা বলেছেন।

নেটো

ট্রাম্প নেটো নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত রেখেছেন। তিনি ইউরোপীয় সদস্যদের প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছেন।

যদিও তিনি নেটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের কথা স্পষ্ট করেননি। তবে তিনি ইউরোপে মার্কিন সেনাদের সংখ্যা কমিয়ে নেটোকে দুর্বল করে দিতে পারেন।

মধ্যপ্রাচ্য

মধ্যপ্রাচ্যে, ট্রাম্প ইসরায়েলপন্থী অবস্থান ধরে রাখবেন। তিনি আব্রাহাম অ্যাকর্ডসের ভিত্তিতে সৌদি আরব এবং ইসরায়েলের মধ্যে চুক্তি করার চেষ্টা করতে পারেন।

ইরানের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকতে পারে। তিনি ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এবং সামরিক প্রতিরোধ জারি করতে পারেন। গাজার যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জও তার নেতৃত্বের পরীক্ষা নেবে।

চীন

চীনের প্রতি ট্রাম্পের কঠোর মনোভাব আরও তীব্র হতে পারে। তিনি চীনা পণ্যের উপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন। তার প্রশাসন চীনকে একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখে, বিশেষ করে তাইওয়ান ইস্যুতে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প সামরিক পদক্ষেপের বিরোধিতা করলেও তাইওয়ানের প্রতি চীনের যেকোনো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছেন।

জলবায়ু পরিবর্তন

জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে, ট্রাম্প আবার প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিতে পারেন এবং জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে পারেন। তিনি সবুজ শক্তির জন্য আর্থিক প্রণোদনা কমানো এবং তেল ও গ্যাস ড্রিলিং বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

যা বৈশ্বিক জলবায়ু প্রচেষ্টাকে ধীর করতে পারে, তবুও নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে বিশ্বের ধাবমান প্রবণতা থামবে না।

অভিবাসন

অভিবাসন নিয়ে, ট্রাম্প লাখ লাখ অনথিভুক্ত বা অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের পরিকল্পনা করেছেন। তার পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বিতর্কিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা কঠোর করা।

তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তার এই পরিকল্পনাগুলো আইনি, লজিস্টিক এবং আর্থিক দিক থেকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

গ্রিনল্যান্ড এবং পানামা খাল

ট্রাম্প কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক স্বার্থের কথা উল্লেখ করে গ্রিনল্যান্ড কেনার এবং পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ব্যাপারে তার বিতর্কিত ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছেন।

যদিও এই পদক্ষেপগুলো সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম, তবে এটি বিশ্বব্যাপী মার্কিন আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের আকাঙ্ক্ষার বিষয়টি প্রকাশ করে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত