ঢাকা, রোববার, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর হাতে আটক উত্তর কোরিয়ার আহত দুই সেনা

  আন্তজাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:৪০

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর হাতে আটক উত্তর কোরিয়ার আহত দুই সেনা
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করা উত্তর কোরিয়ার আহত দুই সেনাকে যুদ্ধবন্দী হিসেবে আটক করা হয়েছে বলে স্থানীয় সময় শনিবার (১১ জানুয়ারি) দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ওই দুইজনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তারা কিইভে ইউক্রেইনের সুরক্ষা পরিষেবা (এসবিইউ) গোয়েন্দা সংস্থার হেফাজতে রয়েছেন।

জেলেনস্কি বলেন, উত্তর কোরিয়ানদের আটক করার জন্য তিনি ইউক্রেইনীয় প্যারাট্রুপার এবং স্পেশাল অপারেশন ফোর্সের সৈন্যদের প্রতি 'কৃতজ্ঞ'।

এ কাজ সহজ ছিল না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ না রাখতে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সেনারা সাধারণত আহত উত্তর কোরিয়ানদের মেরে ফেলে।

ইউক্রেইনের গোয়েন্দা সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, ৯ জানুয়ারি ওই বন্দিদের আটক করা হয়। এর পরপরই 'জেনিভা কনভেনশন’ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় এবং কিইভে নিয়ে যাওয়া হয়। আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী তাদের যথাযথ অবস্থায় রাখা হয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থাটি বলছে, ওই বন্দিরা ইউক্রেইনীয়, ইংরেজি বা রুশ ভাষায় কথা বলতে পারে না। তাই দক্ষিণ কোরিয়ার এনআইএসের (ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস) সহযোগিতায় কোরীয় দোভাষীর মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।

টেলিগ্রাম ও এক্স-এ পোস্ট করা বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেছেন, ওই সেনাদের সঙ্গে এসবিইউ তদন্তকারীদের কথা হয়েছে।

আটক কোরিয়ানদের সঙ্গে সাংবাদিকদের কথা বলার সুযোগ দিতে এসবিইউকে নির্দেশ দেয়ার কথাও বলেছেন ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, যা ঘটছে, সে বিষয়ে সত্য জানা দরকার বিশ্বের।

ইউক্রেইনের গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, বন্দিদের ধরার সময় এক সেনার কাছে তুভা প্রজাতন্ত্রে নিবন্ধিত এক ব্যক্তির নামে রাশিয়ার সামরিক পরিচয়পত্র ছিল। অন্যজনের কাছে কোনো কাগজপত্র ছিল না।

আইডি কার্ডধারী ওই সেনা জিজ্ঞাসাবাদের সময় বলেছেন, ২০২৪ সালের শরতে রাশিয়ায় ওই কার্ড ইস্যু করা হয়েছিল তার জন্য। ওই সময় উত্তর কোরিয়ার কয়েকটি কমব্যাট ইউনিটের এক সপ্তাহের প্রশিক্ষণ ছিল।

গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, ওই বন্দি ২০০৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০২১ সাল থেকে রাইফেলম্যান হিসেবে উত্তর কোরিয়ায় কর্মরত ছিলেন।

এসবিইউর ভাষ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় বন্দি তার চোয়ালে আঘাত লাগার কারণে লিখিতভাবে কিছু উত্তর দিয়েছেন। গোয়েন্দা সংস্থাটি বলেছে, তাদের ধারণা- এই বন্দির জন্ম ১৯৯৯ সালে, যিনি ২০১৬ সাল থেকে স্কাউট স্নাইপার হিসেবে উত্তর কোরিয়ায় কর্মরত ছিলেন।

জেনিভা কনভেনশন অনুযায়ী, বন্দিরা বোঝে এমন ভাষায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ পরিচালিত হওয়া উচিত। সেই সঙ্গে বন্দিদের অবশ্যই উৎসুক জনতা থেকে রক্ষা করতে হবে।

জেলেনস্কির কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “তারা যে উত্তর কোরিয়ার সেনা, এ বিষয়টি আড়ালের চেষ্টা হিসেবে রাশিয়ানরা তাদেরকে তুভা বা মস্কোর নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্য অঞ্চলের জন্মগ্রহণকারী বলে নথিতে দেখিয়েছে। কিন্তু এই ব্যক্তিরা আসলে কোরিয়ান, তারা উত্তর কোরিয়ার।”

বিবিসি লিখেছে, ২০১৪ সালে ইউক্রেইনে অভিযানের সময় রুশ বাহিনীকে ইউনিফর্মে শনাক্ত চিহ্ন না দিয়েই পাঠানো হয়েছিল। যদিও ক্রেমলিন এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, রাশিয়ার পক্ষে ইউক্রেইন যুদ্ধে নেমে উত্তর কোরিয়ার বাহিনী ব্যাপকভাবে হতাহতের মুখে পড়েছে।

ইউক্রেইনের গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ বলেছে, ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের অংশগ্রহণের বিষয়টি প্রতিষ্ঠার জন্য তারা প্রয়োজনীয় তদন্ত পরিচালনা করছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত