ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ আপডেট : ৫ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

তিব্বতে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ১২৬

উদ্ধার অভিযান অব্যাহত

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫১

তিব্বতে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ১২৬
ছবি: সংগৃহীত

চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তিব্বতের হিমালয়ের পাদদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে হয়েছে ১২৬ জন। এছাড়া ১৮৮ জন আহত হয়েছেন। চীনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৪০০ জনের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ৩০ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বুধবার ভূমিকম্প-পরবর্তী দ্বিতীয় দিনে উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবারের ৬.৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পটি সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে তিব্বত অঞ্চলে সবচেয়ে শক্তিশালী। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল তিব্বতের টিংরি এলাকায়, যা পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার উত্তরে। এই ভূমিকম্পে নেপাল, ভুটান ও ভারতের ভবনগুলোতেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।

তিব্বতে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে হিমশীতল তাপমাত্রা। মঙ্গলবার রাতভর তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি ফারেনহাইট (মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যন্ত নেমে যায়। এতে আশ্রয়হীন মানুষদের দুর্দশা আরও তীব্র হয়।

চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভি জানায়, মঙ্গলবার রাতেই ত্রাণ সামগ্রী—তাঁবু, খাদ্য, বিদ্যুৎ উৎপাদন যন্ত্র এবং অন্যান্য সরঞ্জাম দুর্গত এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত সব সড়কও পুনরায় চালু করা হয়েছে।

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ, নেপাল ও উত্তর ভারতের ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে তিব্বত অন্যতম। এখানে ভারতীয় এবং ইউরেশীয় টেকটনিক প্লেটগুলোর সংঘর্ষের ফলে প্রাচীন সমুদ্রতল থেকে গড়ে ওঠা চিংহাই-তিব্বত মালভূমি এখনও সক্রিয়।

চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক কেন্দ্র জানিয়েছে, মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের পর বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ৫০০টির বেশি আফটারশক অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪.৪ মাত্রার পরাঘাত রেকর্ড করা হয়।

গত পাঁচ বছরে ভূমিকম্পকেন্দ্রের ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৩ বা তার বেশি মাত্রার ২৯টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে।

২০০৮ সালে সিচুয়ানের চেংডুতে ৮.০ মাত্রার ভূমিকম্পে ৭০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। এটি ছিল ১৯৭৬ সালের টাংশান ভূমিকম্পের পর সবচেয়ে ভয়াবহ। সে সময় ২ লাখ ৪২ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।

এ ছাড়া, ২০২৩ সালে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৬.২ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে ১৪৯ জন নিহত হন। সেই ভূমিকম্পের তুলনায় মঙ্গলবারের ভূমিকম্পটি তিব্বতে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়।

উদ্ধারকর্মীরা এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। চীনের ভূমিকম্প ব্যুরো জানিয়েছে, এই অঞ্চলে ভূমিকম্পপ্রবণতার কারণে ভবিষ্যতেও এ ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।

তিব্বতকে চীন একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে পরিচালনা করে। তবে তিব্বতিরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অধিকারের ওপর চীনের দমননীতি নিয়ে অভিযোগ করে আসছে। সূত্র: বিবিসি

বাংলাদেশ জার্নাল/এনবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত