ঢাকা, বুধবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

ভারতে দুই শিশুর দেহে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:২০

ভারতে দুই শিশুর দেহে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতে এইচএমপিভি ভাইরাসে ২ শিশু আক্রান্ত হয়েছে। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সোমবার জানিয়েছে, তিন ও আট মাস বয়সী দুই শিশুর দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদিকে, কর্ণাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দীনেশ গুন্ডু রাও সোমবারই জরুরি বৈঠকে বসেছেন। তিনি জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

এনডিটিভি জানিয়েছে, তিন মাস বয়সী শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে দেয়া হয়েছে এবং আট মাস বয়সী শিশুটি কর্ণাটকের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। সে-ও ধীরে ধীরে সুস্থ্য হয়ে উঠছে।

উল্লেখ্য, চীনে প্রথম এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। পরে মালয়েশিয়াতেও বাড়ছে হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস বা এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে জনসাধারণকে মাস্ক ব্যবহার এবং বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

কুয়ালালামপুর থেকে এএফপি সোমবার এ খবর জানিয়েছে।

২০২০ সালের করোনা মহামারির পর এবার চীনে নতুন এক ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ভিড় বাড়ছে। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এই ভাইরাসের প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে।

চীনের পর মালয়েশিয়াতেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সচেতনতা অবলম্বনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইকোনোমিক টাইমস।’

ভাইরাসটিকে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভি নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ভাইরাসের কারণে সাধারণত ঠাণ্ডা জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। শীতের মৌসুমে ভাইরাসটি বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। বর্তমানে চীনের বিভিন্ন প্রদেশে এর দ্রুত বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

চীনের স্বাস্থ্য বিভাগ কিছুদিন আগে ফ্লু-জাতীয় রোগের হার বৃদ্ধি নিয়ে সতর্ক করেছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেয়ায় অনেকেই তথ্য গোপনের আশঙ্কা করছেন।

সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে তা আরও বড় সংকট তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

সিডিসির তথ্যানুসারে, এইচএমপিভি একটি শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস, যা ওপরের এবং নিচের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়। এটি সব বয়সের ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। তবে শিশু, বয়স্ক এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের জন্য ভাইরাসটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।

এইচএমপিভির উপসর্গগুলো ফ্লু এবং অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের মতোই। সাধারণ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে কাশি, জ্বর, নাক বন্ধ হওয়া এবং শ্বাসকষ্ট। গুরুতর ক্ষেত্রে, ভাইরাস ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

চীনের চ্যচিয়াং ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের চিলড্রেনস হাসপাতালের শ্বাসযন্ত্র রোগ বিভাগের প্রধান থাং লানফাং বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এইচএমপিভি সংক্রমণ মৃদু হয়। তবে কিছু শিশুর সংক্রমণের পর নিউমোনিয়া হতে পারে। শিশু, বয়স্ক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন ব্যক্তিদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, দুর্বলতা, কাশি এবং শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্নও হতে হবে।

এই ভাইরাসের জন্য নির্দিষ্ট কোনো অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা বা টিকা নেই বলে উল্লেখ করেছেন চীনের বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) নির্দেশনা অনুযায়ী চীনের বিশেষজ্ঞরাও যত্নের ওপর জোর দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্রাম, হালকা খাবার এবং উপযুক্ত পোশাক পরা।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া, পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখা এবং জনাকীর্ণ স্থান এড়ানোর পরামর্শও দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত