ঢাকা, রোববার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

১৪ বছর পর পরিবারের কাছে ফিরলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৪, ১৯:৩৬

১৪ বছর পর পরিবারের কাছে ফিরলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ
দীর্ঘ ১৪ বছরের আইনি লড়াই শেষে মুক্ত মানুষ হিসেবে অবশেষে পরিবারের কাছে ফিরেছেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ছবি: সংগৃহীত

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ দীর্ঘ ১৪ বছরের আইনি লড়াই শেষে মুক্ত মানুষ হিসেবে অবশেষে পরিবারের কাছে ফিরেছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (২৬ জুন) রাত ৮ টার দিকে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে করে অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় পৌঁছান। এ সময় তার স্ত্রী স্টেলা অ্যাসাঞ্জ, বাবা জন শিপটনসহ পরিবারের সদস্যরা জড়িয়ে ধরেন।

বিবিসির এব প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ (বুধবার) যুক্তরাষ্ট্রের নর্দান মারিয়ানা আইল্যান্ডসের একটি আদালতে হাজির হয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের ষড়যন্ত্রে সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেন ৫২ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জ উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। এরপর শুনানি শেষে অ্যাসাঞ্জকে মুক্ত ঘোষণা করেন আদালত। এর পরে তিনি নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রাওয়া দেন।

অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ২০০৬ সালে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১০ সালে উইকিলিকস থেকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর বহু গোপন নথি প্রকাশ করে দেন তিনি। এতে ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ গোপন সামরিক-কূটনৈতিক নথি প্রকাশ্য হয়ে পড়ে। এরপর সারা বিশ্বে শোরগোল পড়ে যায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের রোষানলে পড়েন অ্যাসাঞ্জ। তার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলার তদন্ত শুরু করে মার্কিন বিচার বিভাগ। তখন লন্ডনে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর দুই বছর আত্মগোপনে ছিলেন। এরপর ২০১২ সালে ইকুয়েডরের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেন। তার পর থেকেই লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে ছিলেন অ্যাসাঞ্জ।

অবশেষে ইকুয়েডরে তার নাগরিকত্বের মেয়াদ শেষ হলে ২০১৯ সালে তাকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাজ্যের কারাগারে ভরে ব্রিটিশ পুলিশ। সেখানে পাঁচ বছরের বেশি সময় অ্যাসাঞ্জ ছিলেন। সেখান থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যার্পণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালাচ্ছিলেন তিনি।

গত সোমবার জানা যায়, মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তির ভিত্তিতে তিনি মুক্তি পেতে যাচ্ছেন। চুক্তিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁসের যে ফৌজদারি অভিযোগ অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, আদালতে তিনি তা স্বীকার করবেন। এরপর চুক্তি অনুযায়ী তিনি আজ যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপটিতে যান। সেখানকার আদালতে তিন ঘণ্টার শুনানিতে অংশ নেন এবং নিজের দোষ স্বীকার করেন অ্যাসাঞ্জ।

তবে কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের মুল ভূখণ্ডে যেতে রাজি না হওয়ায় এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে কাছাকাছি হওয়ায় নর্দার্ন মারিয়ানা আইল্যান্ডসের সাইপান দ্বীপ এলাকার আদালতকে বিচার কাজের জন্য বেছে নেয়া হয়েছিল।

দোষ স্বীকার করলেও অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, তিনি মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর ওপর আস্থা রাখেন। আর সেটা মুক্তমতের চর্চা এবং তার কর্মকাণ্ডকে সুরক্ষা দেয়। শুনানি শেষে আদালতের বাইরে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অ্যাসাঞ্জ। এরপর তিনি একটি সাদা রঙের এসইউভি গাড়িতে ওঠেন।

প্রধান ডিস্ট্রিক্ট জজ রামনা ভি মাংলনা অ্যাসাঞ্জের স্বীকারোক্তি গ্রহণ করেন। এরই মধ্যে অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাজ্যের কারাগারে পাঁচ বছর সাজা ভোগ করে ফেলেছেন, তাই তাকে মুক্ত ঘোষণা করেন আদালত।

অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী ব্যারি পোলাক বলেন, আমার মক্কেলকে গুপ্তচরবৃত্তি আইনে অভিযুক্ত করা মোটেও উচিত হয়নি। তিনি এমন কাজ করেছেন, যা সাংবাদিকেরা নিয়মিতই করেন।’ উইকিলিকসের কাজ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত