কবীর সুমনের জীবনে ফের বসন্তের ছোঁয়া, প্রকাশ্যে আনলেন প্রেমিকাকে
আনন্দবাজার অনলাইন
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:৪৫
![কবীর সুমনের জীবনে ফের বসন্তের ছোঁয়া, প্রকাশ্যে আনলেন প্রেমিকাকে](/assets/news_photos/2025/02/14/image-284414-1739534504bdjournal.jpg)
‘তোমাকে চাই’ থেকে ‘সাড়া দাও’ কিংবা ‘খোদার কসম জান’-এর মতো গানগুলো যেন অগণিত প্রেমিকের নিজের গান। প্রজন্মের পর প্রজন্মকে ভালবাসতে শিখিয়েছে যে গান, তার স্রষ্টা কবীর সুমন।
বরাবরই স্পষ্টবাদী কবিয়াল প্রেমে পড়েছেন একাধিক বার। লুকোননি কখনও। এ বার ৭৫ বছরে ফের প্রেমে পড়লেন কবীর সুমন। প্রেম যখন ‘সিচুয়েশনশিপ’ কিংবা ‘বেঞ্চিং’-এর মতো জেন জ়ি-র গোলকধাঁধায় আটকে, সেই সময় উদ্দাম প্রেমের উদ্যাপনে মাতলেন সুমন।
স্বীকার করলেন, প্রেমে আছেন। প্রেমিকার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তে একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকেন, আদর করেন, চুমু খান। কিন্তু কে তাঁর প্রেমিকা, আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন সুমন।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) প্রেম দিবসে এক তরুণীর সঙ্গে ছবি দিলেন কবীর সুমন। বিবরণীতে লেখা, ‘‘ভ্যালেন্টাইন ২০২৫’’। যখন একটা প্রজন্ম প্রেম, বিয়ে থেকে ভরসা হারাচ্ছে, বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদের হার, সেই সময় সুমনের জীবনে প্রেম এল নিঃশব্দ চরণে।
সুমনের কথায়, ‘এসেছো প্রেম, এসেছো আজ কী মহা সমারোহে’। এক দিকে প্রেমে পড়েছেন যেমন স্বীকার করলেন, অন্য দিকে সলজ্জ হেসে সুমন জানালেন, যাঁর সঙ্গে ছবি দিয়েছেন, তিনি তাঁর ছাত্রী। তবে আজকাল তিনি দেখভাল করেন তাঁর। নাম সৌমী বসুমল্লিক, জানালেন সুমন। পেশায় শিক্ষিকা।
সুমনের কথায়, ‘‘সৌমী আমার প্রাণের বন্ধু, তিনি আমার স্বজন। আমি তো বুড়ো হয়ে গিয়েছি। আমার রাতে একা থাকা বারণ। যে দু’-তিন জন রাতে আমার সঙ্গে বাড়িতে থাকেন, সৌমী তাঁদের মধ্যে একজন। তিনি আমায় ওষুধ দেন। খাওয়াদাওয়ার দেখভাল করেন।’’
যদিও সৌমীকে প্রেমিকা মানতে নারাজ, তবু সৌমীর সমাজমাধ্যমের পাতায় চোখ রাখলেই দেখা যাবে তাঁর প্রায় প্রতিটি ছবির ক্যাপশনে রয়েছে সুমনের গান। যদিও তিনি তাঁর প্রেমিকা কি না, তা বলতে খানিক আড়ষ্ট সুমন।
সৌমীর সঙ্গে যে ছবি সুমন দিয়েছেন, সেটাও খানিক আচমকা তোলা। সুমনের কথায়, ‘‘সৌমীর স্কুলে চাকরি। সকালে উঠে ও বেরিয়ে যাচ্ছে তখন বললাম যে, একটা ছবি তুলি। বারান্দায় গিয়ে তখনই তুললাম।’’
এই প্রেম দিবসে প্রেমিকার সঙ্গে সময় কাটানোর ইচ্ছে রয়েছে, প্রেমিকা যদি আসেন তবেই একান্ত যাপন সম্ভব। সুমনের কথায়, ‘‘প্রেম দিবসের পরিকল্পনা বলতে আমরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকি। আদর করি, চুমু খাই, নিজেকে নিয়ে হাসাহাসি করি। উল্টোপাল্টা কথা হবে, গুনগুন করে গান গাইব।’’ নিজে খেয়াল নিয়ে চর্চা করেন বেশি।
প্রেমের পরশ পেতেই বসন্ত রাগে মজেছেন সুমন। প্রেমিকা বাড়ি এলে তেমনই কোনও গান শোনাবেন। যদিও শেষে সংযোজন, এই বয়সেও প্রেমে আছেন। কারণ হাল ছাড়তে নারাজ সুমন। তাই মৃত্যুর সময় বলতে চান ‘‘জানি না ঈশ্বর, তুমি আছো কি না! আমি যেন ফিরি আবার ভালবাসায়।’’
১৯৬৯ সালে ভয়েস অব আমেরিকায় কাজ করার সময় ওপার বাংলার সোফিয়া নাজমা চৌধুরীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে কবীর সুমনের। পরে কলকাতায় ফিরে তিনি তাকে বিয়ে করেন এবং ধর্মান্তরিত হন। এরপর তারা জার্মানিতে পাড়ি জমান, যেখানে তাদের সম্পর্কে চিড় ধরে।
সোফিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মারিয়া নামে এক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সুমন। কিন্তু সে সম্পর্কও সুখের হয়নি। নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে মারিয়া তার বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন।
এরপর বাংলাদেশের কিংবদন্তি গায়িকা সাবিনা ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন কবীর সুমন। যদিও সেই সংসারও বেশিদিন টেকেনি।
১৯৯২ সালে ‘তোমাকে চাই’ অ্যালবামের মাধ্যমে বাংলা সংগীত জগতে নতুন ধারা প্রবর্তন করেন কবীর সুমন। জীবনমুখী গানের পথিকৃৎ হিসেবে দুই বাংলাতেই তুমুল জনপ্রিয়তা পান।
তবে সময় যতই পাল্টাক, প্রেমের ব্যাকরণ তার জন্য যেন বরাবরই একই থাকে। বয়সকে অগ্রাহ্য করে এবারও ভালোবাসায় মজেছেন কবীর সুমন—তাই তো তার ভাষ্য, ‘আমাদের ভালোবাসা দিবস’।
এরপর থেকেই এই যুগলকে শুভেচ্ছায় ভাসাচ্ছেন অনুরাগীরা। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশি গায়ক আসিফ আকবরও।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনবি