ঢাকা, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১ আপডেট : ৩ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

নাট্যকর্মীদের আল্টিমেটাম, আটক ৪

  বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:০৬  
আপডেট :
 ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:৩০

নাট্যকর্মীদের আল্টিমেটাম, আটক ৪
শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের জরুরি সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজিদ বলেছেন, আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত করে ব্যবস্থা না নেয়া হলে সারাদেশের নাট্যকর্মীদের নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

নাট্যকর্মীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ ও দেশে নিরাপদে শিল্পসংস্কৃতির প্রচারের দাবিতে শনিবার (৯ নভেম্বর) জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাট্যজন ঝুনা চৌধুরী, মাসুম রেজা প্রমুখ।

দেশে নিরাপদে শিল্প সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ না থাকার অভিযোগ এবং নাট্যকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি অনেকগুলো প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন নাট্যকর্মী তথা গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের নেতারা। এসবের জবাব ও সমাধানের জন্য আল্টিমেটামও দেন নাট্যকর্মীরা।

এর আগে গত ১ নভেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চস্থ হচ্ছিল দেশ নাটকের ‘নিত্যপুরাণ’ প্রযোজনাটি। কিন্তু দুর্বৃত্তদের তোপের মুখে পড়ে প্রদর্শনীর মাঝপথেই তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল ৮ নভেম্বর বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির সামনে সমাবেশের ডাক দেয় বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। সমাবেশের শেষের দিকে নাট্যকার ও অভিনেতা মামুনুর রশীদ বলেন, ‘‘সমাজে যে বৈষম্য, সে বৈষম্যেরও একটা গভীরতর বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে এই ‘নিত্যপুরাণ’ নাটক।’’

তার বক্তব্য শেষ না হতেই ‘ধর, ধর’ চিৎকারে চারদিকে শোরগোল শুরু হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ভবনের দিক থেকে ডিম ছুঁড়ে মারা হয়। এরপর সাধারণ জনতা দাবি করা কয়েকজন লোক স্লোগান দিয়ে বলেন, ‘নিত্যপুরাণ’ নাটক প্রদর্শনী আর হতে দেবেন না তারা। এরপর পরিস্থিতি হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছায়। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। শিল্পকলা একাডেমির প্রবেশদ্বারে অবস্থান নেন নাট্যকর্মীররা। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতিবাদে মামুনুর রশীদ বলেন, ‘সভা শেষ করব না। ভেতরে নাটক হবে, বাইরে আমরা পাহারা দেবো।’ এমন বক্তব্যে দুষ্কৃতিকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

পরে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জামিল আহমেদ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করলে যথারীতি নাটকের প্রদর্শনী শুরু হয়। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা ফের সংগঠিত হয়ে নাট্যশালার গেইটের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে মহাপরিচালক ‘দেশ নাটকের’ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে প্রদর্শনী বন্ধ করার সিদ্ধান্ত দেন।

এর প্রেক্ষিতে শনিবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কামাল বায়েজীদ বলেন, যারা হামলা করেছে, এই চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় এনে শিল্পচর্চার সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

এদিকে, আজ (শনিবার) গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন শিল্পকলা একাডেমির মেইন গেইটের সামনে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ১০ থেকে ১৫ জন বিক্ষোভকারী। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ/শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘তুমি কে আমি কে বাংলাদেশ বাংলাদেশ’। তাদের কাছে পরিচয় জানতে চাইলে, তারা ‘সাধারণ জনতা’ বলে নিজেদের পরিচয় দেন। তবে তাদের বেশিরভাগই নিজেদের নাম বলতে রাজি হননি।

তাদের মাঝে রনি নামে একজন নিজেকে ‘জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সমর্থক’ বলে পরিচয় দিয়ে বলেন, এহসান বাবু দেশ নাটকের পৃষ্ঠপোষক, সে আওয়ামী লীগের দালাল। আমাদের উপদেষ্টাদের নিয়ে কটুক্তি করে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছে। আমরা তার নাটক এখানে করতে দেব না। পরে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়ানোদের মধ্য থেকে চারজনকে রমনা থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তাদের মধ্যে রনিও আছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত