শেষ কর্মদিবসে যা বললেন বিদায়ী শিক্ষামন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৭:০০ আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৭:২১
ঠিক ১০ বছর আগে যে দিনে যে সভাকক্ষে বসে প্রথম সভা করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে কাজ শুরু করেছিলেন, সেই সভাকক্ষেই এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে একই দিনে বিদায় নেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
সোমবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিদায়ী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দপ্তরের ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বক্তব্য চুপচাপ বসে শোনেন বিদায়ী শিক্ষামন্ত্রী। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের বক্তব্য শেষে কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ তার শেষ কর্মদিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দফতর, অধিদফতর ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেছেন, ‘আমার যে কৃতিত্ব তা আপনাদের সবার। আমি যা নই, তার চেয়ে বেশি দায়িত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কৃতিত্বের অধিকারী করেছেন। তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন বলেই আমার এই কৃতিত্ব। তবে এই কৃতিত্ব সবার। আমি আমার দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি।’
মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন অগ্রগতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় কর্মকর্তাদের অবদান রাখার আহ্বান জানান নাহিদ। বিদায়ী শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আশা করছি তারা (নতুন মন্ত্রী) ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মন্ত্রণালয়কে আরও উচ্চ স্তরে নিয়ে যাবেন।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছরে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হয়েছে। শিক্ষায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার সম্প্রসারণ করা হয়েছে। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা আধুনিক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি। শিক্ষা পরিবারের সবার সহযোগিতায় আমরা একটি পর্যায়ে পৌঁছেছি। এটা সবার অবদান।’
নাহিদ বলেন, ‘নতুন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি একজন অভিজ্ঞ বিচক্ষণ মানুষ। শিক্ষা পরিবারের যে অগ্রগতি তা তিনি এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আপনারা সবাই তাকে সহযোগিতা করবেন। গত ১০ বছরের সফলতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করবেন।’
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকবেন। যাতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়া সহজ হয়।’
শিক্ষাক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের অবদান তুলে ধরে নাহিদ বলেন, ‘শতভাগ ভর্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে ছেলে ও মেয়েদের ভর্তিতে সমতা এসেছে। এটি বড় অর্জন।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘কেউ আবদার নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী সাহেবের কাছে গেলে শিক্ষামন্ত্রী বলতেন, আপনারা কেউ সচিবের কাছে যাবেন না। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কখনও দ্বিমত হয়নি আমার।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবদান তুলে ধরে মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘বাংলাদেশ চার বিষয়ে শ্রেষ্ঠ হয়েছে। তার মধ্যে দুটিই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। নারীর অবস্থান ও জন্মহারে বাংলাদেশ বিশ্বের সেরা। এছাড়া শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের এনরোলমেন্ট ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা সারা বিশ্বে বাংলাদেশ সেরা। এর জন্য প্রাথমিক শিক্ষারও অবদান রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবিসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দফতর, অধিদফতর, পরিদফতর ও সংস্থার প্রধানরা নুরুল ইসলাম নাহিদকে ফুল দিয়ে সম্মান জানান।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক, এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ) অধ্যাপক শামসুল হুদাসহ বিভিন্ন দফতর পরিদফতরের প্রধান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী কল্যাণ সমিতির নেতারা বিদায়ী বক্তব্য রাখেন।
নতুন সরকারে দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী এবং মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।