উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, সিন্ডিকেট সভা বাতিল
প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২:৪৩ আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২:৪৭
![উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, সিন্ডিকেট সভা বাতিল](/assets/news_photos/2025/02/14/image-284433-1739551651.jpg)
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে উপাচার্য শুচিতা শরমিনের বাসভবনে ঢুকে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় উপাচার্য বাসভবনে ছিলেন। বিকেলে উপাচার্যের বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করলে শিক্ষার্থীরা ওই সভা বাতিল করার দাবি তোলেন। পরে শিক্ষার্থীদের হট্টগোলে সভাটি স্থগিত করে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীদের ওই অংশ আজ দুপুরে উপাচার্য শুচিতা শরমিনের বিরুদ্ধে দুই শিক্ষক প্রতিনিধিকে সিন্ডিকেট থেকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসনের অভিযোগ এনে এবং পাতানো সিন্ডিকেট প্রতিহত করার ডাক দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে তারা প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান নেন। তারা নানা স্লোগান দেন। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ‘শুক্রবার বিকেলে উপাচার্য যে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করেছেন, তাতে কোনো এজেন্ডা নেই। নিজের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য তিনি কোনো গোপনীয়তার সঙ্গে এই সভা আহ্বান করেছেন। আমরা এই সিন্ডিকেট সভা মানি না।’
এ সময় উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কয়েক দফা কথা বলেন সহকারী প্রক্টর মারুফা আক্তার। মারুফা আক্তার শিক্ষার্থীদের জানান, সিন্ডিকেট সভা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অত্যন্ত গোপনীয় সভা। এবারের সভায় নতুন করে তো কোনো এজেন্ডা আসবে না। কোনো ফ্যাসিস্টকে সিন্ডিকেট সদস্য বা অন্য কোনো দায়িত্ব দেয়া হবে না।
এ সময় সহকারী প্রক্টর শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া নিয়ে প্রক্টর কার্যালয়ে আলোচনায় বসার জন্য শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান। শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তারা উপাচার্যের সঙ্গে তাঁর বাসভবনেই কথা বলতে চান।
শিক্ষার্থীরা উপাচার্যেরও পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দেন। পরে উপাচার্যের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন ওই শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম, দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী নাসিম বিল্লাহ, লোকপ্রশাসন বিভাগের মোকাব্বেল শেখ, মাইদুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আশরাফুল মোল্লা, ইতিহাস বিভাগের মোশাররফ হোসেন, আবদুল করিম, মিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
শিক্ষার্থীদের ১০ দফা
শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবিগুলো হলো রেজিস্ট্রারের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ; অভ্যন্তরীণ শিক্ষকদের প্রতিনিধি করে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান; মেয়াদ শেষ না হওয়ায় বাতিল করা দুই শিক্ষককে সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা; ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রোডম্যাপ ঘোষণা; সিন্ডিকেটে ছাত্র প্রতিনিধি রাখার বিধান; সিন্ডিকেটের আলোচ্য বিষয় সাংবাদিকদের কাছে প্রকাশ করা; অবকাঠামো উন্নয়নে নিয়োগ পাওয়ার পর উপাচার্যের পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রমাণ সাপেক্ষে উপস্থাপন করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে চিঠি পাঠানো; স্বৈরাচারের দোসরদের সঙ্গে সখ্যের কারণ স্পষ্ট করে শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরে ক্ষমাপ্রার্থনা এবং গত প্রশাসনে বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরকে নতুন পদ বণ্টন না করা ও শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি