শীতের আমেজে ঢাবিতে বইয়ের মেলা
আরমান হোসেন, ঢাবি
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:১৬
পৌষের শেষবেলায় কনকনে শীত। শীতকে ঘিরে শহরজুড়ে চলছে নানা আয়োজন। এতো আয়োজনের মাঝে ভিন্নতা দেখা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। টিএসসির পায়রা চত্বরে চলছে 'শীতকালীন বইমেলা'।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুটি সংগঠন 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দাওয়া সার্কেল' এবং 'ইসলামিক স্টাডিজ কালচারাল ক্লাব' মেলাটি আয়োজন করেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় এই বইমেলা। উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত চলবে মেলাটি।
শীতকালীন বইমেলায় স্থান পেয়েছে দেশের নতুন পুরাতন অনেক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্টল। সমকালীন প্রকাশন,গার্ডিয়ান পাবলিকেশনস, রুহামা পাবলিকেশন, মাকতাবাতুল হাসান,ইসলামিক ল-রিসার্চ,বি আইআইটি পাবলিকেশন,প্রচ্ছদ প্রকাশন এবং বিন্দু প্রকাশ,সন্দীপন প্রকাশন,রাহনুমা প্রকাশনী,পথিক প্রকাশন,উমেদ প্রকাশ,প্রয়াস প্রকাশন এবং সিয়ান পাবলিকেশনসহ মোট ২৩টি প্রকাশনা রয়েছে এখানে।
শুক্রবার বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, উপন্যাসধর্মী ,গবেষণাধর্মী, রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী, ইতিহাসধর্মী এবং শিশু সাহিত্যসহ নানাপ্রকার বই স্থান পেয়েছে বইমেলায়। তবে স্টল গুলোতে ইসলামি বইয়ের প্রাধান্যই বেশি।
প্রথম দুই দিনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আগত দর্শনার্থী এবং ক্রেতারা ভীড় করছে বইমেলায়।
মানারাত ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, রাজধানী ঢাকায় কত বই মেলায়ই তো হয়। কিন্তু ধর্মীয় মূল্যবোধকে প্রাধান্য দিয়ে বইমেলার আয়োজন সচরাচর চোখে পড়ে না। ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী পাঠকদের জন্য এই আয়োজন খুবই প্রশংসনীয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ইতিবাচক চিন্তা বইয়ের মাধ্যমেই ছড়ায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় ধর্মীয় বইকে প্রাধান্য দিয়ে বই মেলার আয়োজন খুবই প্রশংসনীয়। শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনের মাধ্যমে কিছু ভালো বইয়ের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ লাভ করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন,ফ্যাসিবাদের ১৬ বছর বইমেলা গুলোতে ইসলামি বইগুলো রাখার ব্যাপারে নানা বিধিনিষেধ ছিল। বই পড়ায় অভ্যস্ত শিক্ষার্থীদের অনেকেই এই বইগুলোর সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পায়নি। টিএসসির এই আয়োজন ধর্মীয় বইয়ের সাথে শিক্ষার্থীদের দূরত্ব কমাতে সাহায্য করবে। আয়োজকদেরও প্রত্যাশা এই বইমেলার মধ্য দিয়ে বইয়ের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বৃদ্ধি এবং ধর্মীয় ইতিবাচক বইয়ের সাথে শিক্ষার্থীদের পরিচিত করানো সম্ভব হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দাওয়া সার্কেলের সমন্বয়ক এহসান উদ্দিন জুয়েল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এবং আশেপাশে নানা ধরনের বইমেলা হয়। কিন্তু ইসলামি বইকে প্রাধান্য দিয়ে আয়োজন না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অনেকে ইসলামি বইয়ের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পায় না।
তিনি জানান, ধর্মীয় বইকে শিক্ষার্থীদের সাথে পরিচিত করে দেওয়ার জন্য এই আয়োজন। সুযোগ থাকলে এমন আয়োজন অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, জ্ঞান চর্চা, জ্ঞান সৃষ্টি ও জ্ঞান বিতরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক কাজ। বই পড়ার মাধ্যমেই জ্ঞানের সমৃদ্ধি ঘটে। বইপড়ার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তুলতে বইমেলা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। জ্ঞান চর্চা অব্যাহত রাখার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বইমেলা আয়োজনের মতো উদ্যোগকে সমাজে ছড়িয়ে দিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি