হাসিনার গ্রাফিতির পিলার ‘ঘৃণাস্তম্ভ’র স্বীকৃতি পাচ্ছে
প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কাছে মেট্রোরেলের পিলারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে ছবিটি আন্দোলনের মধ্যে হয়ে উঠেছে ছাত্রদের ‘ঘৃণার প্রতীক’, সেটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে। পিলার দুটি থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি মুছে ফেলা নিয়ে সমালোচনার মুখে এ সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দপ্তরের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রক্টরিয়াল টিমের উপস্থিতিতে গত রাতেই শিক্ষার্থীরা মুছে ফেলা গ্রাফিতি অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে এঁকেছেন। এই স্তম্ভটিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘৃণাস্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃতি দিবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার এই ঘৃণাকে যুগ যুগ ধরে সংরক্ষণের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গ্রহণ করবে।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ অগাস্টে সরকার পতনের পর শেখ হাসিনার ওই ছবি লাল রঙের ছোপ দিয়ে তাতে জুতার মালা পরিয়ে দেয়া হয়। ওই ছবিটি জনতার ক্ষোভ ও ঘৃণার প্রতীক হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার রাত ২টার দিকে কয়েকজন লোক মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ছবি মুছতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেন। পরে তারা জানতে পারেন, প্রক্টরের অনুমতিতেই এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষার্থীরা চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শেখ হাসিনা এবং শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত দুইটি পিলারই ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ হিসেবে ঘোষণা করবে।
জানা গেছে, একটি পিলারে শেখ মুজিবুর রহমানের সম্পূর্ণ ছবি, অন্যটিতে শেখ হাসিনার ছবির মুখের অংশ মুছে ফেলা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা বাধা দেন। পরে পুনরায় সেখানে শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র আঁকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। এরপর তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন।
ছবি মুছে ফেলার কাজটি ‘নিষ্পাপ সিদ্ধান্ত’ মন্তব্য করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ।
ছবি মোছায় দুঃখ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তিতে প্রক্টোরিয়াল কর্তৃপক্ষ বলছে, জুলাই আন্দোলনে এই দুটি গ্রাফিতি বিপ্লব, প্রতিরোধ এবং ফ্যাসিবাদ ধ্বংসের প্রতিনিধিত্ব করে। এই স্মৃতিকে তাজা রাখা এবং প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেয়া আমাদের দায়িত্ব।
ছবি মুছে ফেলার ঘটনা নিয়ে বলা হয়েছে, এটি প্রক্টরিয়াল টিমের অনিচ্ছাকৃত ভুল। এজন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে আমরা আরো সতর্ক থাকার অঙ্গীকার করছি।
এর মধ্যে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদের অনুমতি নিয়ে এই কাজ করা হয়েছে জেনে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি