ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডি এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী নিখোঁজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২২:৪০ আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫২
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে আরও কয়েকটি ব্যাংকের মতো বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের হাতে ইউনিয়ন ব্যাংকের মালিকানা ছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদও ভেঙে দেয়া হয়েছে।
এর মধ্যে জানা গেছে, ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী আজ (বুধবার) ব্যাংকে যাননি। তার বাসায় গিয়েও নানা কারণে আলোচনায় থাকা শীর্ষ এই ব্যাংক নির্বাহীর দেখা পাননি ব্যাংকটির কর্মকর্তারা। ব্যাংকের এমডি নিখোঁজ, বাংলাদেশ ব্যাংককে এ কথা জানিয়েছেন বেসরকারি ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মো. ফরিদউদ্দীন আহমদ।
এমডি মোকাম্মেল হক চৌধুরীর বিষয়টি আলোচনায় আসে আজ (বুধবার) ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের এক সভায়। জানানো হয়, আজকের পূর্বনির্ধারিত সভায় যোগ দেয়ার জন্য এমডিকে পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে আজ (বুধবার) সকালেই এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী নাজনীন আকতারের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিত করা হয়। সেই সঙ্গে তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আগামী ৩০ দিনের জন্য এই স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে। দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে হিসাব স্থগিতের নির্দেশনা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তবে ইউনিয়ন ব্যাংকের অনেক গ্রাহক হিসাব থেকে টাকা তুলতে না পারলেও মোকাম্মেল হক তার বেতনের পুরো টাকা তুলে নিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সভার সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, এমডি নিখোঁজের ঘটনায় ইউনিয়ন ব্যাংককে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি নতুন কাউকে ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে দায়িত্ব দেয়ার জন্যও বলা হয়েছে। আমানতকারীদের স্বার্থে ব্যাংকটির পরিচালকদের সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে সভায় পরিচালকেরা জানান, তারা দায়িত্ব নিলেও ব্যাংকটির প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে এখনো জানতে পারেননি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ব্যাংকটির ঋণের ১৮ হাজার কোটি টাকা বা ৬৪ শতাংশই নিয়েছে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সময় পরিচালকেরা জানান, এমডি আজ অফিসে যাননি। তার বাসায় লোক পাঠিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। বাসাটি তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে।
একটি জাতীয় দৈনিকের তথ্যানুসারে, ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডি মোকাম্মেল হক ২ ও ৩ অক্টোবর ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন। এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর তিনি ২ লাখ টাকা ও ৫ সেপ্টেম্বর ৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। ২৫ সেপ্টেম্বর তার হিসাবে ৫০ লাখ টাকা জমা হয়। একই দিন বেতনের ১০ লাখ ৮ হাজার ২৪২ টাকা জমা হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর ওই হিসাবে জমা হয় আরও ৪২ লাখ টাকা। এরপর তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর ৫০ হাজার টাকা, ২ অক্টোবর ৫০ লাখ টাকা এবং ৩ অক্টোবর ৫০ লাখ ও ৫৩ লাখ টাকা তোলেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ