ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

‘গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছে সর্বত্র’

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:৩৪

‘গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছে সর্বত্র’
ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত বলে একটা কথা আছে না, গত সরকার এই আইয়ামে জাহেলিয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছে সর্বত্র।’

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের টর্চার সেল ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনে যান প্রধান উপদেষ্টা। রাজধানীতে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাবের হেডকোয়ার্টারে অবস্থিত আয়নাঘরসহ তিনটি স্থান পরিদর্শন শেষে সংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ঘুরে ঘুরে সেখানকার বীভৎস দৃশ্যগুলো দেখেন। তার সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন উপদেষ্টা, দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম কর্মী এবং কয়েকজন ভুক্তভোগী।

‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা একটা বীভৎস দৃশ্য। মানুষের মনুষ্যত্ববোধ বলে যে কোনো জিনিস আছে সেটার থেকে বহু দূরে গভীরে নিয়ে গেছে। নৃশংস অবস্থা প্রতিটি জিনিস যে হয়েছে এখানে। যতটা শুনি অবিশ্বাস্য লাগে যে, এটা কি আমাদেরই দেশ, আমাদেরই জগৎ?’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বিনা কারণে জঙ্গি আখ্যায়িত করে মানুষকে তুলে এনে এসব টর্চার সেলে নির্যাতন করা হতো।’ তিনি বলেন, ‘এখন শুনি সারা বাংলাদেশ জুড়েই আরও সাতশ-আটশ আয়নাঘর আছে। আমার ধারণা ছিল শুধু এখানেই আছে। এগুলার সংখ্যাও নিরূপণ করা যায় না, কতটা জানা আছে, কতটা অজানা আছে।’

গুম কমিশনকে এসব আয়নাঘর আবিষ্কারের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত বলে একটা কথা আছে না, গত সরকার এই আইয়ামে জাহেলিয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছে সর্বত্র।’

গুম কমিশনের প্রতিবেদনে এই আয়নাঘরের ডকুমেন্টেশন বাধ্যতামূলক করা হবে বলে জানান অধ্যাপক ইউনূস। একইসাথে যারা এ ধরনের কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিল তাদের বিচার করা হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। এসব তথ্য-প্রমাণ সিলগালা করে রাখা হবে এবং বিচারের জন্য ব্যবহৃত হবে বলেও জানান তিনি।

শেখ হাসিনার আমলে গুমের শিকার জামায়াতে ইসলামীর নেতা গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী এবং দলটির কেন্দ্রীয় নেতা ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্রতিষ্ঠাতা মীর কাশেম আলীর ছেলে আহমেদ বিন কাশেম এ সময় তাদের সাথে ছিলেন।

দুইজন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং নাহিদ ইসলাম নিজেরাও এই আয়নাঘরে বন্দি ছিলেন এবং তারা ওই রুম চিহ্নিত করেছেন বলে জানান।

এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম ও গুম কমিশনের সদস্য নুর খানও সেখানে ছিলেন।

প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ‘বিশেষ’ স্থানে রাখা হতো। এ নিয়ে সুইডেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এসব স্থান ‘আয়নাঘর’ নামে প্রকাশ্যে আসে।

গুম হওয়া ব্যক্তিদের অনেকে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর আয়নাঘর থেকে ফিরে আসেন পরিবারের কাছে। তাদের বয়ানে উঠে এসেছে আয়নাঘরের ভয়াবহতা।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত