ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১ আপডেট : ৮ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন

যুক্তরাজ্যে টিউলিপের অবৈধ অর্থ জব্দে কাজ করছে বাংলাদেশ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৩

যুক্তরাজ্যে টিউলিপের অবৈধ অর্থ জব্দে কাজ করছে বাংলাদেশ
টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্জিত যুক্তরাজ্যে টিউলিপ সিদ্দিকের অবৈধ অর্থ জব্দ করবে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে এ নিয়ে কাজ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। স্থানীয় সময় রোববার ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

টিউলিপের খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। যুক্তরাজ্যের সাবেক দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাত এবং লন্ডনে উপহার পাওয়া দুটি ফ্ল্যাটের তথ্য গোপন করায় মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন।

দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, লন্ডনে টিউলিপের যে কোটি কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে তা বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থে কেনা। বাংলাদেশ এরই মধ্যে টিউলিপসহ শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের দুর্নীতির তদন্তে বহু দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের বর্তমান ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি)। তিনি যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সম্প্রতি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের দুর্নীতির সঙ্গে তার নাম উঠে আসায় মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয় তাকে।

বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির তদন্ত করছে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করছেন দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

প্রায় এক মাস আগে সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করলেও এখনো সম্পত্তিসংক্রান্ত বিষয়সহ বাংলাদেশে তার খালা শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের সঙ্গে যোগসূত্র নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন টিউলিপ সিদ্দিক।

বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ তাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়টি তদন্ত করছে দুদক। লন্ডনে টিউলিপের মালিকানাধীন ৭ লাখ পাউন্ড মূল্যের ফ্ল্যাট সেই দুর্নীতির অর্থে কেনা হয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দুদকের মহাপরিচালক আখতার হোসেন বলেন, দুদক টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার অভিযোগ তদন্ত করছে এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে একটি প্রতিবেদন পাঠাতে বলেছে। আমরা এখনো যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশসহ বিদেশি উৎস থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করছি। প্রাথমিক প্রতিবেদনে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে পাচারকৃত অর্থ কেবল যুক্তরাজ্যেই নয়, বরং বিভিন্ন গন্তব্যে স্থানান্তরিত হয়েছে। আমরা যথাযথ চ্যানেলের মাধ্যমে পারস্পরিক আইনি সহায়তার অনুরোধ পাঠানোর চেষ্টা করছি। তাই, বিদেশি এবং অন্যান্য উৎস থেকে সহায়তা পাওয়ার পর, আমাদের দল সিদ্ধান্ত নেবে যে তারা কীভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।

তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যসহ একাধিক দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। এই বিষয়ে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছে এবং তদন্ত দল আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থ দেশে ফেরত পাঠাতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

এদিকে টিউলিপ সিদ্দিকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এই বিষয়ে কেউ টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং তিনি এসব দাবি নাকচ করেছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত