মিটিং করে হামলার সিদ্ধান্ত নেন নিজাম হাজারীসহ আওয়ামী লীগ নেতারা
প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৮
ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মিটিং করে আওয়ামী লীগ নেতারা হামলার সিদ্ধান্ত নেয় বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তারেক হোসেন (১৯) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত মুস্তারির আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী তারেক হোসনকে শহরের রাজাঝি দীঘিরপাড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ফাজিলপুর ইউনিয়নের উত্তর চাড়ীপুর গ্রামের আলিমুদ্দিন এলাকার মো. নুর হোসেনের ছেলে। স্থানীয় রাজনীতিতে ফাজিলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুল হকের অনুসারী।
গ্রেপ্তারের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পুলিশকে জানান, গত ৪ আগস্ট ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজি ‘মিটিং’ করে ছাত্র আন্দোলনে হামলার সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী তিন-চার শ নেতা-কর্মী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলায় অংশ নেন। আসামি তারেক যে দলে ছিলেন, সে দলে অর্ণব, রাকিবসহ ৯ জন গুলি চালিয়েছিলেন।
এক পর্যায়ে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হন। আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দিতে তিনি একই কথা বলেন। পরে আদালতের নির্দেশে আসামিকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
জানতে চাইলে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, আসামি নিজে হামলায় অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন জবানবন্দিতে। এ ছাড়া অস্ত্র হাতে কারা ছিলেন, কারা গুলি চালিয়েছেন, কার নির্দেশে তারা এসব করেছেন, জবানবন্দিতে সব উঠে এসেছে। জড়িত বাকি ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি চালালে ঘটনাস্থলে এবং পরবর্তী সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ৯ জন নিহত হন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় এ পর্যন্ত ৮টি হত্যা ও ১৩টি হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/আরএইচ