ঢাকা, শনিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ আপডেট : ৬ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন: নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:৫৩

গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন: নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী
ছবি: সংগৃহীত

সবাইকে গণপরিষদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, এ মুহূর্তে আমাদের বহুদলীয় সংবিধান প্রয়োজন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুজিববাদী সংবিধান থেকে বের হতে হবে। গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এবং সম্ভাবনা নির্ধারিত হবে।

বাহাত্তরের সংবিধানকে ‘মুজিববাদী একদলীয় সংবিধান’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই সংবিধান থেকে বের হয়ে বহুদলীয় সংবিধান রচনার দিকে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়ায় কেউ কেউ বাধা সৃষ্টি করতে চায়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো ষড়যন্ত্র করতে চায়, সবাই মাঠে প্রস্তুত থাকবেন। রক্ত আমরা দিয়েছি, আরও দেব রক্ত, বাংলাদেশের যাত্রা অব্যাহত থাকবে ইনশা আল্লাহ।’

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘মার্চ ফর ইউনিটি অ্যান্ড জাস্টিস’ শীর্ষক এক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এ কথা বলেন। ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বর্বরোচিত গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্রসংস্কার ও নাগরিক অধিকারের দাবিতে’ এ কর্মসূচির আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর প্রজ্ঞা, রাজনৈতিক লড়াই ও দীর্ঘ ত্যাগতিতিক্ষাকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু সেই মর্যাদা ও সম্মানের আসনে যদি তারা প্রতিষ্ঠিত হতে চায় এবং গত ৫৩ বছরে দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, আমাদের করের টাকা বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া ও আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে নিয়ে বিদেশি শক্তিগুলোর খেলাধুলা প্রতিহত করতে চাইলে আমাদের একটি বহুদলীয় সংবিধান প্রয়োজন। চব্বিশের বাঘ ও বাঘিনীদের হাত ধরেই সেই নতুন যাত্রা ও সূর্যোদয় হবে।’ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘মুজিববাদী একদলীয় সংবিধান’ থেকে বের হয়ে বহুদলীয় সংবিধান রচনার দিকে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাহাত্তরের সংবিধানের মাধ্যমে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব, এমন মন্তব্য করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমাদের বহুদলীয় সংবিধান লাগবে। গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান রচনার যে সুযোগ এই চব্বিশে এসেছে, সেটি আমাদের কাজে লাগাতে হবে। যারা আমাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে, আমরা তাদের শেখ হাসিনার পরিণতির দিকে লক্ষ রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। এখানে যদি বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়ায় কেউ বাধা সৃষ্টি করতে চায়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো ষড়যন্ত্র করতে চায়, সবাই মাঠে প্রস্তুত থাকবেন। রক্ত আমরা দিয়েছি, আরও দেব রক্ত, বাংলাদেশের যাত্রা অব্যাহত থাকবে ইনশা আল্লাহ।’

সবাইকে গণপরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশের সংকট সমাধানের জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে গণপরিষদ নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। সেই গণপরিষদে আমরা এমন একটি সংবিধান চাই, যে সংবিধানে আমাদের আর কোনো রাষ্ট্রের কাছে গোলামির জিঞ্জির পরিধান করতে হবে না, যে সংবিধানের মাধ্যমে আর কোনো ফ্যাসিস্ট শক্তি বাংলাদেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।’

এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম বলেন, জুলাই বিপ্লবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গর্জনে শেখ হাসিনার মসনদ কেঁপে উঠেছিল। বলা হচ্ছে যে ছাত্ররা আন্দোলন করেছেন, তাঁরা যেন পড়ার টেবিলে ফিরে যান। ছাত্ররা এখনো কেন রাজপথে আছেন, সেই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।

এই প্রশ্নের জবাব দিয়ে তারিকুল বলেন, ‘আমরা যখন এক দফা ঘোষণা করেছিলাম, তখন বলেছিলাম, আমরা শেখ হাসিনার পতনের পাশাপাশি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ চাই, নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চাই। শেখ হাসিনার পতনের পর আমাদের আংশিক বিজয় হয়েছে, চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়নি। নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কায়েম হওয়ার আগপর্যন্ত জুলাই বিপ্লব চলবে। সুতরাং আমাদের রাজপথ ছেড়ে দিলে চলবে না। শেখ হাসিনার প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় কর্তৃত্ববাদ নির্মূল না করা পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।’

এ কর্মসূচিতে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকন্দ ও বুশরা, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাসরিন মেহনাজ, মাশরাফি সরকার, শাহরিয়ার হাসনাত তপুসহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন। জুলাই অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পরও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁদের অনেকে। পাশাপাশি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রত্যয়ও জানান তাঁরা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত