‘উপদেষ্টারা দল গঠন করলে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৪০
উপদেষ্টারা দল গঠন করলে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনগণ প্রশ্ন করতেই পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে বনানী কবরস্থানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ১০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার কবর জিয়ারত শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শুনতে পাচ্ছি সরকারের ভেতর থেকে বিভিন্ন লোক রাজনৈতিক দল গঠন করার চেষ্টা করছে। আর উপদেষ্টারা দল গঠন করলে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনগণ প্রশ্ন করতেই পারে। আমরা দেখছি সরকার গঠনের পরে কোনো কোনো উপদেষ্টা বিএনপির প্রতি অত্যন্ত বিরূপ ধারণা দিয়ে কেউ প্রকাশ্যে কেউ অপ্রকাশে কথা বলছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের জন্য, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ১৬ বছর ধরে এদেশের মানুষ অপেক্ষা করেছে, লড়াই করেছে, রক্ত ঝরিয়েছে, নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে। সেই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে এত দ্বিধা কেন, এত গড়িমসি কেন? এটাই আজকে জনগণের জিজ্ঞাসা, এটা কি কোনো অন্যায়।
রিজভী বলেন, আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সব রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক দল এই সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। মানুষের যে প্রত্যাশা এই সরকার নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। কিন্তু যখন শুনি আগে সংস্কার পরে নির্বাচন তখন মনে হয় শেখ হাসিনার ‘আগে উন্নয়ন পরে নির্বাচন’ কথাটি প্রতিধ্বনি। এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো উপদেষ্টার কাছ থেকে শোভা পায় না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, গড়িমসি কেন? কেন হাসিনার কথার পুনরাবৃত্তি হবে। যে আগে সংস্কার পরে নির্বাচন, হাসিনার মত আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র। আমরা এই কথা শুনতে চাই না। সংস্কার তো হচ্ছে চলমান প্রক্রিয়া। যুগের পর যুগ চলতে পারে সংস্কার। নানা কারণে নতুন নতুন সংস্কার হতে পারে। গণতন্ত্রের যে প্রক্রিয়া, গণতন্ত্রের যে প্রবাহমানতা তাকে আপনি আটকে রাখবেন কেন?
‘বাজারে নিত্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে এর দিকে দৃষ্টি না দেয়া এর জন্য কি সমালোচনা করা যাবে না? সরকারের প্রশাসন যদি নিরপেক্ষভাবে কাজ না করে তার জন্য কি সমালোচনা করা যাবে না? তাহলে কিসের ভয়? যে ১/১১ এর পুনরাবৃত্তি হবে। উপদেষ্টারা কি বিজ্ঞলোকদের রাজনীতি শেখাতে চায়,’ বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের পর প্রশাসনে এখনো ৭০ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগের দোসর। তারাই দেশ চালাচ্ছেন। কিন্তু যারা বঞ্চিত হয়েছিলেন তাদের হয়তো কয়েকজনকে প্রমোশন দেয়া হয়েছে। কিন্তু তাদেরকে কোনো গুরুত্ব দেননি। অধিকাংশ সচিব, অধিকাংশ প্রশাসনের ব্যক্তিরা হলেন ফ্যাসিস্টদের দোসর। তাদেরকে দিয়েই তো দেশ চালাচ্ছেন তাহলে জিনিসপত্রের দাম কমবে কি করে? কি করে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করবেন, কারণ ওরাই তো বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ