প্রেমঘটিত দ্বন্দ্বে ছাত্রাবাসে ঢুকে সমন্বয়কের ওপর হামলা
প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪২
রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ককে লাঠিসোঁটা ও রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মারধরের শিকার ওই সমন্বয়ক।
আহত সমন্বয়কের নাম নুরুল ইসলাম শহীদ। গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নগরের কাদিরগঞ্জ ষষ্ঠিতলা কিউট ছাত্রাবাসে তার ওপর হামলা হয়। হামলায় তিনি বাঁ হাতে ও শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন।
এ বিষয়ে নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, এটা সম্পূর্ণ বাইরের ঘটনা ছিল। দুই ছেলে এক মেয়েকে পছন্দ করেন। এই প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে হৃদয় ও মোস্তাক মিল্টন নামের দুই তরুণের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ ঘটনায় ষষ্ঠিতলা এলাকায় ওই রাতে মিল্টনকে ধরে আনেন হৃদয়। সেখানে হৃদয়ের দুলাভাইও আসেন।
খবর পেয়ে মিল্টনের লোকজন ধাওয়া দিলে হৃদয়ের দুলাভাই ছাত্রাবাসে গিয়ে ওঠেন। মেসে আটকে রাখার খবর পেয়ে হৃদয়ের লোকজন এসে হামলা করেন।
আহত নুরুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায়। এ ছাড়া তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৭ সদস্যের কমিটির একজন। বর্তমানে তিনি রাজশাহী শহরে তার আত্মীয়ের বাসায় আছেন।
এ বিষয়ে নুরুল ইসলাম বলেন, বাঁ হাতে রডের আঘাত লেগেছে। সেখানে ফ্যাকচার না হলেও খুব ব্যথা আছে।
হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রাবাসে নিজ কক্ষে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় অপরিচিত এক ব্যক্তি ছাত্রাবাসে এসে প্রতিটি কক্ষের দরজা ধাক্কা দিয়ে কাউকে খুঁজছিলেন। তিনি দ্রুতই জানতে পারেন যে বাইরে থেকে এক ব্যক্তি এসে ছাত্রাবাসে পালিয়েছেন। তখন তিনিও খুঁজতে শুরু করেন।
একপর্যায়ে শামীম নামের এক ব্যক্তিকে মেসের চারতলায় খুঁজে পান তিনি। এ সময় শামীমের পক্ষের ২০ থেকে ২৫ জন এসে কোনো কথা না বলেই তার ওপর হামলা করেন। তারা ছাত্রাবাসের মালিক রোকন উদ্দীনসহ অন্যদেরও মারতে থাকেন বলেও জানান তিনি।
পরে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মামলা করব। আজকের মধ্যেই এই ঘটনায় মামলা করা হবে।
ওই ছাত্রাবাসের মালিক রোকন উদ্দীন বলেন, একটা প্যানিকের মধ্যে আছি। সবাই তো বাইরে থেকে পড়তে এসেছে। ছাত্রাবাসের ঢুকে যেভাবে হামলা করেছে, এটা আন্দাজও করতে পারিনি। এর আগে হামলার সঙ্গে জড়িতদের কখনো আমি দেখিনি। তাদের ছাত্রও মনে হয়নি। শুনেছি, এরা হেতেম খাঁ এলাকার লোকজন। একটা প্রেমঘটিত সমস্যা থেকে এই হামলা হয়েছে। এই বিষয়ে আমাদের মেসের কেউ আগে থেকে কিছুই জানত না।’
ওসি মেহেদী মাসুদ বলেন, ঘটনার পর পুলিশ ওই ছাত্রাবাসের গিয়েছিল। এখনো কোনো ধরনের অভিযোগ পাননি তারা। এ ব্যাপারে অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এফএম