সিডিএর ১৩ প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত শুরু
প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:১০
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অধীনে ১৩ প্রকল্পে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা তা তদন্তে কাজ শুরু করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি। যে ১৩টি প্রকল্পের বিষয়ে তদন্ত কমিটি কাজ করবে সেগুলোর মোট ব্যয় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে ছয়টি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। সাতটির কাজ চলমান।
কমিটির সদস্যরা শনিবার সিডিএর সম্মেলন কক্ষে প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন তারা।
গত ১১ ডিসেম্বর গঠিত তদন্ত কমিটিতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. কামাল উদ্দিনকে আহ্বায়ক ও সিডিএর সচিব রবীন্দ্র চাকমাকে সদস্য সচিব করা হয়।
সিডিএ সূত্র জানায়, শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ১৩টি প্রকল্পের পরিচালকদের সঙ্গে প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন কমিটির প্রধান মো. কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
এ সময় প্রকল্পগুলোর কী কী কাজ হয়েছে এবং কী কী কাজ হয়নি, কেন হয়নি তা জানাতে বলেন কমিটির সদস্যরা। এ ছাড়া প্রকল্প নেওয়ার কারণ, কার বা কাদের চাপে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, কীভাবে ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়- এসব বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান কমিটির সদস্যরা।
গত ৩১ ডিসেম্বর ও ৫ জানুয়ারি কমিটির সদস্য সচিব রবীন্দ্র চাকমা স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি চিঠিতে ১৩ প্রকল্পের পরিচালকদের কাছ থেকে প্রকল্পগুলোর ২১টি তথ্য চাওয়া হয়।
এরমধ্যে রয়েছে প্রকল্পগুলোর ফিজিবিলিটি রিপোর্ট, প্রকল্পের ফিজিবিলিটি রিপোর্টের টর (টার্মস অব রেফারেন্স), ইআইএ রিপোর্ট, বাস্তবায়ন মনিটরিং মূল্যায়ন বিভাগের প্রতিবেদন, টেন্ডার ডকুমেন্টস, ঠিকাদার নির্বাচন প্রক্রিয়ার ডকুমেন্টস এবং পিইসি ফর একনেক।
এছাড়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নাম ও পূর্ণ ঠিকানা, প্রকল্পের ডিপিপি ও সর্বশেষ আরডিপিপি, প্রকল্পের ক্রয় পরিকল্পনা মোতাবেক ক্রয় সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি, প্রকল্পের ক্রয় করা মালামাল বুঝে নেওয়ার কাগজপত্রাদি, প্রকল্পের ড্রইং ও ডিজাইন, প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ও সংশোধিত ব্যয়, প্রকল্পের কনসালটেন্ট রিপোর্ট, প্রকল্পের চুক্তিপত্র, প্রকল্পের পিইসি সভার প্রতিবেদন, প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভার কার্যবিবরণী, প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দের তালিকা (২০০৯ সাল থেকে), চলমান প্রকল্পের সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা, প্রকল্পের ভৌত ও আর্থিক অগ্রগতি প্রতিবেদন।
যেসব প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্ত হচ্ছে সেগুলো হলো- এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার, মুরাদপুর ফ্লাইওভার, কদমতলী ফ্লাইওভার, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প, কালুরঘাট-চাক্তাই রিং রোড প্রকল্প, বাকলিয়া এক্সেস রোড, চিটাগাং সিটি আউটার রিং রোড, সিডিএ স্কয়ার, কল্পতরু প্রকল্প, সল্টগোলা ডরমেটরি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাস্টার প্ল্যান ও বায়েজিদ লিংক রোড প্রকল্প।
প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় ২০ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। এরমধ্যে ছয়টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। সাতটি প্রকল্পের কাজ চলমান আছে।
প্রকল্পগুলো সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালামের আমলে নেওয়া। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত একদশক দায়িত্ব পালন করেছেন।
তদন্ত কার্যক্রমে কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা শাখার উপসচিব-২ মো. নাজমুল আলম, সিডিএর বোর্ড সদস্য স্থপতি সৈয়দা জেরিনা হোসাইন ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ কুদরত আলী।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি