ঢাকা, বুধবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

ফেলানী হত্যার ১৪ বছর, বিচার দেখতে চান বাবা-মা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৩  
আপডেট :
 ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৮

ফেলানী হত্যার ১৪ বছর, বিচার দেখতে চান বাবা-মা
কিশোরী ফেলানী | সংগৃহীত ছবি

সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার ১৪ বছর আজ (৭ জানুয়ারি)। ২০১১ সালের এই দিনে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয় এই কিশোরী। দীর্ঘ সাড়ে ৪ ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলে থাকে তার লাশ। দেশ-বিদেশে আলোচিত এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারিক কাজ ভারতের উচ্চ আদালতে ঝুলে থাকায় হতাশ পরিবার। বিচারিক কাজ বিলম্বিত হলেও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সীমান্ত হত্যা বন্ধের প্রত্যাশা বিশিষ্টজনের।

কাঁটাতারে নির্মমভাবে বিএসএফ’র গুলিতে হত্যার শিকার মেয়ে ফেলানীর স্মৃতি ও কবরকে অবলম্বন করে বেঁচে আছেন মা-বাবা। চেয়ে আছেন ভারতের উচ্চ আদালতে ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায়।

জানা গেছে, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বাবার সাথে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয় বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুন। দীর্ঘ সময় কাঁটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানীর লাশের ছবি দেশে বিদেশে সমালোচনার ঝড় তোলে।

সমালোচনার মুখে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারের বিএসএফ’র বিশেষ আদালতে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হলে দু’দফায় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত।

এরপর ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই ভারতীয় মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) এর মাধ্যমে ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ভারতের উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করেন। পিটিশনের ভিত্তিতে কয়েক দফায় শুনানির দিন পিছালেও এখনও আদালতেই ঝুলে আছে পিটিশনটি। জীবদ্দশায় মেয়ে হত্যার বিচার দেখে যেতে চান বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরা।

ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম বলেন, ফেলানী হত্যার ১৪ বছর হয়ে গেল এখন পর্যন্ত বিচার পাই নাই। ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টে বিচারটা নিয়ে গেলাম, কয়েকবার শুনানির তারিখ দিলেও তা পিছিয়ে গেছে। কয়েকদিন আগে শুনলাম শুনানি হবে। তবে কবে হবে এর কোনো তারিখ পাইনি। আমি মনে করি আওয়ামী লীগ সরকারের কারণে ফেলানী হত্যার বিচার আটকে আছে। আমি আমার মেয়ে ফেলানী হত্যাকারীর বিচার মরার আগে দেখে যেতে চাই।

একই কথা বলেন, ফেলানীর মা জাহানারা বেগম। তিনি বলেন, অনেকবার মেয়ে হত্যার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। শেখ হাসিনা সরকার ভারতের বিপক্ষে লড়তে চেষ্টা করেননি। বর্তমান ইউনূস সরকারের কাছে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে মেয়ে হত্যার বিচার প্রার্থনা করেন তিনি। স্থানীয়দের দাবি ফেলানী হত্যার বিচার হলে কমতো শীমান্ত হত্যা। তাই দ্রুত এই বিচারটা করা দরকার।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরাম কুড়িগ্রাম শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম বলেন, ভারতের সুপ্রিমকোর্টে দাখিল করা রিট পিটিশনটির শুনানি এখনও হয়নি। অভিযুক্তকে সাঁজার মাধ্যমে পিটিশনটি নিস্পত্তি করা হলে সীমান্ত হত্যা কমে আশার কথা জানায় এই আইনজীবী।

জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলনিটারী গ্রামের নুর ইসলাম ও জাহানারা দম্পতির ৮ সন্তানের মধ্যে সবার বড় ফেলানী। পরিবারের অভাব অনটন দূর করতে কাজের সন্ধানে স্বপরিবারে ভারতে চলে যান তারা। পরে মেয়েকে বিয়ে দিতে দাদালের মাধ্যমে দেশে ফেরার সময় এ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় ফেলানী।

বাংলাদেশ জার্নাল/এফএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত