বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমে ১ দশমিক ৮১ শতাংশে নামল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৩৯
কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া ক্ষমতার পালাবদলে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্থবিরতার চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি প্রায় তলানিতে নেমেছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৮১ শতাংশ; যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই হার ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ ছিল।
সোমবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, অস্থিরতার তিন মাসে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হয় মাত্র ২ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৮ দশমিক ২২ শতাংশ।
জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে কৃষি ও সেবা খাতের প্রবৃদ্ধিও কমেছে। কৃষিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে দশমিক ১৬ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর সেবা খাতে এবার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ, যা আগের বছর ৫ দশমিক ০৭ শতাংশ ছিল।
ক্ষমতার পালাবদলে শিল্পে নৈরাজ্য, অস্থিরতা আর উৎপাদনে স্থবিরতার কারণে এবার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কঠিন হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক।
চলমান পরিস্থিতিকে ‘অনিশ্চিত’ বর্ণনা করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মধ্যবর্তী হিসাবে ৪ শতাংশে নেমে আসার পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক। এর আগে সংস্থাটি ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছিল।
অন্যদিকে এডিবি এপ্রিলে বলেছিল, চলতি অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। তবে সেপ্টেম্বরে তারা তা ৫ দশমিক ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।
বিবিএসের তথ্য অনুসারে, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে দেশের ভেতরে স্থিরমূল্যে ৮ লাখ ৪ হাজার ৯৪২ কোটি টাকার মূল্য সংযোজন হয়, যা গত ৪ প্রান্তিকের মধ্যে সর্বনিম্ন। আর ১১টি উপখাতের মধ্যে খনিজ ও পাথর উত্তোলন খাতে সবচেয়ে বেশি ১২ দশমিক ৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
আর সবচেয়ে বেশি ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে আর্থিক ও বিমা খাতে।
জুলাই-আগস্টে চাকরিতে কোটাবিরোধী ও পরবর্তী সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের লক্ষ্যে যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি কমে যায়। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধ মামলা ও সম্পদ জব্দের মতো পদক্ষেপের ফলে শিল্পে উৎপাদন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) গত মাসে বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেশ শ্লথ হয়ে পড়েছে। এর ফলে চলতি অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসতে পারে। যদিও পরের অর্থাৎ ২০২৫–২৬ অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হবে পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি