ছাড়পোকা মারতে গ্যাস ট্যাবলেট, কামরাঙ্গীরচরে দুজনের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৪৫
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের এক কারখানায় ছাড়পোকা মারার জন্য ‘ওষুধ’ দেওয়ার পর সেখান থেকে দুই কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে তারা কারখানার একটি ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। শনিবার দুপুরে তাদের মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দুজনের মধ্যে মো. মোহনের বয়স ১২ বছর আর আবু বক্কর সিদ্দিক নাঈমের বয়স ২১ বছর। তারা দুজনেই রেক্সিনের হাতব্যাগ তৈরির ওই কারখানায় কাজ করতেন।
কামরাঙ্গীচর থানার এসআই মো. মুসা জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে কামরাঙ্গীচর কয়লাঘাট এলাকার শহিদুল্লাহর বাড়ি সাধন ভিলার নিচ তলা কক্ষ থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে শনিবার মধ্যরাতে তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
এসআই মুসা বলেন, গত ৩ জানুয়ারি রাতে ওই কারখানায় ছাড়পোকা মারার জন্য ঘরের ভেতর গ্যাস ট্যাবলেট (এলুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট) দেওয়া হয়। পরে রাতে রুটি খেয়ে দরজা জানালা বন্ধ করে কারখানার দুই শ্রমিক ওই ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরদিন দুপুর ১টার দিকে নাঈমের আত্মীয় রিয়াজ তাকে ডাকাডাকি করে সাড়াশব্দ না পেয়ে অন্যদের সহযোগিতায় দরজা ভেঙে ঢুকে তোশকের ওপর দুজনের নিথর দেহ পান।
এসআই মুসা বলেন, “ছাড়পোকা তাড়ানোর ওষুধের গ্যাসে না অন্য কোনো কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে।”
নাঈম নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুরের ওজিউল্লাহর ছেলে। আর মোহন একই এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
এর আগে ২০২৩ সালের ৪ জুন রাজধানীর বসুন্ধরা আাবাসিক এলাকার এক ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাটে পোকামাকড় মারার জন্য গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগ করা হলে ওই ব্যবসায়ীর ৯ ও ১৫ বছর বয়সী দুই সন্তানের মৃত্যু হয়।
তখন পুলিশ জানায়, গৃহকর্তা বাসার পোকামাকড় মারার জন্য ‘ডিসিএস অরগানাইজেশন লিমিটেড' নামে একটি পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ওই কোম্পানির কর্মীরা এলুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট (গ্যাস ট্যাবলেট) ব্যবহার করেছিলেন, যেটা থেকে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। সেই গ্যাসের বিষক্রিয়াতেই দুই শিশুর মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশের কৃষি গুদামে পোকামাকড় ও ইদুর নিধনে এলুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেটের ব্যবহার রয়েছে। দামে সস্তা এই ট্যাবলেট বসতবাড়িতে ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনবি