ঢাকা, রোববার, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ আপডেট : ৪ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

বিসিবি সভাপতির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিবের বিরুদ্ধে

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৪৫

বিসিবি সভাপতির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিবের বিরুদ্ধে
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার প্রেস সচিব মাহফুজুল আলমের বিরুদ্ধে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাহফুজুল।

গত ৩০ ডিসেম্বর ফরচুন বরিশাল ও দুর্বার রাজশাহীর ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়েছে এবারের বিপিএল। সূত্র জানিয়েছে, বিপিএলের শুরুর দিনের কিছু বিশৃঙ্খলা এবং অব্যবস্থাপনা নিয়ে সেদিন প্রেসিডেন্ট বক্সে ফারুক আহমেদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মাহফুজ এবং তাঁর সঙ্গে থাকা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা।

তাঁরা টিকিট নিয়ে বিশৃঙ্খলা, গ্যালারিতে আবু সাঈদ কর্নার ও দর্শকদের বিনা মূল্য পানি পানের জন্য মুগ্ধ কর্নারের প্রস্তুতিতে দেরি এবং জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে আহত ১০০ জনের সৌজন্য টিকিট পেতে দেরি হওয়া নিয়ে বোর্ড সভাপতির কাছে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিসিবি সভাপতি নিজেও এসব অব্যবস্থাপনা নিয়ে বিরক্ত ছিলেন। তবু কথোপকথনের একপর্যায়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিব মাহফুজ উত্তেজিত হয়ে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক, সাবেক প্রধান নির্বাচক ও বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। ফারুককে তিনি এমনও বলেন, ‘আপনি কীভাবে বিসিবি প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, তা আমাদের জানা আছে।’

কথা–কাটাকাটি বেশি দূর গড়ানোর আগেই উপস্থিত অন্যরা তাঁদের শান্ত করেন। এ সময় সেখানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও ছিলেন বিপিএলের টাইটেল স্পনসর ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় কর্মকতারা, ছিলেন বিসিবির লোকজনও।

ফারুক আহমেদের সঙ্গে অশোভন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিসিবির এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘প্রেস সেক্রেটারির এমন আচরণ বিসিবি সভাপতির জন্য তো বিব্রতকরই, এতে ক্রীড়া উপদেষ্টার ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট বক্সে সবাই প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আসেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে অসদাচরণ মানা যায় না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে মাহফুজ দাবি করেছেন, তিনি বোর্ড সভাপতির সঙ্গে কোনো অশোভন আচরণ করেননি।

গতকাল যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘বিপিএলের এক দিন আগে দুপুর পর্যন্ত মানুষ জানে না, কীভাবে টিকিট কাটবে। খেলা যখন শুরু হলো, তখনো শহীদ আবু সাঈদ স্ট্যান্ডের ব্যানার লাগানো হয়নি। এমনি অনুষ্ঠান শুরু করে দিয়েছে, তখনো পাখি খাঁচার মধ্যে আনা হয়নি—এ রকম অনেক অব্যবস্থাপনা আমাদের চোখে পড়ল। তা ছাড়া টিকিট ইস্যুতে গেট ভাঙা ন্যক্কারজনক ঘটনা। এসব নিয়েই আমাদের মধ্যে কথা হচ্ছিল। এ রকম প্রত্যাশিত ছিল না। সবকিছু আরও ভালো হতে পারত। এসব অব্যস্থাপনার জন্য মানুষের গালাগাল শুনেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টা।’

ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিব হিসেবে বিসিবি সভাপতির কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাওয়াটা তাঁর এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে কি না, এই প্রশ্নে মাহফুজ বলেন, ‘শুধু আমি নই, সেখানে যাঁরা ছিলাম, সবাই এর (বিপিএল আয়োজন) সঙ্গে সম্পৃক্ত। পদ–পদবি কোনো বিষয় নয়। এবারের বিপিএল বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে শুরু করে যতগুলো মিটিং হয়েছে, সেখানে এই মানুষগুলো উপস্থিত ছিলেন।’

বিসিবি সভাপতির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে মাহফুজ বলেন, ‘উত্তপ্ত কিছু হয়নি। স্বাভাবিক কথাবার্তা হয়েছে। দুই পক্ষই আবেগপ্রবণ হয়ে কথা বলেছে। এমন কিছু হয়নি, যেটা অপ্রীতিকর।’

‘আপনি কীভাবে বিসিবি প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, তা আমাদের জানা আছে’—ফারুক আহমেদকে এ রকম কিছু বলেননি বলেও দাবি তাঁর, ‘ওরকম কিছু হয়নি। বিষয়গুলোকে যদি কেউ ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে, তাহলে তা খুবই দুঃখজনক।’

জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট বক্সে দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনা মোবাইলে ভিডিও করেন মাহফুজের সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি। বিসিবির লোকজন তা দেখে ফেলার পর তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে সেটি রিবুট করে আবার তাঁকে ফেরত দেয়া হয়।

ভিডিও করা ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট বক্সে প্রবেশ করেছিলেন নির্ধারিত পাস ছাড়া। শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে বিসিবি তাঁকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করেছে।

সূত্র: প্রথম আলো।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত