টাকা পাচারের পর সেসব স্থানে তারা পালিয়ে গেছেন: জামায়াত আমির
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:২৩ আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:১৬
বাংলাদেশ জামায়াতে আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, পৃথিবীর মানচিত্রে অপার সম্ভাবনাময় ছোট একটি দেশ বাংলাদেশ। এখানে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের ভাই-বোনেরা যুগযুগ ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর ভালোবাসা নিয়ে বসবাস করছি। কিন্তু মাঝে মাঝে কেউ কেউ সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে বাংলাদেশের সম্প্রতি নষ্ট করতে চায়।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বীরগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে বীরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু বলে দেশকে দুই ভাগ করেছে। এখানে স্বাধীনতার পক্ষে ও স্বাধীনতার বিপক্ষে দুটি শক্তিতে ভাগ করেছে। মাইনরিটি ও মেজরিটি বলতে কোন কিছু নেই। বাংলাদেশে যারা জন্মগ্রহণ করেছে তারা সবাই বাংলাদেশি। একটাই তাদের পরিচয় তারা সকলেই বাংলাদেশের।
ডাক্টর শফিকুর রহমান আর বলেন, ইতিহাসে এমন কোন উদাহরণ নেই জাতি বিভক্ত হয়ে সম্মানিত এবং মর্যাদা লাভ করেছে এবং তারা উন্নতির শিখরে উঠেছে। বরং বিভক্ত জাতি বিশৃঙ্খল থাকে। আর যারা বিশৃঙ্খল থাকে তাদের মাথায় অন্য সবাই কাঁঠাল ভেঙে খায়। বাংলাদেশের বিগত ৫৩টি বছরের আমরা এই বিভক্তির কবর রচনা করতে চাই। কোন পক্ষ বিপক্ষ শক্তি এদেশের মানুষ আর মানবে না। ওই বিভক্তি আমাদের সর্বনাশ করেছে। এই সর্বনাশে জাতি আর হাবুডুবু খেতে চায় না। এখন যারা এই বিভক্তিকে জিইয়ে রাখতে চেষ্টা করবে তারা কার্যত জনগণের মুখোমুখি দাঁড়াবে। বাংলাদেশের মানুষ তাদেরকে আর ক্ষমা করবে না। আমাদের এখন প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে দেশ এবং জাতির স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের বিরুদ্ধে দেশের বিরুদ্ধে হাজার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র আমরা ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাত ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবিলা করবো।
তিনি আরও বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছরে ২৬ লাখ কোটি টাকা বাইরে পাচার করা হয়েছে। কারা পাচার করেছে আপনারা তা জানেন। আগে তারা টাকা বাইরে পাঠিয়েছেন। পরে তারা সেই টাকার পিছনে পালিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, দেশের প্রতি যাদের ভালোবাসা আছে, দরদ আছে, তারা কখনো দেশ ছেড়ে পালায় না। আপনারা জানেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ ১১ জন নেতাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খুন করেছে। বিচারিক আদালতের নামে তাদেরকে হত্যা করেছে। ১১জনের একজনও বাংলাদেশ থেকে পালায়নি। পালানোর চেষ্টা করেননি। মীর কাসিম বাইরে ছিলেন তিনিও ফেরত এসেছেন এবং আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতা ও মুক্তি উপহার দিয়েছে। আগে মানুষ ভয়ের সংস্কৃতির মধ্যে ছিলো। মুখ দিয়ে কথা বলতে পারতো না। স্বস্তির সাথে নিজের জীবন নিয়ে চলাফেরা করতে পারতো না । এখন মানুষ স্বস্তির সাথে সব পারে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারতো না। কথা বললেই মানুষের জীবনে বিভীষিকাময় শাস্তি নেমে আসতো। এখন একটা সরকার ক্ষমতায় আছে। মিডিয়ার ভাইয়েরা নির্দিধায় খবর পরিবেশন করতে পারেন।
বীরগঞ্জ উপজেলা জামাতের আমি মোহাম্মদ আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জামাতের কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মমতাজ আলী। বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের জামাতের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি