ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিপিএলের টিকিট না পেয়ে মিরপুর স্টেডিয়াম গেটে হট্টগোল

লাঠিচার্জ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

  ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:০৯  
আপডেট :
 ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:১৯

বিপিএলের টিকিট না পেয়ে মিরপুর স্টেডিয়াম গেটে হট্টগোল
ছবি: সংগৃহীত

মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের এক নম্বর গেট সংলগ্ন টিকেট কাউন্টারের ভেতরে নেই কেউ। কিন্তু কাউন্টারের সামনে দীর্ঘ সারিতে অপেক্ষায় হাজারও মানুষ। অনেকে জানেনই না এই বুথে বিক্রি হবে না কোনো টিকেট! স্টেডিয়ামের মূল ফটকের সামনে তখন উত্তাল পরিস্থিতি। উত্তেজিত দর্শকরা একপর্যায়ে লোহার বিশাল ফটক ভেঙে চেষ্টা করে ভেতরে ঢুকতে। তাদের থামাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে দেখা যায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও।

বিপিএলের একাদশ আসরের উদ্বোধনী ম্যাচের আগে মাঠের বাইরের দৃশ্য এসব। এসবের মধ্যে পড়ে মূল ফটক দিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে পারেনি দুর্বার রাজশাহী দল। বিক্ষুদ্ধ দর্শকদের ক্ষোভের মুখে বাস ঘুরিয়ে ৪ নম্বর মাঠ দিয়ে ঢুকতে হয় দলটিকে। একই দশা হয় খুলনা টাইগার্সের হয়ে অনুশীলনে আসা মেহেদী হাসান মিরাজেরও।

টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিন রোববার সকালেও টিকেট না পাওয়াকে ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ছিল স্টেডিয়ামের আশেপাশে। তখনও পর্যন্ত টিকেট নিয়ে কোনো তথ্যই বিসিবি জানায়নি। পরে খেলা শুরুর ২২ ঘণ্টারও কম সময় থাকতে ছাড়া হয় টিকেট। অনলাইনে বিসিবির নতুন ওয়েবসাইট ও সশরীরে মধুমতি ব্যাংকের নির্ধারিত ৭টি শাখায় বিক্রি করা হয় প্রথম দিনের দুই ম্যাচের টিকেট। বিকেল ৪টায় টিকেট দেওয়া শুরুর কথা থাকলেও প্রায় দুই ঘণ্টা পর টিকেট কাটতে পারেন দর্শকরা।

অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকতে থাকতে রোববার সন্ধ্যায় মধুমতি ব্যাংকের মিরপুর শাখায় ভাংচুর করে টিকেটপ্রত্যাশী দর্শকরা। এছাড়া দিনভর স্টেডিয়ামের বাইরেও দেখা যায় দর্শকদের ভিড়। সেটি চলমান খেলা শুরুর দিনও।

সকাল থেকেই হোম অব ক্রিকেটের মূল ফটক ও এক নম্বর গেট সংলগ্ন বুথে ভিড় জমান দর্শকরা। কিন্তু আগের দিনই বিসিবির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, অনলাইন ও মধুমতি ব্যাংকের নির্ধারিত শাখা ছাড়া অন্য কোথাও টিকেট পাওয়া যাবে না। কিন্তু সেই বার্তাই যেন জানেন না অনেকে।

কাউন্টারের সামনে সকাল ৭টা থেকে অপেক্ষা করতে থাকা রেজাউল সুমন নামের একজন বলেন, 'এই কাউন্টার থেকেই নিয়মিত টিকেট কাটি। আজকেও ভাবলাম এখানে পাব। কিন্তু এখানে কোনো টিকেট নেই।' রেজাউলের মতো আরও অনেকেরই জানা নেই কাউন্টারে বিক্রি হবে না কোনো টিকেট।

এক নম্বর গেটসংলগ্ন ওই কাউন্টারে তবু কিছুটা হলেও শান্তিপূর্ণ অবস্থা দেখা যায়। কিন্তু মূল ফটকের সামনে ততক্ষণে উত্তাল পরিস্থিতি। সকাল থেকেই গেটের বাইরে বিক্ষোভ করতে থাকে উত্তেজিত দর্শকরা। বিপিএলের প্রচারণার জন্য সাজানো ব্যানার, হোর্ডিং, ফেস্টুন ছিঁড়ে ক্ষোভ দেখাতে থাকেন তারা।

একপর্যায়ে লোহার বড় গেট ধরে ঝাঁকাতে থাকেন তারা। তখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে গেট ভেঙে দর্শকদের ভেতরে ঢোকার উপক্রম দেখে আর চুপ থাকেনি তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিসিবির স্বেচ্ছাসেবীদের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় উত্তেজিত দর্শকের জটলা।

তবে সেখানেই থামেনি তারা। দুর্বার রাজশাহীর টিম বাস আসতেই সেদিকে রীতিমতো হামলে পড়ে তারা। তাই মূল ফটক দিয়ে ঢুকতে পারেনি ওই বাস। বিকল্প পথে তাদের মাঠে নেওয়ার ব্যবস্থা করে বিসিবি। পরে আবারও কয়েক দফায় চলতে থাকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। লাঠি চার্জের বিপরীতে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে দেখা যায় বিক্ষুদ্ধ জনতাকে।

এই অবস্থার মধ্যে পরিবার নিয়ে খেলা দেখতে এসে কিছুটা শঙ্কা ভর করে ধানমন্ডির রাজিবুল হকের মনে। আগের দিনই অনলাইনে টিকেট করে রেখেছিলেন তিনি। তবে ব্যাংকের কোনো শাখা থেকে সশরীরে টিকেট সংগ্রহ করতে হবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন না মধ্যবয়সী ওই ব্যক্তি। নিশ্চয়তা পেয়ে মাঠে প্রবেশের লাইনে দাঁড়ান তিনি।

বেলা সাড়ে ১২টার পর দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় সবকটি গেট। অনলাইন টিকেটের প্রিন্ট কপি কিংবা মোবাইলে সফট কপি দেখিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে পেরেছেন দর্শকরা। গেটে সেগুলো স্ক্যান করে তারপর তাদের প্রবেশাধিকার দিয়েছেন দায়িত্বরত ব্যক্তিরা।

তবে মাঠের বাইরে যত মানুষের ভিড় দেখা গেছে, ভেতরে ছিল উল্টো। ফরচুন বরিশাল ও দুর্বার রাজশাহীর ম্যাচের প্রথম বল হওয়ার আগপর্যন্ত খুব একটা পূর্ণ হয়নি গ্যালারি। সূত্র: বিডিনিউজ২৪.কম

বাংলাদেশ জার্নাল/এনবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত