ঢাকা, বুধবার, ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

কড়া নিরাপত্তায় খুলেছে সচিবালয়, প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:৩০  
আপডেট :
 ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:০৫

কড়া নিরাপত্তায় খুলেছে সচিবালয়, প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত
ছবি: সংগৃহীত

ইতিহাসের স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সাত নম্বর ভবনে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের অফিস পুড়ে যাওয়ার পর সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে খুলেছে সচিবালয়।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকে প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়া বিধিনিষেধ মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত দপ্তরগুলো বাদে বাকি সব মন্ত্রণালয় এবং বিভাগে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এতে অতিরিক্ত সচিব থেকে নিচের দিকের কর্মকর্তারা প্রবেশ পথে গাড়ি ছেড়ে দিয়ে পরিচয় পত্র দেখিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছেন। তবে কর্মকর্তাদের ছেড়ে দেওয়া গাড়ির কারণে সচিবালয়ের চারপাশে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আর যারা আগে নিয়ে অফিস বা অন্যান্য কাজ করতেন তারা পার্কিং নিয়ে পড়েছেন বিপদে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সচিবালয়ে উপদেষ্টা সচিব এবং দপ্তর বা সংস্থা প্রধান ছাড়া কারো গাড়ি প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অন্যদের ৫ নম্বর গেট এবং এক ও দুই নম্বর গেটের মাঝখানের দর্শনার্থী অভ্যর্থনা কক্ষে দিয়ে হেঁটে প্রবেশ করতে হচ্ছে। তবে জরুরি দর্শনার্থীদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পৃথক বুথ চালু করা হয়েছে। আর গণমাধ্যম কর্মীরা আপাতত সচিবালয়ের গেটের বাইরে অবস্থান করেই দিনের দায়িত্ব পালন করছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পাঁচ নম্বর গেইটে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যাদের স্মার্টকার্ড আছে, কেবল তারা পাঁচ নম্বর গেইট দিয়ে প্রবেশ করতে পারছেন। দর্শনার্থী বা সাংবাদিকদের এই পথে প্রবেশ করার অনুমতি নেই।

এছাড়া বিদ্যুৎ ভবনের পাশে চার নম্বর গেইটটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। গাড়ি নিয়ে আসা দর্শনার্থীরা আগে তিন নম্বর গেইট দিয়ে প্রবেশ করতেন। এদিন গেইটে গাড়ি ছেড়ে দিয়ে পায়ে হেঁটেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেখা গেল কর্মকর্তাদের।

সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা মঈনুল বলেন, কেবল সচিব ও উপদেষ্টা মহোদয় এবং অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে নিয়োজিত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কোনো কর্মকর্তাকে গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তারা গাড়ি ছেড়ে দিয়ে পাস দেখিয়ে প্রবেশ করছেন পায়ে হেঁটে।

এদিকে, নিয়মিত দায়িত্ব পালন করতে সচিবালয়ে এসে বিপাকে পড়েছেন সাংবাদিকরা। তারা গেইটের বাইরে থেকে কাজ করছেন। তবে সচিবালয়ের দায়িত্বগত সাংবাদিকদের সংগঠন বিএসআরএফ এর সভাপতি ফসিহ উদ্দিন মাহতাব বলেন, পেশাদার ও নিয়মিত সাংবাদিকরা যাতে ভেতরে প্রবেশ করে সংবাদ সংগ্রহ করতে পারেন, সেজন্য আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আশা করছি তারা অল্প সময়ের মধ্যে আমাদেরকে একটা সিদ্ধান্ত জানাবেন।

এর আগে শুক্রবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সচিবালয়ের ‘নিরাপত্তা বৃদ্ধির স্বার্থে’ সব ধরনের অস্থায়ী প্রবেশ পাস বাতিল করা হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রবেশের জন্য ইস্যু করা অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ২টার দিকে সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট সেখানে যায়। পরে প্রায় দশ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়। তবে আগুনে সাত নম্বর ভবনের ৬, ৭, ৮, ৯ এই চারটি তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে অষ্টম ও নবম তলায় ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি, সেখানকার অধিকাংশ নথি পুড়ে গেছে, এই কারণে বৃহস্পতিবার দিনের বেশিরভাগ সময় সচিবালয়ের অধিকাংশ ভবনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সচিবালয়ে গেলেও দপ্তরে ঢুকতে না পেরে বেরিয়ে আসেন। সব মিলিয়ে শেষ কর্ম দিবসে সচিবালয়ের নিয়মিত কর্মকাণ্ড কার্যত বন্ধ ছিল।

দুদিন সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে ৭ নম্বর ভবন ছাড়া বাকি ভবনগুলোর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হওয়ায় সেগুলোতে থাকা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আজ (রোববার) থেকে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালানোর মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে, শনিবার জানানো হয়, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় রেলভবনে; যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণায়ল ক্রীড়া ভবনে।; শ্রম মন্ত্রণালয় শ্রম ভবনে; ডাক ও টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টা তথ্য মন্ত্রণালয়ে এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আগারগাঁওয়ের ডাক ভবনে দাপ্তরিক কাজ করবেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত