জাহাজে ৭ খুন: অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে নৌযান শ্রমিকেরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৭
চাঁদপুরে জাহাজে ৭ খুনের প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে নৌযান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেন তারা। সঙ্গে পণ্যবাহী নৌযান ধর্মঘটও অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের অফিস সচিব আতিকুল ইসলাম টিটুর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে হরিনা ঘাটের কাছে মাঝেরচর এলাকায় এম. ভি. আল-বাখেরা জাহাজে মাস্টারসহ ৭ জন শ্রমিকের খুনের ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন, হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার, মৃত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য সরকারিভাবে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে।
নৌ পথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার পদক্ষেপ না নেয়ায় বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন ঘোষিত ২৬ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে মালবাহী, তেল-গ্যাসবাহী, বালুবাহীসহ সব পণ্যবাহী নৌযানের শ্রমিকরা লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগের বিষয় বিবেচনা করে আপাতত সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে।
এদিকে চাঁদপুরে গ্রেপ্তার আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফানকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়ার পর নানা তথ্য বের করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর নৌ পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহমেদ।
নৌ পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এক বছর আগে আকাশ মন্ডল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ৮ মাস আগে তিনি ওই জাহাজে সুকানির চাকরি নেন খুনের শিকার জাহাজ মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার মাধ্যমে।’
জাহাজ মালিক মাহবুব মোরশেদ বলেন, ‘আমরা ওই জাহাজে গোলাম কিবরিয়া ও ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন মোল্লাকে চাকরি দিয়েছিলাম। বাকিরা সবাই গোলাম কিবরিয়ার মাধ্যমে ওই জাহাজে চাকরি নেয়।’
এই ঘটনার পর চাঁদপুর নৌরুটে সব ধরনের নৌযান নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে স্থানীয় সাধারণ চলাচলকারী লঞ্চযাত্রী ও নৌযান শ্রমিকেরা দাবি করছেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর নৌ পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘এটা ব্যক্তিগত আক্রোশের ঘটনা ছিল। নদীতে কোনো ধরনের নৌযান নিরাপত্তাহীনতায় নেই। এছাড়া আমাদের নৌ পুলিশ ও কোস্টাগার্ড সব সময় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।’
এরআগে চাঁদপুরের মেঘনা নদীর হাইমচরের ঈশানবালার মাঝেরচর সংলগ্নে মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে খুনের ঘটনা ঘটে গত সোমবার। ওইদিন দুপুরে ৯৯৯ এ এমন নৃশংসভাবে খুনের ঘটনার খবরে ঘটনাস্থলে যায় নৌপুলিশ, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ