প্রশাসন ক্যাডারের প্রতিবাদ সভা
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধানের পদত্যাগ দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:০৮ আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৩০
প্রশাসন ক্যাডারের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের প্রতিবাদ সভায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীর পদত্যাগের দাবি উঠেছে।
রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে আজ বুধবার অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রশাসন ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন কামাল এই দাবি তোলেন। সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা তাতে সমর্থন জানান।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীর উদ্দেশ্যে ১৯৮৬ ব্যাচের কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আপনি তো পরীক্ষা দিয়ে পদোন্নতি নেননি। যেহেতু আপনি এ কাজ করেছেন, আপনি অবিলম্বে সংস্কার কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন।
মুয়ীদ চৌধুরীকে পদত্যাগ করে প্রশাসন ক্যাডারে সিনিয়র কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানান তিনি।
গত ১৭ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান মুয়ীদ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদে পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতির সুপারিশ করবেন তারা।
জাকির হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় যারা বাধা হিসেবে কাজ করছেন তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
২৫ শতাংশ কোটায় অন্য ক্যাডারের যেসব কর্মকর্তা উপসচিব পুলে যোগ দিয়েছেন, তাদের এই পুল থেকে ‘পরিষ্কার’ করারও দাবি জানান তিনি।
এর আগে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব সোহেল রানা বলেন, উপসচিব পদে ৫০ শতাংশ হারে পদায়ন বৈষম্যমূলক, অযৌক্তিক ও ষড়যন্ত্রমূলক। রাষ্ট্রকে দুর্বল করার কোনো প্রচেষ্টা চলছে কি না, এটাও আমাদের দেখতে হবে।
প্রশাসন ক্যাডারের চাকরিরত কর্মকর্তাদের পাশাপাশি অবসরে যাওয়া এই ক্যাডারের কর্মকর্তারাও সভায় যোগ দেন। বিভিন্ন জেলার ডিসি ও ইউএনওরা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সভায় যুক্ত হন।
বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এবং বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের যৌথ আয়োজনে এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা রাখার যে সুপারিশ করার কথা বলছে, সেটিকে বৈষম্যমূলক, অযৌক্তিক, ষড়যন্ত্রমূলক বলে মনে করেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
এর আগে গত রোববার তাঁরা সচিবালয়ে বড় জমায়েত দেখিয়েছেন। মূলত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সম্ভাব্য কিছু সুপারিশ সামনে আসার পর থেকে আন্তক্যাডার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। এমন সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে প্রশাসন ক্যাডারের পদোন্নতির কোটা কমে যাবে বলে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এ জন্য তাঁরা সোচ্চার হয়েছেন।
অন্যদিকে পদ ও পদোন্নতির দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার এক ঘণ্টার ‘কলমবিরতি’র মাধ্যমে প্রকাশ্যে আন্দোলনে নেমেছেন ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার মানববন্ধন কর্মসূচি করারও ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনবি