স্টোররুম থেকে বিআরটিএ কর্মচারীর মরদেহ উদ্ধার
স্বজনদের দাবি হত্যা
প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫
গাইবান্ধায় বিআরটিএ অফিসের ভাড়া করা বাসার স্টোর রুম থেকে হৃদয় কুমার (২৪) নামে এক কর্মচারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করলেও স্বজনদের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে পৌরসভার দক্ষিণ ধানঘড়া এলাকার জেলা বিআরটিএর ভাড়া করা আলী ইকবালের বাসার স্টোর রুম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
স্বজন ও স্থানীয়দের অভিযোগ, হৃদয় কুমারের গলা বেল্ট দিয়ে রুমের দরজার হ্যাজবলের সঙ্গে পেঁচানো ছিল। দেখে আত্মহত্যা বলে মনে হলেও হৃদয় আত্মহত্যা করেনি। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার ঘণ্টাখানেক আগে হৃদয়সহ দুই যুবককে মোটরসাইকেলে করে এসে বাসার সামনে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
হৃদয় কুমার সিরাজগঞ্জ জেলার কোশাহাটা গ্রামের অমূল্য কুমারের ছেলে। গাইবান্ধা বিআরটিএ অফিসের স্টোর রুমের দায়িত্বে ছিলেন হৃদয়। স্ত্রী, সন্তান ও মাকে নিয়ে শহরের শাপলা মিল এলাকার একটা ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।
বাসার মালিক আলী ইকবালসহ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাসাটি ভাড়া নিয়ে স্টোর রুম করে বিআরটিএ অফিস। এখান থেকে মোটরসাইকেলের ডিজিটাল নাম্বার প্লেটসহ বিভিন্ন মালামাল বিতরণ করে হৃদয় কুমার ও আলমগীর নামে দুইজন। প্রতিদিন এই স্টোর রুমে বিভিন্ন এলাকার অনেক মানুষেই আসা-যাওয়া করেন।
সোমবার দুপুরে রুমের দরজার হ্যাজবলের সঙ্গে গলায় বেল্ট পেঁচানো অবস্থায় দেখা যায় হৃদয়কে। পরে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়।
তাদের অভিযোগ, হৃদয়ের এমন মৃত্যুর ঘটনা রহস্যজনক। গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে হৃদয়ের আত্মহত্যা করা সম্ভব নয়। কেউ তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ বেল্ট দিয়ে দরজার হ্যাজবলে বেঁধে পালিয়ে গেছে।
ঘটনার আগেও হৃদয় অজ্ঞাত দুইজন যুবকের সঙ্গে মোটরসাইকেল নিয়ে বাসার সামনে অবস্থান করে। এর ঘণ্টাখানেক পরেই দরজার হ্যাজবলের সঙ্গে হৃদয়কে ঝুলতে দেখা যায়।
হৃদয়ের মা মিনতি রানীসহ স্বজনদের অভিযোগ, চাকরি করলেও হৃদয়ের সঙ্গে কারো বিরোধ নেই। পারিবারিকভাবেও কোনো সমস্যা নেই যে হৃদয় আত্মহত্যা করবে। এটি হত্যাকাণ্ড, পরিকল্পিতভাবে হৃদয়কে হত্যা করে গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে দরজায় বেঁধে রাখা হয়েছে। দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান স্বজনরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুর ইসলাম তালুকদার জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলা বলেন, সিআইডি টিম সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আসল বিষয়টি বের করার চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনবি