ঢাকা, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

অনিয়মের তথ্য চাওয়ায় তিন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করলেন রেল কর্মকর্তা

  লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৫

অনিয়মের তথ্য চাওয়ায় তিন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করলেন রেল কর্মকর্তা
অনিয়মের তথ্য চাওয়ায় তিন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করলেন রেল কর্মকর্তা। ছবি: প্রতিনিধি

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তিন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। বিনা টিকিটে ট্রেনে ওঠা যাত্রীদের কাছ থেকে টিকিট না দিয়ে টাকা নেওয়া হচ্ছে, এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে- এমন অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে গেলে রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামান বাবু সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।

রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। ওই তিন সাংবাদিক হলেন- নিয়াজ আহমেদ সিপন, মহসীন ইসলাম শাওন এবং জুয়াবের আহমেদ খান।

এর আগে সাংবাদিকদের হাতে আসা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চলন্ত একটি আন্তঃনগর ট্রেনে ইউনিফর্ম পরিহিত দুই অ্যাটেনডেন্ট (পরিচর্যক) বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে দরদাম করে টাকা নিচ্ছেন। গত ১৯ নভেম্বর ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনে এ ঘটনার ভিডিও একজন যাত্রী ধারণ করেন। জানা গেছে, ওই দুই পরিচর্যকের একজন সোহেল রানা ও অপরজন মো. রাহাত।

তিন সাংবাদিক অভিযোগ করেন, রোববার বিকেলে বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া প্রসঙ্গে পরিচর্যকদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামান বাবুর কক্ষে যান তারা। নিজেদের পরিচয় দিয়ে ওই ঘটনা প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে সাংবাদিকদের ওপর ক্ষেপে যান ওই কর্মকর্তা। তিনি নিজেকে দেশের প্রথম ‘শিশু সাংবাদিক’ দাবি করে নানা ধরনের দম্ভোক্তি দেখাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের ‘গেট আউট’ বলে নিজের কক্ষ থেকে বের করে দেন।

পরে খোঁজ নিলে রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রতিনিয়ত বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণকারী যাত্রীদের কাছে পরিচর্যকরা টাকা আদায় করেন। আর আদায়কৃত অর্থের একটি অংশ ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগনের প্রকৌশলী তাসরুজ্জামান বাবুর পকেটেও আসে। লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়েতে ‘উগ্র কর্মকর্তা’ হিসেবে পরিচিত ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠার পর গত ১ অক্টোবর তাকে ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগনের প্রকৌশলীর পদ থেকে বিভাগীয় পার্সোনাল অফিসার হিসেবে বদলি করা হয়। কিন্তু সেই পদে যোগদান না করে নানা কৌশল খাটিয়ে আগের পদেই থেকে যান। এ ছাড়া কিছু লোকজন দিয়ে বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করান তিনি। বিষয়টি ফাঁস হলে তাকে শোকজ করা হয় বলে জানা গেছে।

তাছাড়া আরও একটি সূত্র জানিয়েছে, তাকে বদলি করা হলেও খুঁটির জোরে তিনি লালমনিরহাট থেকে সরেননি। আর বিভিন্ন ঠিকাদারের সঙ্গে আঁতাত করে রেল বিভাগের কাজের টাকায় ভাগ বসান।

এদিকে লালমনিরহাটে রেলের ইঞ্জিন ও কোচ ঘোরানোর জন্য সম্প্রতি প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে ওই কর্মকর্তার (তাসরুজ্জামান বাবু) নেতৃত্বে নতুন করে ‘টার্ন টেবিল’ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেটি উদ্বোধনের আগেই ভার বহনে অক্ষম হয়ে পড়েছে।

এসব বিষয়ে জানতে রোববার রাতে তাসরুজ্জামান বাবুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) মো. আব্দুস সালাম বলেন, যাত্রীসেবা সংশ্লিষ্ট কোনো ধরনের অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করার বিষয়েও তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে ‘টার্ন টেবিল’ নির্মাণ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত