সাবেক মন্ত্রী কামরুলকে সালাম দেয়ায় নাজিরের কার্যালয় ভাংচুর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:১০ আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৫২
সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করায় ঢাকা মহানগর আদালতের নাজির শাহ মো. মামুনের কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া নাজির মামুনের বিষয়ে ব্যবস্থা চেয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মারজিয়া হীরা নামের একজন আইনজীবী।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বেলা ১টার পর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের দ্বিতীয় তলায় ওই কার্যালয়ে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি প্রসিকিউশন ও কোতোয়ালি থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি পুলিশ কর্মকর্তারা।
এর আগে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলামকে সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরা-১২ নম্বর সেক্টর থেকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ওয়াদুদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার তাকে আদালতে তোলা হয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরুলকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে কামরুলকে আট দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মহানগর হাকিম।
এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুলের সঙ্গে নাজির মামুনের কুশল বিনিময়ের ঘটনা নিয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেনকে অবহিত করেন ক্ষুব্ধ আইনজীবীরা। পরে বিচারক তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
অন্যদিকে, মারজিয়া হীরার আবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার সকালে কামরুল ইসলামের রিমান্ড শুনানির সময় তার ছেলে ডা. তানজির ইসলাম অদিত ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতের লাল সালুর ভেতরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন মহানগর আদালতের নাজির মামুন আসামি কামরুল ইসলামকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করেন। আসামির ছেলেকে আদালতের ভেতরে প্রবেশের বিষয়ে সহযোগিতা করেন। নাজির ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আসামি কামরুল ইসলামের নির্বাচন পরিচালনায় সহযোগিতা করেছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী নেজারত শাখার অফিস সহায়ক মিজানুর রহমান জানান, দুপুর ১টা ১০ মিনিটের দিকে কিছু আইনজীবী গিয়ে নাজিরের অফিসে ভাংচুর করে। নাজির তখন অফিসে ছিলেন না।
সাবেক মন্ত্রী কামরুলের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের বিষয়টি স্বীকার নাজির শাহ মো. মামুন বলেন, আমি অফিসে নেই, কাজে বাইরে আসছি। শুনেছি আমার অফিসে ভাংচুর করা হয়েছে। কে বা কারা কী কারণে মামলা করেছে কিছু জানি না। তবে মহানগর আদালতে কামরুল ইসলাম যখন আসতেন, তখন আমার অফিসে বসতেন। এইভাবে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। আজকে সকালে একটি কাজে সিএমএম আদালতে যাই। তখন হঠাৎ সাবেক মন্ত্রী কামরুলের সঙ্গে দেখা হয়। তখন তিনি আমাকে ডেকে বলেন, ‘এই নাজির কেমন আছ’? তখন আমি বলেছি, জি স্যার, আমি ভাল আছি, আপনি কেমন আছেন? পরে আমি কাজ শেষে চলে এসেছি। আর তার ছেলেকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। তার সাথে আমার পরিচয় নেই।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, আমাকে ফোনে জানানো হয়েছে নাজিরের কার্যালয়ে ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আমার ফোর্স সেখানে গেছে। তারা রিপোর্ট দিলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আমি একটি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য নেপালে রয়েছি। এ বিষয়ে আমি এখন পর্যন্ত কিছু জানি না।
বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ